সরেজমিনে এই ব্যবসায়ীদের খোঁজ নিতে গেলে তাদের অনেকেই বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তিল তিল করে গড়ে তোলা দোকানটি ছিল তাদের জীবন-জীবিকার একমাত্র অবলম্বন।
এখানকার ফোর স্টার ফার্নিচারের মালিক আবদুল গফুর বলেন, তিনি এখানে ২০১১ সাল থেকে ব্যবসা করছেন। জাহাজের ফার্নিচার, সোফাসেট আর লোহার ফার্নিচারও ছিল।
“সকালে খবর পেয়ে দোকানে আসি। তারপর আগুন জ্বলতে দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। কে আমাকে বাসায় দিয়ে গেছে তাও জানি না। আমার আর কোনো মূলধন নেই। পরিবার নিয়ে কী করব তাও জানি না।”
নগরীর প্রবেশপথ সিটি গেট এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে স্টিলের তৈরি দোতালা এসব দোকান ছিল সারিবদ্ধভাবে।
শুক্রবার সকাল ৯টায় আগুন লেগে ২৩টি আসবাবাবের দোকান ও ১০টি বসতঘর পুড়ে যায়।
আল আমিন ডোর অ্যান্ড ফার্নিশার্সের মালিক মিজানুর রহমান বলেন, “আগুন আমার সব কেড়ে নিল। চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া কিছু করতে পারলাম না।”
মিজান কাঁদতে কাঁদতে বলেন, তিনি এখানে ১৯ বছর আগে ব্যবসা শুরু করেন।
“আমার দোকানে ছিল সব দামি কাঠের দরজা। তিল তিল করে গড়ে তোলা আমার সবকিছু চোখের সামনে একবেলার আগুনে শেষ হয়ে গেল।”
জাহাজের পুরনো আসবাব বিক্রি করা হয় এসব দোকানে। কাঠের ও লোহার আসবাবও বিক্রি হয় কিছু দোকানে। প্রতিটি দোকানের পেছনেই তাদের কারখানা ও গুদাম রয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-সহকারী পরিচালক মো. জসিম উদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, দোকানগুলোয় কেরোসিন কাঠ, বার্নিশ অয়েল ও রং ছিল। এগুলো সবই উচ্চ দাহ্য পদার্থ।
“টিনশেড ও স্টিলের তৈরি দুই ও তিনতালা এসব দোকানের পেছনে ছিল কারখানা ও গুদাম। আগুন সেখানে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে বেলা ২টা ২০ মিনিটে।”
পুড়ে যাওয়া দোকানগুলোর খুব অল্পকিছু আসবাব রক্ষা করা গেছে জানিয়ে জসিম উদ্দিন বলেন, আগুনের কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি করা হবে।
প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির যথাযথ পরিমাণ জানা যায়নি।
এখানকার ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগুনে একেকজনের ২০ থেকে ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।