আর্য্য সংগীত সমিতির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি চান চট্টগ্রামের মেয়র

মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত আর্য্য সংগীত সমিতির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি জানালেন চট্টগ্রামের মেয়র এম রেজাউল করিম চৌধুরী।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Sept 2021, 04:11 PM
Updated : 27 Sept 2021, 04:11 PM

সোমবার নগরীর পুরাতন টেলিগ্রাফ রোডে আর্য্য সংগীত সমিতির সুরেন্দ্র সংগীত বিদ্যাপীঠের নতুন ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে তিনি এ দাবি জানান।

মেয়র বলেন, “সংগীত এমন একটি শিল্প যা শুধুমাত্র বিনোদনই নয়, যা সুর-তাল-লয়-বাণীতে হৃদয়ানুভূতিতে মন-প্রাণকে পরিশুদ্ধ করে এবং মানুষ যা কিছু মঙ্গল ও কল্যাণময় তার সংস্পর্শে প্রাণিত হয়।

“মহান মুক্তিযুদ্ধে সংগীত আমাদের অন্তরে সশস্ত্র শক্তির জাগরণের আরেকটি হাতিয়ার হয়ে উঠেছিল। দেশের প্রাচীনতম এই সংগীতাশ্রম সেই অস্ত্র তৈরির প্রতিষ্ঠান। এখান থেকে প্রশিক্ষিত অনেক শিল্পী স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠসৈনিক রণাঙ্গণের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণে আগুনের পরশমণির ছোঁয়া দিয়েছিলেন। তাই আর্য্য সংগীত সমিতি মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একটি অনন্য হীরকখণ্ড।”

মেয়র রেজাউল বলেন, “এই সংগীতাঙ্গনের প্রতিষ্ঠাতা সুরেন্দ্র লাল এই উপমহাদেশে বরণীয় একজন সংগীত পুরোধা মনীষী। আকাশবাণী কলকাতার প্রথম সংগীত পরিচালক হিসেবে তিনি চট্টগ্রামকে গৌরবমণ্ডিত করেছেন।

“তিনি তৎকালীন সময়ের সংগীতাচার্য ওস্তাদ আলাউদ্দিন খানসহ অনেকের কাছের মানুষ ছিলেন। এরা সকলেই আর্য্যসংগীতে এসে এই মাটিকে ধন্য করেছেন। উনাকে বর্তমান প্রজন্ম চেনে না, জানে না। অথচ উনার নামে কলকাতায় সড়কের নামকরণ হলেও চট্টগ্রামে আর্য্য সংগীত আশ্রমটি ছাড়া আর কিছুই নেই।”

তিনি বলেন, “দুঃখের বিষয়, পৃষ্ঠপোষকতা, পরিচর্যা ও প্রণোদনার অভাবে প্রতিষ্ঠানটি কৌলিন্য হারিয়েছে। আমরা হারাতে বসেছি সংগীত সুধার অমৃত সুরধারার ঐতিহ্যকে। একজন মুক্তিযোদ্ধা ও সংগীতপ্রেমী হিসেবে এ জন্য আমি যন্ত্রণাবিদ্ধ।

“এই যন্ত্রণা প্রশমনে নগরীতে সংগীতাচার্য সুরেন্দ্র লালের নামে শুধু একটি সড়কের নামকরণ নয়, তার প্রতিষ্ঠিত আর্য্য সংগীতকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় স্বীকৃতিতে অভিষিক্ত করতে আমি দৃঢ় প্রত্যয়ী।”

আর্য্যসংগীত সমিতির অধ্যক্ষ ও মুক্তিযুদ্ধের শব্দ সৈনিক ওস্তাদ মিহির লালার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন ওস্তাদ নির্মলেন্দু চৌধুরী, কাউন্সিলর জহরলাল হাজারী, রুমকী সেনগুপ্ত, অ্যাড শামসুল ইসলাম, শিল্পী শাহরিয়ার খালেদ, শাহ সেলিম খালেদ, মো. আবু ফরহাদ সাবু, কল্যাণ কান্তি নাথ ও কাজল দাশগুপ্ত ।

১৯০৬ সালে স্থানীয় কয়েকজন জমিদারের উদ্যোগে এই সংগীত বিদ্যায়তনটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। প্রতিষ্ঠালগ্নে এর দায়িত্ব নেন দক্ষিণ কাট্টলীর জমিদার প্রাণহরি দাশের সন্তান সংগীতাচার্য সুরেন্দ্র লাল দাশ।