পহেলা বৈশাখ থেকে শুরু করে প্রতিদিন নগরীর বিভিন্ন এলাকায় এরকম তিনশ মানুষের কাছে রান্না করা খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন তারা।
ইফেক্টিভ ক্রিয়েশন অন হিউম্যান অপিনিয়ন (ইকো) নামের এই সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের এই উদ্যোগে যোগ দিয়েছেন আরও মুক্তিযোদ্ধা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সুহৃদরা।
ইকোর সাধারণ সম্পাদক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকারি ছুটির শুরুর দিকে একদিন বাজার করে বাসায় ফিরছিলাম।
এই পরিস্থিতিতে পথের বাসিন্দা মানুষদের জন্য কিছু করার তাগিদ থেকে খাবার বিতরণের সিদ্ধান্ত নেন ইকোর সদস্যরা। নিজেরাই টাকা পয়সা দিয়ে শুরু করেন প্রাথমিক কাজ।
যেহেতু পথের বাসিন্দা ও শিশুদের শুকনো খাবার দিলে তাদের রান্না করতে সমস্যা হবে, তাই রান্না করা খাবার দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। সংগঠনটির সদস্য সাহেদ মুরাদ সাকুর ডিসি রোডের বাড়িতে হয় রান্নার ব্যবস্থা।
এরপর নগরীর লালখান বাজার, জুবিলি রোড, নিউমার্কেট, মেরিনার্স সড়ক, কোতোয়ালী মোড়, লালদিঘীর পাড়, আন্দরকিল্লা, সিআরবি, মোমিন রোড, গণি বেকারি, কলেজ রোড, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় পথের বাসিন্দা মানুষদের খাবর পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
হাসপাতাল এলাকায় ভিক্ষা করেন নুরুন্নেছা (৬০) ও পঙ্গু কবির হোসেন। কিন্তু রাস্তায় লোকজনের আনাগোনা কম তাই তাদের আয় নেই।
নন্দনকানন এলাকায় তিন পথ শিশু রোববার বৃষ্টির মধ্যে ফুটপাতে বসে ছিল। খাবার হাতে পেয়ে তারা খুব খশি।
ওমর ফারুক রাসেল বলেন, “বাচ্চারা খাবার পেলে যে হাসিটা দেয়, সেটাই আমাদের খুশি। এরা তো আমাদের সমাজেরই মানুষ, আমাদের প্রতিবেশী।
“ফুটপাতের বাসিন্দা, পঙ্গু আর মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষগুলোর তাই খাবার যোগাড়ের কোনো উপায় নেই। আমরা প্রতিদিন ৩০০ জনের খাবার দিচ্ছি। কিন্তু এরকম মানুষ অনেক। কষ্ট লাগে যখন কোথাও উপস্থিত সবাইকে দিতে পারি না।”
পাশাপাশি রিকশাচালক এবং ভ্যানচালকদেরও খাবার দিতে প্রতিদিন মোট পাঁচশ জনের খাবার রান্না করার লক্ষ্যের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহযোগিতা পেলে আশা করি এটা করতে পারব।