চলন্ত বাসে আক্রান্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, চালক আটক

চট্টগ্রামের স্টেশন রোডে চলন্ত বাসে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী আক্রান্ত হওয়ার ঘটনায় চালককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 April 2019, 07:22 PM
Updated : 12 April 2019, 07:22 PM

বৃহস্পতিবার বিকালের ওই ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় নগরীর কোতোয়ালি থানার একটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী।

পরে নগরীর অক্সিজেন এলাকা থেকে ৩ নম্বর রুটের ওই বাসের চালক বিপ্লব দেবনাথকে (২৫) আটক করা হয় বলে জানান কোতোয়ালি থানার ওসি মোহাম্মদ মহসিন। 

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “ভিকটিম থানায় এসে চালককে শনাক্ত করেছেন। বাসটি আমরা জব্দ করেছি।”

চালকের সহকারীকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে জানিয়ে ওসি বলেন, “আমাদের একাধিক দল কাজ করছে।”

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ওই শিক্ষার্থী বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে ৩ নম্বর রুটের একটি বাসে করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শহরের বাসায় ফিরছিলেন।

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংগঠন ইয়াং ইকোনমিস্ট সোসাইটির (ইয়েস) সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহ আল মাসুম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিকেল ৫টার দিকে বাসটি রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় পৌঁছালে ওই ঘটনা ঘটে।

“ঘটনার পর মানসিকভাবে ও একটু ভেঙে পড়েছে। আমরা নিয়মিতভাবে ওর খোঁজ খবর রাখছি।”

চলন্ত বাসে আক্রান্ত হওয়ার বিবরণ তুলে ধরে বৃহস্পতিবার রাতে ফেইসবুকে একটি পোস্ট দেন ওই ছাত্রী।

সেখানে তিনি লিখেছেন, জিইসি মোড়ে আসার পর তার সঙ্গী এক সহপাঠী বাস থেকে নেমে যান। এরপর বাসটি রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় পৌঁছালে অন্য যাত্রীরাও নেমে যায়।

কাছেই নিউ মার্কেট মোড়ে শেষ স্টপেজে বাসটির দাঁড়ানোর কথা ছিল। সেখানেই নামার কথা ছিল ওই ছাত্রীর। কিন্তু চালক হঠাৎ দ্রুতগতিতে বাস ঘুরিয়ে স্টেশন রোডের দিকে মোড় নেয়।

ওই ছাত্রী লিখেছেন, তিনি বাস থামাতে বললে চালকের সহকারী এগিয়ে আসে এবং তার ওড়না টেনে গলায় পেঁচিয়ে ধরে। তাতে তার নিঃশ্বাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়।

“চিৎকার করার মত পরিস্থিতিও আমার ছিল না। ওই মুহূর্তে আমার কেমন লাগছিল, আমি তা বলে বোঝাতে পারব না।”

তিনি লিখেছেন, হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে তিনি সজোরে আঘাত করলে তা চালকের সহকারীর চোখে লাগে। তাতে সে ওড়না ছেড়ে দেয়। জীবন বাঁচাতে তখন চলন্ত বাস থেকে লাফিয়ে পড়েন তিনি।

“এ সময় শুনতে পাই চালক চিৎকার করে বলছে- মেয়েটারে ধর শালা।”

বাস থেকে লাফিয়ে পড়তে দেখে এক রিকশাচালক ওই ছাত্রীকে তুলে নেন এবং পরে তার বাসায় পৌঁছে দেন।

ইংরেজিতে লেখা ওই পোস্টের শেষে ওই ছাত্রী বাংলায় লিখেছেন- “এই দেশে আর থাকব না ভাই।”

এদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী মহানগর পুলিশের কমিশনার মাহবুবর রহমানকে ফোন করে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে উপাচার্য বলেন, “পুলিশ কমিশনার ও অতিরিক্ত কমিশনার আশ্বাস দিয়েছেন, তারা গুরুত্বের সাথে বিষয়টি দেখছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে পরিবহন মালিকদের ডাকা হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।”