মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের দক্ষিণ গ্যালরির দ্বিতীয় তলায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে পৌনে সাত লাখ টাকা ও কয়েক প্যাকেট তাস জব্দ করেছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. ইকবাল (৩৬), আকবর হোসেন (২৭), তৌহিদুল ইসলাম (৩৬), মো. আব্বাস (৪২), মো. করিম (৩০), মো. সোহাগ (২৯), তৌহিদুল আলম (৪১), হেলাল উদ্দিন (৬৩), মো. ফরিদ (৩৫), মাহমুদুল হক (৩০), মো. সুমন (৩০), মনছুর (৩০), মো. কাইয়ুম (৪০), মুসলিম উদ্দিন (৩৮), মো. রানা (৪০), মো. বাবুল (৩৫), জসীম উদ্দিন (৩৮), রুবেল উদ্দিন (৩২) ও এমরান উদ্দিন (৫০)।
অ্যাসোসিয়েশনের যে কক্ষে পুলিশ অভিযান চালায় সেটি চট্টগ্রাম ফুটবল ট্রেনিং একাডেমির অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে গত এক বছর ধরে।
নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালী জোন) মুজাহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে ওই স্থানে জুয়া খেলা হচ্ছিল। কার্যালয়ের নিচে, প্রবেশমুখসহ বিভিন্ন স্থানে নিজস্ব লোকজন দিয়ে পাহারা বসিয়ে জুয়ার আসর পরিচালনা করা হয়।”
রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে জুয়ার আসর পরিচালনার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ২০১৯ সালে দেশব্যাপী ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানেও সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। তবে সেসময় কাউকে পাওয়া যায়নি। ওই সময় সেখানে জুয়ার আসর না বসানোর জন্য হুঁশিয়ারি দিয়েছিল পুলিশ।
চট্টগ্রাম এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের দক্ষিণ গ্যালারির যেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয় সেখানে ক্রিকেট অ্যাম্পায়র্স অ্যাসোসিয়েশন, মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা উদযাপন পরিষদেরও কার্যালয় রয়েছে। সেখানে দুইটি কক্ষ নিয়ে ফুটবল রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে।
রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশন সম্প্রতি চট্টগ্রামে ফুটবল ট্রেনিং একাডেমি প্রতিষ্ঠা করে ক্ষুদে ফুটবলারদের প্রশিক্ষণ দিয়ে আসছে। কার্যালয়ের একটি কক্ষকে ফুটবল ট্রেনিং একাডেমির অস্থায়ী কার্যালয় বলা হলেও মূলত সেখানে রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
কোতোয়ালী থানার ওসি নেজাম উদ্দিন বলেন, “রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনের পাশের যে কক্ষটিতে অভিযান চালানো হয়েছে সেটিকে ‘চট্টগ্রাম ফুটবল ট্রেনিং একাডেমির কার্যালয়’ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। সে কক্ষটিতে আলাদা সিঁড়ি তৈরি করে দোতালা করা হয়েছে। সেখানে এ জুয়ার আসর বসানো হয়েছে।”
এ ঘটনায় মামলা করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওসি নেজাম উদ্দিন।
তবে চট্টগ্রাম ফুটবল রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ফিফা রেফারি আব্দুল হান্নান মিরণ তাদের কার্যালয়ে জুয়ার আসর বসে না দাবি করে বলেন, “পাশের কক্ষটি আমরা ফুটবল ট্রেনিং একাডেমিকে দিয়েছি। সেখানে কী হয়েছে সেটা আমরা দেখব।”
তবে ফুটবল ট্রেনিং একাডেমিও রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশন দ্বারা পরিচালিত হয় জানানো হলে তিনি বলেন, “বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্নামেন্টে আমাদের রেফারিরা বিভিন্ন ভেন্যুতে খেলা পরিচালনা করতে গিয়েছিল। এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে আজকের খেলার সময় বৃষ্টি হয়েছিল সেজন্য অনেকেই এসে এখানে অবস্থান নিয়েছিল। তাদের হাতে তাস থাকার কথা নয়।”
এজন্য অফিস পিয়নের ওপর দায় চাপিয়ে মিরণ বলেন, “আমাদের পিয়ন তার কয়েক জন বন্ধুকে জায়গা দিয়েছিল। তারাই হয়ত তাস খেলেছে…আমরা তাৎক্ষণিকভাবে পিয়নকে বরখাস্ত করেছি।”
তবে টাকা জব্দ করার বিষয়ে তিনি বলেন, “তাস খেলায় তো এত টাকা থাকার কথা নয়, কিভাবে এত টাকা এসেছে সেটাও আমরা খতিয়ে দেখছি।”