শুক্রবার বিকালে নগরীর লালদীঘি ময়দানে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন এমেরিটাস প্রফেসর ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী।
উদ্বোধন শেষে লালদীঘি ময়দান থেকে বিভিন্ন বামপন্থি সংগঠন ও শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে এক বিশাল লাল পতাকার মিছিল হয়।
আলোচনা সভায় অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, অক্টোবর বিপ্লব সারা বিশ্বের বিপ্লব, যা মানুষের মুক্তির পথ দেখিয়েছিল। মানুষের মধ্যে বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে রুশ বিপ্লব মুক্তির পথে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। রুশ দেশে বিপ্লবের সেই পতাকা ম্রিয়মাণ হলেও এখনো টিকে থাকার স্বপ্ন দেখিয়ে চলে বিশ্বের সংগ্রামী যেকোনো মানুষের মনে।
রুশ বিপ্লবের এ প্রেরণা বাংলাদেশ তথা সারা বিশ্বের নিপীড়িত সংগ্রামী মানুষকে নতুন বিশ্বের পথ দেখায় বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম।
সভায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, মহান সমাজতান্ত্রিক অক্টোবর বিপ্লব মানবসভ্যতার অগ্রগতির ইতিহাসে এক অনন্য সাধারণ ঘটনা। এই বিপ্লব পৃথিবীতে প্রথমবারের মতো সামাজিক-আর্থিক বৈষ্যমের অবসান ঘটিয়ে একটি উন্নত মানবিক ও সাম্যের সমাজ বিনির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে।
অক্টোবর বিপ্লবের প্রাসঙ্গিকতা কখনোই মরেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, সোভিয়েত ভাঙলেও সমাজতন্ত্রের আন্দোলন থেমে যায়নি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেশে সমাজতন্ত্র অভিমুখী যাত্রা অক্টোবর বিপ্লবের আগেও ছিল, পরেও ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
সিপিবি সভাপতি সেলিম বলেন, “বর্তমানে আমাদের দেশে চতুর্দিকে সংকট। অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাষ্ট্রীয় জীবনে সংকট চলছে। সমাজের সর্বক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। দেশকে বিদেশিদের হাতে বিক্রির ষড়যন্ত্র চলছে। সমাজতন্ত্রের লক্ষ্য নিয়ে যে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল তা থেকে আমরা পেছন দিকেই হাঁটছি।
‘‘সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী দেশে দ্বিদলীয় ধারা তৈরি করে রেখেছে। এর অবসান ঘটাতে হবে। বামপন্থীরা আওয়ামী লীগও না বিএনপিও না। দেশকে সমাজতন্ত্রের দিকে নিতে হলে বুর্জোয়া দলগুলোকে দিয়ে সম্ভব না।’’
সভায় বাসদ (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেকুজ্জামান রতন, গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী ও গণমুক্তি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রধান সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন আহমেদ নাসু বক্তব্য দেন।
আলোচনা সভা শেষে মুসলিম হলে সংগীত, আবৃত্তি ও নাটক পরিবেশন করেন উদীচী, চারণ, প্রমা, বোধন, রক্তকরবী, ওড়িশি অ্যান্ড টেগোর ডান্স মুভমেন্ট ও চট্টগ্রাম থিয়েটার।