চট্টগ্রামে ৩ এসএসসি পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কারের তদন্ত দাবি

প্রশ্নপত্রে কলমের দাগ থাকার অভিযোগে জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক চট্টগ্রামের তিন এএসসি পরীক্ষার্থীর বহিষ্কারের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তাদের অভিভাবকরা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Feb 2018, 08:10 AM
Updated : 20 Feb 2018, 09:37 AM

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা। সেই সঙ্গে পরীক্ষার্থীদের বহিষ্কারকারী ম্যাজিস্ট্রেট রমিজ আলমেরও অপসারণও দাবি করা হয়।

চট্টগ্রামের সেন্ট প্ল্যাসিডস হাই স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী ইমাম হোসেনের পিতা মোহাম্মদ ইউনুস লিখিত বক্তব্যে বলেন, নগরীর মুসলিম হাই স্কুল কেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেট রমিজ আলম অন্যায়ভাবে প্রশ্নের ওপর কলমের দাগের অজুহাত এনে তিন পরীক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে।

“সম্পূর্ণ মনগড়াভাবে পরীক্ষার্থীদের শাস্তি দেওয়ায় তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এ ঘটনা একজন সচেতন মানুষ হিসেবে কোনভাবে মেনে নেওয়া যায় না।”

চট্টগ্রাম ডিসি অফিসে এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অযথা হয়রানি করে চারজনকে আটক করে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয় সংবাদ সম্মেলনে।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি মুসলিম হাই স্কুল কেন্দ্রে এসএসসি’র রসায়ন বিজ্ঞানের পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে নৈর্ব্যক্তিক অংশের প্রশ্নে বিন্দু দিয়ে দাগ দেয়ার অভিযোগ এনে তিন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেন জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট রমিজ আলম।

এ তিন পরীক্ষার্থী হলেন- সেন্ট প্ল্যাসিডস হাই স্কুলের ইমাম হোসেন ও তারিক আমিন চৌধুরী এবং সেন্ট স্কলাসটিকা স্কুলের সায়মা আক্তারকে বহিষ্কার করে। এ ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে নগরীর কোর্ট ভবন সংলগ্ন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তাদের অভিভাবকরা গেলে তাদের চারজনকে আটক করে মামলা দেয়া হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে অভিভাবক মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, “আমরা মানবিক দিক থেকে বিষয়টি বিবেচনার জন্য প্রশাসনকে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু তারা এ বিষয়টি গুরুত্ব দেননি। এ কারণে মেধাবী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন ও ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি।

“একইসাথে কেন্দ্রের ভেতরে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও ম্যাজিস্ট্রেট রমিজ আলম তার স্মার্ট ফোন নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করেছেন। তার বিরুদ্ধেও তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত পরীক্ষার্থী ইমাম হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “উত্তর নির্ভুলভাবে দ্রুত দিতে কয়েকটি প্রশ্নে দাগ দিয়েছিলাম। এ কারণে আমার দশ বছরের সাধনা ধ্বংস হয়ে যাবে বুঝতে পারিনি।”

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, “ম্যাজিস্ট্রেট স্কুলের ১০৯ নম্বর কক্ষে আমার পাশে এসে প্রশ্নে ফোটা কেন দিয়েছি তা জানতে চান। পরে তিনি কক্ষে দায়িত্বরত শিক্ষককে বলে উত্তরপত্র নিয়ে নেন। পরবর্তী আধঘণ্টা পর আমার প্রবেশপত্র নিয়ে নেন।

ইমাম জানায়, দুই পরীক্ষার্থী তারিককে একই অভিযোগে ১১০ এবং সায়মাকে ১১২ নম্বর কক্ষ থেকে বহিষ্কার করা হয়। একজনের সাথে অপরজনের কোন যোগসূত্র নেই বলেও দাবি করেন তিনি।