বুধবার সকাল ৮টা থেকে সোয়া ৯টার মধ্যে অন্তত পাঁচটি কেন্দ্র ঘুরে এমন পরিস্থিতি দেখা যায়।
বিএনপির প্রার্থীরা তাদের এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ করলেও দায়িত্বরত প্রিজাইডিং অফিসাররা বলেছেন, বিএনপির প্রার্থীদের এজেন্টরা ‘আসেননি’।
২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ডের সরকারি ন্যাশনাল প্রাইমারি স্কুলে দেখা যায় কেন্দ্রের বাইরে বিপুল লোকজন থাকলেও ভেতরে কম।
স্কুলের দুটি কেন্দ্রের মধ্যে পুরুষ কেন্দ্রের সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার রোকসানা আক্তার জানান ভোট শুরুর পর প্রথম আধা ঘণ্টায় ১০টি ভোট পড়েছে।
এই কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী এবং কাউন্সিলর প্রার্থীদের এজেন্টদের দেখা গেলও বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী শাহাদাত হোসেন ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের এজেন্টদের দেখা যায়নি।
২২ নম্বর এনায়েত বাজার ওয়ার্ডের এনায়েত বাজার মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ কেন্দ্রেও একই অবস্থা দেখা যায়।
কলেজের গেইটের সামনে দাঁড়িয়ে বিএনপি সমর্থিত মিষ্টি কুমড়া প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী এমএ মালেক অভিযোগ করেন, কেন্দ্র থেকে তার পুরুষ ও মহিলা এজেন্টদের সবাইকে ‘বের করে দেওয়া হয়েছে’।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মহিলা কলেজের কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মনজুর আলম বলেন, “ভোট স্বাভাবিক হচ্ছে। ২০ জনের মতো ভোট দিয়েছে।”
একই ধরনের অভিযোগ করেছেন ১৪ নম্বর লালখানবাজার ওয়ার্ডে বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুল হালিম শাহ আলম।
আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের এমওয়াই উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি দেখা গেল তুলনামূলকভাবে কম।
এ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা সুরজিৎ বড়ুয়া বলেন, “শীতের সকাল হওয়ায় ভোটার উপস্থিতি একটু কম। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে।”
কদমমোবারক এমওয়াই উচ্চ বিদ্যালয় ও এমইএস উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রেও বিএনপির প্রার্থীর কোনো এজেন্টকে পাওয়া যায়নি।
১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়া ওয়ার্ডের টিচার্স ট্রেনিং কলেজ একাডেমিক ভবন-১ কেন্দ্রে ৩৪৭৯ ভোট আছে। এখানেই বিএনপির মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের ভোট দেওয়ার কথা।
তবে কেন্দ্রে তার বা বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থী আরিফুল ইসলাম ডিউকের কোনো এজেন্টকে দেখা যায়নি। আওয়ামী লীগের মেয়র, কাউন্সিলর ও বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীদের এজেন্টরা কেন্দ্রে ছিলেন।
প্রিজাইডিং অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, “এ কেন্দ্রে প্রথম আধা ঘণ্টায় ২৩ ভোট পড়েছে। বিএনপির প্রার্থীদের এজেন্ট সকাল থেকে আসেনি।”
বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন সোমবার থেকেই অভিযোগ করছিলেন, ‘নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের জন্য’ চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে নেতাকর্মীদের ‘জড়ো করেছে’ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
মঙ্গলবার তিনি সাংবাদিকদের কাছে ‘ভোট ডাকাতির’ শঙ্কাও প্রকাশ করেছিলেন।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজাউল করিম চৌধুরী ভোটের আগের দিন বলেছিলেন, বিএনপি ‘গণ্ডগোল পাকিয়ে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করতে পারে’ বলে তার শঙ্কা রয়েছে।
নির্বাচনী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নগরীর ৭৩৫টি কেন্দ্রে বুধবার সকাল ৮টায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে, একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে।
১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন ভোটার এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র, ৩৯ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের ১৪ জন নারী কাউন্সিলরকে নির্বাচিত করবেন।
নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী এবং বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী শাহাদাত হোসেনের মধ্যে।