চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানার অক্সিজেন এলাকায় রোববার দুপুরে ওই ঘটনা ঘটে বলে ওসি মো. কামরুজ্জামান জানান।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- ওই বাসের চালক নুরুল আলম (৩০), সহকারী মো. রবিউল (২৩) ও অন্য বাসের সহকারী মো. শাহজাহান (২২)।
বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আনুমানিক ৩৩ বছর বয়সী এক গৃহবধূ আদালতে যাওয়ার জন্য বাস ধরতে রোববার দুপুরে অক্সিজেন এলাকায় গিয়েছিলেন। সেখানে চার পরিবহন শ্রমিক মিলে ওই নারীকে একটি বাসে তোলেন এবং সেখানে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়।”
ভুক্তভোগী ওই নারী বাস থেকে নেমে অক্সিজেন ট্রাফিক বক্সে গিয়ে বিষয়টি জানানোর পর দায়িত্বরত সার্জেন্ট ও ট্রাফিক সদস্যরা গিয়ে বাসস্ট্যান্ড থেকে শাহজাহানকে আটক করে।
পরে রাতে হাটহাজারী থেকে বাস চালক নুরুল আলম এবং ফটিকছড়ি থেকে রবিউলকে গ্রেপ্তার করা হয় জানিয়ে ওসি বলেন, “এ ঘটনায় আরেক বাস শ্রমিক পলাতক আছে।”
ওই নারীর করা মামলায় বলা হয়েছে, বাসে করে আদালতে যাওয়ার জন্য তিনি চাচার বাসা থেকে রিকশায় অক্সিজেন মোড়ে যান। নাজিরহাট রুটের একটি বাসের চালকসহ কয়েকজন এসে তার গন্তব্য জানতে চান।
তিনি কোর্ট বিল্ডিংয়ে যাওয়ার কথা বললে আসামিরা তাকে স্ট্যান্ডে দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে (চট্ট মেট্রো-জ-১১-০১৬৯) তোলেন। বাসে উঠার পর চালক গাড়ি অক্সিজেন রেল লাইনের একপাশে নিয়ে যায়। সেখানে দরজা আটকে হেলপার রবিউল ও সুপারভাইজার মিলে তাকে ধর্ষণ করে। পরে শাহজাহানের সহযোগিতায় চালক নুরুল আলমও ধর্ষণ করে বলে ওই নারীর অভিযোগ।
ওসি কামরুজ্জামান বলেন, “আটক করা বাসটি অক্সিজেন-নাজিরহাট রুটের। যাত্রার সিরিয়াল নেওয়ার জন্য সেটি স্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছিল। কিন্তু তারা ওই নারীকে দেখে সেখানে তুলে ধর্ষণ করে। পরে বাস এনে স্ট্যান্ডে রাখে।
“ওই নারী ধর্ষণের ঘটনাটি জানানোর সাথে সাথে স্ট্যান্ডে গিয়ে শাহজাহানকে আটক করে পুলিশ। তখন বাস চালক নুরুল আলম, সহকারী রবিউল ও সুপরভাইজার অন্য একটি বাসে করে অক্সিজেন থেকে চলে যায়।”
এ ঘটনায় ওই নারীর করা মামলায় তিনজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি।
এর আগে গত ১৯ মে রাতে নগরীর বাকলিয়া থানার রাহাত্তারপুল এলাকায় সড়ক থেকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় এক তরুণীকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। ওই তরুণী কীভাবে বাস থেকে পড়ে গেলেন, তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছিল না। কেউ বলছিলেন, তাকে বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। আবার কেউ বলছিলেন, তিনি বাস থেকে পড়ে গিয়ে আহত হয়েছেন।
পাঁচ দিন পর ২৬ মে ওই তরুণীর চেতনা ফেরার পর পুলিশ তার সঙ্গে কথা বলে জানতে পারে, ধর্ষণের হাত থেকে বাঁচতে তিনি বাস থেকে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে যান। ওই ঘটনায় বাসটির চালক ও সহকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।