পরিবহন নেতারা বলছেন, সাংগঠনিক কোনো সিদ্ধান্ত না থাকলেও বাস মালিকরা নিজেরাই ভীত হয়ে গাড়ি চালাচ্ছেন না।
কোনা পূর্বঘোষণা ছাড়া গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সোমবার সকালে ঘর থেকে বের হয়েই পিত্তিতে পড়েন নগরবাসী। বিশেষ করে অফিসগামী মানুষ এবং শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েন সবচেয়ে বেশি।
সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন সড়কে বাস, মিনিবাস, হিউম্যান হলার চলছে না। তবে অল্পকিছু সিএনজিচালিত অটোরিকশা, টেম্পো চলতে দেখা গেছে।
নিউ মার্কেট, স্টেশন রোড, আন্দরকিল্লা, এনায়েত বাজার, কাজীর দেউরি, টাইগার পাস, আগ্রাবাদ ও জিইসি মোড়ে যাত্রীরা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা গেছে বাসের জন্য।
সকালে আন্দরকিল্লা মোড়ে ইপিজেডমুখী যাত্রী সাফায়াত ইসলাম বলেন, “সকালে অফিসে যাওয়ার জন্য বেরিয়ে কোনো বাস পাচ্ছি না। অনেকক্ষণ ধরে অপেক্ষায় আছি। আগে থেকে ধর্মঘটের কোনোন সংবাদও পাইনি।”
ধর্মঘট প্রসঙ্গে মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব বেলায়েত হোসেন বেলাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ধর্মঘটের বিষয়ে আমাদের কোনো সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নেই। তবে গতকাল রোববার বিআরটিএ ম্যাজিস্ট্রেট একটি বাস ইউটার্ন করায় তার মালিক, চালাক ও হেলপারকে জরিমানা করেছে।”
বিষয়টি সমাধানের জন্য তারা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সব ধরনের পরিবহন মালিকরাই ভয়ে গাড়ি নামাচ্ছেন না।
চট্টগ্রাম মহানগরীতে গণপরিবহন মালিকদের সাতটি সংগঠন রয়েছে। এগুলো হল- সিটি বাস-মিনিবাস ও হিউম্যান হলার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, মেট্রোপলিটন পরিবহন মালিক গ্রুপ, সিটি বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, চট্টলা পরিবহন, যাত্রীসেবা পরিবহন, মহানগর পরিবহন, কালুরঘাট মিনিবাস মালিক সমিতি ও লুসাই পরিবহন।
তবে সিটি বাস-মিনিবাস ও হিউম্যান হলার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক মিয়া বলেছেন, অঘোষিত এই ধর্মঘটের সাথে তারা নেই।
“অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করার জন্য একটি পক্ষ এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। পরিবহন মালিকদের একটি পক্ষ কোনো ঘোষণা ছাড়াই বাস চালাচ্ছেন না।”
বিআরটিএ ম্যাজিস্ট্রেট মনজুরুল হক রোববার দুপুরে নগরীর বহদ্দারহাটে একটি শহর এলাকার বাসকে ফিটনেস না থাকায় এবং ১০ নম্বর রুটের বাসটি যথাযথ গন্তব্যে না গিয়ে চান্দগাঁও থানার সামনে ঘুরিয়ে দেওয়ায় বাসের মালিক মনির হোসেনকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ বন্দর জোনের উপ-কমিশনার তারেক আহমেদ বলেন, “রোববার বহদ্দারহাট মোড়ে বিআরটিএর অভিযানে একটি বাসের মালিক ও চালক-সহকারীদের দণ্ড দেওয়ায় তারা বাস চালাচ্ছেন না বলে শুনেছি।
“আমরা তাদের অনুরোধ করেছিলাম, ধর্মঘটে না গিয়ে দুই পক্ষের (বিআরটিএ-বাস মালিক) মধ্যে সমঝোতা করে নেওয়ার জন্য। কিন্তু তারপরও মালিকরা বাস চালানো থেকে বিরত রয়েছেন।”
ট্রাফিক বিভাগের এই কর্মকর্তা বলেন, “এটি বিআরটিএ ও বাস মালিকদের বিষয়। আমাদের কিছু করার নেই।”