মঙ্গলবার সকালে দেশের অন্যতম বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নিবার্হী ম্যাজিস্ট্রেট কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) তৌহিদুল ইসলাম।
পেয়াঁজের তিন আড়ত মেসার্স হাজী অছিউদ্দিন সওদাগর, মেসার্স আবদুল আউয়াল ও মেসার্স শাহজালাল ট্রেডার্সে মিয়ানমারসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আসা পেঁয়াজ ক্রয়মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি দামে বিক্রির প্রমাণ পাওয়ার দাবি করেছে আদালত।
মেসার্স আবদুল আউয়ালের হিসাব থেকে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি গত ১১ সেপ্টেম্বর প্রতিকেজি ভারতীয় পেঁয়াজ ৪২ টাকা, ১৫ সেপ্টেম্বর ৫৬ টাকা, ২৪ সেপ্টেম্বর ৬০ টাকা, এর দুইদিন পর ৫৮ টাকা, গত রোববার ৫২ টাকা এবং সোমবার ৯০ টাকা দরে বিক্রি করেছে।
এছাড়া বাগদাদী করপোরেশন ও এসএন ট্রেডার্সে গিয়ে তাদের সতর্ক করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযানের শেষ পর্যায়ে গিয়ে বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করায় খাজা ট্রেডার্স নামের আড়তকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে আদালত।
বৃষ্টি ও বন্যায় এবার পেঁয়াজের ফলন মার খাওয়ায় অভ্যন্তরিণ সংকট মোকাবেলায় গত রোববার ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দেয়। এতে ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ১০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।
অভিযান প্রসঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “মিয়ানমার থেকে যে দরে পেঁয়াজ কেনা তার চেয়ে বেশি দরে আড়তদারদের বিক্রির প্রমাণ আমরা পেয়েছি। অধিকাংশ আড়তেই একই অবস্থা।
“প্রথমদিনের অভিযানে সতর্ক করে আড়তদার সমিতির কাছ থেকে আমরা অঙ্গীকার নিয়েছি তারা ক্রয়মূল্যের সাথে পরিবহন ও অন্যান্য খরচ মিলিয়ে স্বাভাবিক দামে পেঁয়াজ বিক্রি করবে।”
খাতুনগঞ্জে আড়াইশ পেঁয়াজের আড়ত রয়েছে। তারা বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আমদানিকারকদের কাছ থেকে পেঁয়াজ কমিশন ভিত্তিতে কিনে এনে খাতুনগঞ্জে বিক্রি করে।
তিনি বলেন, “পেঁয়াজের আড়তদার আছেন ২০০-২৫০ জন। মূল আমদানিকারক দশজন। এরা হিলি-বেনাপোল ও সোনা মসজিদ বন্দর এলাকার। আমরা আমদানিকারকদের হাতে জিম্মি।
“বাজারে পেঁয়াজের প্রচুর সরবরাহ রয়েছে। যখন আমদানিকারক বলে ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি করতে হবে, নইলে ভবিষ্যতে মাল দেবে না, তখন আমরা নিরূপায়। চট্টগ্রাম বন্দর ও অন্যান্য জায়গায় যত পেঁয়াজ এসেছে, সেসব বৃহস্পতিবারের মধ্যে বাজারে আসলে দাম ৫০-৬০ টাকায় নেমে আসবে।”
অভিযান চালু রাখার পক্ষে মত দিয়ে তিনি পেঁয়াজের দাম ঠিক করতে আমদানিকারকদের সঙ্গে বসবেন বলে জানান।