কোরবানির হাটে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে ব্যবস্থা: সচিব

কোরবানির পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দীন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 July 2020, 02:55 PM
Updated : 25 July 2020, 02:55 PM

শনিবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে কোভিড-১৯ সংক্রমণজনিত প্রাদুর্ভাব মোকাবেলা বিষয়ক ষষ্ঠ সমন্বয় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পশুর হাট পরিচালনা করতে হবে।

“গবাদি পশুর বাজারে প্রবেশ ও বের হওয়ার আলাদা আলাদা পথ রাখতে হবে। মাস্ক পরিধান ছাড়া বাজারে প্রবেশ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। সকলের মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক। এটা অমান্য করলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

“বাজার ইজারাদার কর্তৃক পর্যাপ্ত মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার মজুদ রাখতে হবে। জাল টাকা শনাক্তকরণের মেশিন ও ব্যাংক বুথ স্থাপনসহ মলম পার্টি, থুথু পার্টি, অজ্ঞান পার্টি এবং ছিনতাইকারী রোধে আইন-শৃংখলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে।

শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের এ বছর কোরবানির হাটে না যেতেও নিরূৎসাহিত করেন তিনি।

এবার নগরীতে দুটি স্থায়ী হাটের পাশাপাশি চারটি অস্থায়ী হাট বসেছে।

কোরবানির চামড়া সিন্ডিকেট রোধে প্রশাসনকে তৎপর থাকতে এবং বর্জ্য অপসারণে সিটি কর্পোরেশনসহ সংশ্লিষ্টদের আরো আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান মোস্তাফা কামাল উদ্দীন।

বিদেশগামীদের কোভিড-১৯ এর নমুনা পরীক্ষার বিষয়ে তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম বিভাগের লাখ লাখ মানুষ বিদেশে থাকে। যারা ইতোপূর্বে বিদেশ থেকে দেশে এসেছে তাদের বিদেশ যেতে হলে কোভিড-১৯ টেস্ট নেগেটিভ বাধ্যতামূলক।

“ঈদের পরেও অনেক লোক বিদেশ যাবে। এ জন্য তারা করোনা টেস্টের জন্য নির্দিষ্ট সেন্টারে ভিড় করছে। তাদেরকে কোনো ধরনের হয়রানি করা যাবেনা, নির্দিষ্ট সময়ে রিপোর্ট দিতে হবে। কোনো বিদেশ যাত্রী যাতে বিমান বন্দর থেকে ফিরে না আসে সে বিষয়টি আরও গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে।”

অনলাইনে রিপোর্ট দিতে গিয়ে সার্ভারে ত্রুটি দেখা গেলে প্রয়োজনে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সাথে যোগাযোগের নির্দেশনা দেন তিনি।

তিনি বলেন, “করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর প্রাক্কালে রোগীদের জন্য চট্টগ্রামের হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ বেড, অক্সিজেন, ভেন্টিলেটর, হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা ও অন্যান্য সরঞ্জামের সংকট ছিল। বর্তমানে কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসার জন্য কোনো কিছুর অভাব নেই।

“কোভিড-১৯ সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলোতে এখনও অনেক সিট খালি রয়েছে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো চিকিৎসা সরঞ্জামাদি নিয়ে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় এগিয়ে এসেছে বলেই আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার কমে এসেছে।”

তিনি বলেন, “একসময় করোনার নমুনা টেস্টের রিপোর্ট পেতে বেশ কিছুদিন সময় লাগত, আর এখন দ্রুততার সাথে মিলছে রিপোর্ট। যাদের ক্যান্সার, লিভার সিরোসিস, হার্ট ডিজিজ, ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্ট ও কিডনিজনিত রোগ আছে তারা আরও সচেতন হলে আরও উপকৃত হবেন।”

কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিতদেরকে আরও আন্তরিক হতে এবং সব ধরনের রোগীদের সুচিকিৎসার জন্য চিকিৎসকদের প্রাইভেট চেম্বার খোলার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার এবিএম আজাদ এর সঞ্চালনায় সমন্বয় সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, নগর পুলিশের কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী মো. সামসুদ্দোহা, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মো. মিজানুর রহমান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক হাসান শাহরিয়ার কবীর, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি, জেলা পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক, জেলা সিভিল সার্জন শেখ ফজলে রাব্বি প্রমুখ।