র‍্যাব সদস্যদের মাজার লুটের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ পেছাল

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় তালসরা দরবার শরিফের টাকা লুটের মামলায় প্রধান আসামির আবেদনে সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়েছে আদালত।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 Oct 2017, 08:43 AM
Updated : 23 Oct 2017, 09:29 AM

চট্টগ্রামের পঞ্চম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নূর এ আলম সোমবার সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়ে আগামী ২ নভেম্বর নতুন দিন ঠিক করেন।

এ আদালতে এদিন সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর দিন ধার্য ছিল। সাক্ষ্য দিতে মামলার বাদী তালসরা দরবারের পীরের গাড়ি চালক মো. ইদ্রিস সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজিরও হয়েছিলেন।

তবে মামলার প্রধান আসামি চাকরিচ্যুত র‍্যাব কর্মকর্তা জুলফিকার আলী মজুমদার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি চেয়ে উচ্চ আদালতে আবেদন করার কথা জানিয়ে সময় আবেদন করেন।

এতে বিচারক সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়ে নতুন ঠিক করেন বলে জানান মামলায় বাদীপক্ষের আইনজীবী সাহাবুদ্দিন আহমেদ।

আইনজীবী সাহাবুদ্দিন আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মামলার আসামি জুলফিকার আলী মজুমদার হাই কোর্টে একটি আবেদন করেছেন।

“সেই আবেদনের বিষয়ে তার আইনজীবী স্বাক্ষরিত একটি সার্টিফাইড কপি আদালতে দাখিল করা হয়েছে। তাই সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়নি। সাক্ষ্য নেওয়ার জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে ২ নভেম্বর।”

আইনজীবী সাহাবুদ্দিন বলেন, অভিযোগ গঠনের দিন আসামিরা মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছিলেন। আদালত সে আবেদন নামঞ্জুর করে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।

“ওই আদেশ বাতিল চেয়ে (কোয়াশমেন্ট) উচ্চ আদালতে আবেদন করেছেন আসামি জুলফিকার আলী মজুমদার।”

জুলফিকার আলী মজুমদারের পক্ষে হাই কোর্টে আবেদনকারী আইনজীবী হেনা নাজমুন নাহার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে ১৫ অক্টোবর আবেদন করা হয়েছে।

“আবেদনটি অপেক্ষমান আছে। এ বিষয়ে এখনো কোনো আদেশ দেননি আদালত।”

আসামিপক্ষের আরেক আইনজীবী রফিকুল আহ্‌সান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আসামিরা সময়ের আবেদনও করেছেন। সে বিষয়ে পরবর্তী দিনে শুনানি হবে।

এর আগে মামলা বাতিল চেয়ে ২০১২ সালে জুলফিকারের করা আবেদনটি ২০১৫ সালের ১১ মার্চ হাই কোর্ট বাতিল করে দিয়েছিল।

গত ১২ সেপ্টেম্বর এ মামলায় সাবেক চার র‌্যাব সদস্যসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

আসামিরা হলেন- র‌্যাব-৭ এর তৎকালীন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল (চাকরিচ্যুত) জুলফিকার আলী মজুমদার, ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট (বাধ্যতামূলক ছুটিতে) শেখ মাহমুদুল হাসান, র‌্যাব-৭ এর সাবেক ডিএডি আবুল বাশার, এসআই তরুণ কুমার বসু, র‌্যাবের তিন সোর্স দিদারুল আলম ওরফে দিদার, আনোয়ার মিয়া ও মানব বড়ুয়া।

এ মামলার সাত আসামিই জামিনে আছেন।

তালসরা দরবারে ২০১১ সালের ৪ নভেম্বর রাতে র‌্যাব সদস্যরা গিয়ে তল্লাশির নামে ২ কোটি ৭ হাজার টাকা লুট করেন বলে অভিযোগ। ঘটনার পাঁচ মাস পর ২০১২ সালের ১৩ মার্চ আনোয়ারা থানায় র‌্যাব সদস্যসহ ১২ জনেরর বিরুদ্ধে ওই মামলা হয়।

২০১২ সালের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ঢাকার মগবাজার থেকে গ্রেপ্তার হন জুলফিকার। তবে ২১ জুন উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে মুক্ত হন তিনি।

এরপর ২০১২ সালের ২৬ জুলাই জুলফিকারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন আনোয়ারা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবদুস সামাদ।

মামলা বাতিল চেয়ে দুই আসামির করা আবেদন বাতিল হলে সংশ্লিষ্ট জিআরও শাখায় প্রায় চার বছর আগে জমা পড়া অভিযোগপত্রটি আদালতের নির্দেশে বিচারিক আদালতে আসে।