সোমবার সকালে পশু কোরবানির পর দুপুর থেকে চামড়া সংগ্রহে নেমে পড়েছে মৌসুমী ব্যবসায়ী ও মধ্যসত্ত্বভোগীরা। তাদের কাছ থেকে কিনে নেবে কাঁচা চামড়ার আড়তদাররা।
চট্টগ্রাম কাঁচা চামড়া আড়তদার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান কমিটির উপদেষ্টা মো. মুসলিম উদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিভিন্ন স্থান থেকে কাঁচা চামড়া সংগ্রহ করা শুরু করেছে আড়তদাররা।
“আশা করছি, আজ (সোমবার) রাতের মধ্যেই ৭০ শতাংশ চামড়া সংগ্রহ করে নিতে পারব। বাকিগুলো দুয়েক দিনের মধ্যে সংগ্রহ হয়ে যাবে।”
শহরে কোরবানি দেওয়া পশুর চামড়া সোমবারের মধ্যে সংগ্রহ করা গেলেও বিভিন্ন উপজেলা থেকে চামড়া আসতে দুয়েকদিন লেগে যেতে পারে বলে মনে করছেন কাঁচা চামড়ার এই ব্যবসায়ী।
তিনি বলেন, শহরের চামড়াগুলো সংগ্রহ করে আড়তদাররা লবণ দিয়ে রাখলেও গ্রামগঞ্জের যেসব চামড়া সোমবার রাতের মধ্যে শহরে এসে পৌঁছাবে না সেসব চামড়াগুলো গ্রামেই ব্যবসায়ীরা লবন দিয়ে সংরক্ষণ করে শহরে নিয়ে আসবে।
এদিকে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কেনা পশুর চামড়া আড়তদারদের কাছে বিক্রি করে লোকসান গুণতে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন মৌসুমী ব্যবসায়ী।
তবে ট্যানারি মালিকরা এসব চামড়া কম দাম দিয়ে কিনতে চান বলে অভিযোগ তার।
এ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে আড়তদার মুসলিম বলেন, মৌসুমী ব্যবসায়ী চামড়ার বাজার সম্পর্কে ধারণা না রেখে বেশি দামে চামড়া কিনে আড়তদারদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করতে চায়।
“গত কয়েক বছর ধরে চামড়ার দাম সরকার থেকে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। সেই দামেই ট্যানারি মালিকরা আমাদের কাছ থেকে চামড়া সংগ্রহ করেন।”
এবছর ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর কাঁচা চামড়া ৪৫ থেকে ৫০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দাম নির্ধারণ করেছে সরকার।
চট্টগ্রামের কাঁচা চামড়া আড়ৎদাররা ঢাকার ট্যানারি মালিকদের ওপর নির্ভরশীল। তাদের ভাষ্য, এক দশক আগে চট্টগ্রামে ২২টির মতো ট্যানারি থাকলেও বর্তমানে আছে দুটি।
এর মধ্যে ইটিপি না থাকায় বছর খানেক আগে ‘মদিনা ট্যানারি’ বন্ধ করে দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এখন শুধু ‘রীফ লেদার’ নামে একটি ট্যানারি চট্টগ্রামে চালু আছে।
রীফ লেদার পাঁচ থেকে সাত শতাংশ চামড়া কিনলেও বাকিসব চামড়া বিক্রি করতে হয় ঢাকার ট্যানারি মালিকদের কাছে।
“প্রতি বছর চট্টগ্রামের কাঁচা চামড়ার আড়তদাররা অন্তত ৩০ কোটি টাকার কাঁচা চামড়া বাকিতে বিক্রি করে ঢাকার ট্যানারিগুলোতে; যেগুলোর টাকা সঠিক সময়ে পায় না তারা”, বলেন মো. মুসলিম উদ্দিন।
গত বছর ঢাকার ট্যনারি মালিকদের কাছে প্রায় ৩০ কোটি টাকার চামড়া বিক্রি করে মাত্র তিন কোটি টাকার বকেয়া সংগ্রহ করতে পেরেছেন বলে দাবি করেন এই আড়তদার।