প্রদীপের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের দুই ভাইকে হত্যার মামলা

চট্টগ্রামের চন্দনাইশ থেকে দুই ভাইকে ধরে নিয়ে আট ‘লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে না পেয়ে’ টেকনাফে কথিত বন্দুকযুদ্ধে হত্যার অভিযোগে বরখাস্ত ওসি প্রদীপসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Sept 2020, 12:53 PM
Updated : 2 Sept 2020, 12:54 PM

বুধবার চট্টগ্রামের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন নাহার রুমীর আদালতে মামলাটি হয়।

নিহত আমানুল হক ও আজাদুল হক আজাদের ছোট বোন রিনাত সুলতানা শাহিন বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।

আদালত অভিযোগটি গ্রহণ করে আনোয়ারা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে তদন্ত শেষে ২০ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

নিহত দুই ভাই চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চননগর ইউনিয়নের ফকিরপাড়া গ্রামের আমিনুল হকের ছেলে। তাদের মধ্যে ছোট ভাই আজাদ প্রবাসী। তিনি গত রোজায় দেশে ফেরেন। বড় ভাই আমানুল হকের মোবাইল মেরামতের দোকান থাকলেও পরে তিনি পেয়ারা চাষ করতেন।

অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যায় গ্রেপ্তার টেকনাফ থানার বরখাস্ত হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ছাড়াও ওই থানার এসআই ইফতেখারুল ইসলাম, কনস্টেবল মাজহারুল ইসলাম, দ্বীন ইসলাম ও আমজাদ হোসেনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।

সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যা মামলায় টানা ১৫ দিন রিমান্ডে নিয়ে র‌্যাবের জিজ্ঞাসাবাদের পর মঙ্গলবার প্রদীপ কুমার দাশকে কারাগারে পাঠিয়েছে কক্সবাজারের একটি আদালত।

মামলায় চন্দনাইশ থানার তৎকালীন ওসিসহ (নাম উল্লেখ না করে) পাঁচ-ছয়জন পুলিশ সদস্যকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে আসামি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের সহায়তায় মামলাটি দায়ের করা হয়।

বাদীর আইনজীবী জিয়া হাবিব আহসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজাদ বিদেশ থেকে এসেছে জানতে পেরে আট লাখ টাকা চাঁদার জন্য তাদের বাড়ি থেকে ধরে নেওয়া হয়। চন্দনাইশ থানার পুলিশের সহায়তায় টেকনাফ থানার পুলিশ দুই ভাইকে ধরে নেয়।

“পরে মাদক ব্যবসায়ী বলে তাদের ক্রসফায়ারে হত্যা করে। তখন পুলিশ বলেছিল, তাদের টেকনাফ থেকে গ্রেপ্তার করেছে। অথচ তাদের বাড়ি থেকে ধরে নেওয়ার ভিডিও ফুটেজ আছে।”

তিনি বলেন, “আদালত হত্যা মামলাটি গ্রহণ করে চট্টগ্রামের আনোয়ারা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে অভিযোগ তদন্ত করে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।”

মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৩ জুলাই সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমানুলকে এবং ১৫ জুলাই বেলা ২টার দিকে আজাদকে চন্দনাইশ থানা পুলিশের সহযোগিতায় টেকনাফ থানা পুলিশ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।

“পুলিশ নিহতদের স্বজনদের জানায়, তারা মাদক ব্যবসা করে। তাদের ছাড়াতে হলে আট লাখ টাকা দিতে হবে। টাকা দিতে না পারায় তাদের মাদক ব্যবসায়ী উল্লেখ করে টেকনাফ থানা পুলিশ ক্রসফায়ারে হত্যা করে।”

১৬ জুলাই কক্সবাজার সরকারি হাসপাতালের মর্গে গিয়ে স্বজনরা দুই ভাইয়ের লাশ শনাক্ত করেন।