সমন্বয়হীনতায় চট্টগ্রামে পরিকল্পিত উন্নয়ন হচ্ছে না: নাছির

সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়হীনতার কারণে চট্টগ্রামে পরিকল্পিত উন্নয়ন করা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 June 2018, 02:22 PM
Updated : 24 June 2018, 02:22 PM

এজন্য সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রকল্প পরিকল্পনা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সিটি করপোরেশনে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।   

রোববার সিটি করপোরেশনের কনফারেন্স হলে নগর উন্নয়ন কমিটির ১২তম সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

নাছির বলেন, “কোন প্রতিষ্ঠানের কি দায়িত্ব তা নগরবাসী জানেন না। তাই সকলকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। তাতেই চট্টগ্রামের সমস্যার সমাধান হবে।”

সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সমন্বয় করা গেলে নগরবাসীর ভোগান্তি ও বিভ্রান্তির অবসান ঘটবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এজন্য সিডিএ, ওয়াসা, পিডিবি, টিঅ্যান্ডটিসহ অন্যান্য সেবা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমন্বয় থাকা দরকার।”

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা পরিপত্রে সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধনে বাধ্যবাধকতা থাকার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন মেয়র।

সভায় বিভিন্ন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ছাড়া অন্যান্য প্রায় সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম মহানগরীতে বিভিন্ন সংস্থার চলমান উন্নয়ন কাজের জন্য জনসাধারণের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। এসব কাজের জন্য এবার বর্ষা মৌসুমের আগেই বৃষ্টিতে নগরীর বিভিন্ন অঞ্চলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

চট্টগ্রাম মহানগরীতে খাল, নালা পুনর্খননসহ জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএর প্রকল্পে বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। বর্তমানে সিডিএর প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সেনাবাহিনী।

প্রকল্পের কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একে অপরকে সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও এ নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সঙ্গে সিডিএর দ্বন্দ্ব কাজ করছে।

রোববারের সমন্বয় সভায় মেয়র নাছির বলেন, “ভালো কাজের আলোচনা নেই। মন্দ কাজের জন্য সমালোচনার ঝড় উঠে। এই মন্দ কাজের জন্য নগরবাসী চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে দোষারোপ করে।

“ওয়াসা, পিডিবি, টিঅ্যান্ডটিসহ বিভিন্ন সংস্থা রাস্তা খোড়াখুড়ি করে। দুর্ভোগ বাড়ে সাধারণ মানুষের। চট্টগ্রাম শহরে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ প্রকল্প একনেকে পাস করানোর পর আমাদের কাছে রাস্তা কাটার অনুমতি চায়। তখন আমাদের অনুমতি না দিয়ে উপায়ও থাকে না। প্রকল্প গ্রহণের আগে সমন্বয় করলে এ সমস্যা হতো না।”

এজন্য তিনি আগামী অর্থবছরের সব পরিকল্পনা ১৫ দিনের মধ্যে জমা দিতে করপোরেশনের আওতাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জনান।

মেয়র বলেন, “চট্টগ্রাম মহানগরীতে বিভিন্ন সংস্থার তিন হাজার কোটি টাকার অধিক কাজ চলমান রয়েছে। এসব বাস্তবায়ন হলে চট্টগ্রামে দৃশ্যমান উন্নয়ন পরিলক্ষিত হবে।”

সিডিএর জলাবদ্ধতা প্রকল্পের বিষয়ে নাছির বলেন, “সিডিএ জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। নালাসমূহ পরিষ্কার করার সময় স্ল্যাব উঠানো হচ্ছে। কিন্তু কাজ শেষে স্ল্যাবগুলো নালার ওপর বসানো হচ্ছে না।

“অথচ অধিকাংশ নালার স্ল্যাব ফুটপাত হিসেবে ব্যবহার হয়। তাতে মানুষের হাটা চলায় বিঘ্ন ঘটছে। আর জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলে তো এসব খোলা নালা মৃত্যুকূপে পরিণত হয়।”

এজন্য মেয়র সিডিএকে আরও দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানান।

করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহার পরিচালনায় সভায় পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম মহানগরের পরিচালক আজাদুর রহমান মল্লিক, করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ, চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফজলুল্লাহ, পিডিবির প্রধান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন, চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় চট্টগ্রামের ডেপুটি ডিরেক্টর ইয়াসমিন পারভীন তিবরিজি, সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) কুসুম দেওয়ানসহ রেলওয়ে, কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, বিটিসিএল, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।