কম্পিউটার কোর্সের আড়ালে ‘এমএলএম ব্যবসা’, চট্টগ্রামে গ্রেপ্তার ৭

কম্পিউটার ও ইলিংশ স্পোকেন কোর্সের আড়ালে অবৈধভাবে এমএলএম ব্যবসা চালানোর অভিযোগে চট্টগ্রামে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 June 2019, 04:03 PM
Updated : 19 June 2019, 04:03 PM

নগরীর কোতোয়ালি থানার কাজীর দেউড়ি ভিআইপি টাওয়ার থেকে মঙ্গলবার রাতে তাদের আটকের পর বুধবার ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

গ্রেপ্তার সাতজন হলেন- অপু দাশ (২৯), রাজীব দাশ (৩৯), রজীব তালুকদার (৪০), উজ্জ্বল সেন (৪১), রবিন মিত্র (৩৩) ও সুমন বিশ্বাস (৩৮)।

কোতোয়ালি থানার ওসি মো. মহসিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ডেসটিনি ২০০০ লিমিটিডে, ইউনিপে-টু, স্পিক এশিয়াসহ বিভিন্ন এমএলএম প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সরকার নিষিদ্ধ করলেও গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তিরা ‘এনেক্স ওয়ার্ল্ডওয়াইড’ নামে একটি এমএলএম কোম্পানি খুলে অবৈধবাবে ব্যবসা করে আসছিল।

“প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে তারা মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিল বলে আমাদের কাছে অভিযোগ আছে।”

ওসি মহসিন বলেন, মঙ্গলবার রাতে ভিআইপি টাওয়ার থেকে আটকের পর ওই সাতজনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার আদালতে পাঠানো হয়েছিল। বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। 

“তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে মামলা করা হচ্ছে এবং এ মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানোর প্রক্রিয়া চলছে।”

এদিকে তাদের গ্রেপ্তারের খবর শুনে বুধবার অনেকে থানায় গিয়ে ওই এমএলএম কোম্পানির প্রতারণার তথ্য দিয়েছেন বলে কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামরুজ্জামান জানান।

তিনি বলেন, “প্রাথমিক তদন্তে আমরা জানতে পেরেছি, গ্রেপ্তার ওই সাতজন ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডে কাজ করতেন। প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম সরকার বন্ধ করে দেওয়ায় নতুন করে তারা ‘এনেক্স ওয়ার্ল্ডওয়াইড’ খুলেছেন।”

ভিআইপি টাওয়ারের তৃতীয় তলায় অফিস খুলে গত কয়েক মাস ধরে তারা ওই ‘অবৈধ’ কোম্পানির কার্যক্রম চালিয়ে আসছিলেন বলেও জানান তিনি।

ভুক্তভোগীদের উদ্ধৃত করে পুলিশ কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, প্রতিষ্ঠানটি মূলত এসএসসি, এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ‘টার্গেট’ করে আসছিল।

“ওইসব শিক্ষার্থীদের তারা কম্পিউটার ও ইলিংশ স্পোকেন কোর্সে ভর্তি করাত এবং সেজন্য প্রত্যোকের কাছ থেকে পাঁচ হাজার ৮০০ টাকা করে নিত। পরে অতিরিক্ত লাভের প্রলোভন দেখিয়ে তাদের এমএলএম ব্যবসায় যুক্ত করে নিত।”

সরকারি সিটি কলেজ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়া এক শিক্ষার্থী থানায় অভিযোগ জানাতে এসে বলেন, কম্পিউটার বা ইলিংশ স্পোকেন কোর্সে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্লাসের পর এমএলএম ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করা হত।

“টাকা রোজগারের প্রলোভন দেখিয়ে সদস্য সংগ্রহ এবং তাদের কাছ থেকে পণ্য কিনতে প্রলুব্ধ করা হত। ৫০ জনকে সদস্য করতে পারলে ‘আরএমও’ (রিয়েল মার্কেটিং অফিসার) উপাধি দিয়ে তাকে একটি কমিশনও দেওয়া হত।”

এমএলএম ব্যবসায় যাবেন না জানিয়ে টাকা ফেরত চাওয়ায় বিভিন্নভাবে হুমকি পেতে হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষার্থী।