চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা: প্রকল্পের কাজে আরও সমন্বয়ের তাগিদ তথ্যমন্ত্রীর

বিভিন্ন সংস্থার নেওয়া প্রকল্প বাস্তবায়নে সমন্বয় করতে আগেও বেশ কয়েকবার বসার পর কিছুটা সমন্বয় হয়েছে; কিন্তু আরও সমন্বয়ের প্রয়োজন,” বলেন তিনি।

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনসহ সব উন্নয়ন প্রকল্পের সুফল যেন জনগণ পায় সেজন্য সবাইকে সমন্বয় করে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা প্রকল্পসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে জেলা প্রশাসন আয়োজিত সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য যেসব প্রকল্প গ্রহণ করেছেন অন্য কেউ তা করেননি। চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনসহ সব উন্নয়ন প্রকল্পের সুফল যেন জনগণ পায় সেজন্য সবাইকে সমন্বয় করে কাজ করতে হবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা জানেন গত সপ্তাহের প্রচণ্ড বৃষ্টিতে চট্টগ্রাম শহরের প্রায় ৪০ শতাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল এবং মানুষের ব্যাপক দুর্ভোগ হয়েছে। সেটি নিয়ে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে বাদানুবাদও হয়েছে। এটি আসলে আমাদের সবার সম্মিলিত দায়িত্ব।

“চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য যখন এই প্রকল্প নেওয়া হয় এবং টাকাগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়, তখন ডলারের মূল্যমানে সেটির পরিমাণ ছিল ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। এখনও ১১ হাজার কোটি টাকা; ওয়ান বিলিয়ন ডলারের সমান। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য এত বড় অর্থ বরাদ্দ ঢাকা শহরের জন্যও দেওয়া হয়নি, যেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের জন্য দিয়েছেন।”

নগরবাসী এখনও সেটির সুফল পাওয়া শুরু করেনি মন্তব্য করে তিনি বলেন, “গতবারের বর্ষা এবং এবারের বর্ষায় যে পরিমাণ জলাবদ্ধতা হয়েছে নগরবাসীর মধ্যে কিছুটা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

“বিভিন্ন সংস্থা যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করছে, সেখানে সমন্বয় করার জন্য আমরা ইতিপূর্বেও বেশ কয়েকবার বসেছি। বসার পর কিছুটা সমন্বয় হয়েছে, কিন্তু আরও সমন্বয়ের প্রয়োজন।”

তথ্যমন্ত্রী বলেন, “জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), সিটি করপোরেশন, পানি উন্নয়ন বোর্ডেরও প্রকল্প আছে। এতবড় প্রকল্প, এত মূল্যমানের প্রকল্প, এটির জন্য ভবিষ্যতে তো আবার এই পরিমাণ টাকা বরাদ্দ দেওয়া সম্ভবপর হবে না।

“আপনারা জানেন শিগগির বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধন হতে যাচ্ছে, যেটি দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম নদীর তলদেশ দিয়ে সড়ক টানেল। একই সাথে চট্টগ্রামে মেট্রোরেল স্থাপন করার জন্য ফিজিবিলিটি স্টাডির কাজ শুরু হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর হচ্ছে, এটা একটি নতুন নগর নির্মাণ করা হচ্ছে। যেখানে দশ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হবে ভবিষ্যতে। চট্টগ্রামের মানুষ এত উন্নয়ন কখনো দেখেনি এবং এত উন্নয়ন আশাও করেনি।”

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলামের সভাপতিত্বে ও জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মো. ফখরুজ্জামানের সঞ্চালনায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে এ সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।

অন্যদে মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম ৮ আসনের সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পেয়ারুল ইসলাম, চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ. জ. ম নাছির উদ্দিন, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী, নগর পুলিশের কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, পুলিশ সুপার এ কে এম শফিউল্লাহ, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী শেখ তৌহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী হাবিবুর রহমানসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান ও প্রতিনিধিরা।