জলাবদ্ধতা: আগামী বছর কিছু করবেন মেয়র নাছির

এ বছর নগরবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হলেও আগামী বর্ষায় চট্টগ্রামের অনেক এলাকা জলবদ্ধতা মুক্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 31 May 2017, 03:16 PM
Updated : 31 May 2017, 03:16 PM

নগর ভবনে বুধবার জলাবদ্ধতা নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (সিসিসি) পরিকল্পনা জানতে চাইলে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।

আ জ ম নাছির বলেন, “এ বছর কষ্ট হলেও আগামী বর্ষায় চট্টগ্রাম নগরীর পুরোটা না পারলেও উল্লেখযোগ্য একটা এলাকা আমরা জলাবদ্ধতা থেকে মুক্ত করতে পারব।

“এজন্য স্বল্প ও মধ্য মেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। মহেশখালের শুরু ও শেষ পর্যন্ত আমরা মাটি উত্তোলন করব। এছাড়াও আগ্রাবাদ এক্সেস রোড উঁচু করার জন্য ৫৩ কোটি টাকার টেন্ডার হয়ে গেছে। ৫১ কোটি টাকার আরও একটি প্রকল্প আছে আগ্রাবাদ এলাকার জন্য।”

এর বাইরে হিজড়া খাল, নাসির খালসহ প্রতিটি খাল থেকে মাটি উত্তোলনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান মেয়র।

“এভাবে চট্টগ্রামের প্রতিটি এলাকার সমস্যা আলাদা আলাদা করে ইমিডিয়েটলি সমাধান করা হবে। মেগা যে প্রকল্প হাতে আছে সেটা বাস্তবায়ন করতে সাত থেকে আট বছর লাগবে। যে কাজগুলো এখন করছি সেটার সুফল এ বছর পাব না পুরোপুরি, আগামী বর্ষায় এসব কাজের সম্পূর্ণ সুফল আমরা পাব।”

ঘূর্ণিঝড় মোরা ঊপকূল অতিক্রম করার পর মঙ্গলবার রাত থেকে টানা বর্ষণে পানিতে তলিয়ে গেছে আগ্রাবাদের ছোট পুল, বড় পুল, হাজী পাড়া, বেপারি পাড়া, দাইয়া পাড়া, কুসুমবাগ আবাসিক এলাকাসহ প্রায় অধিকাংশ এলাকা। ওই এলাকার ৬৫০ শয্যার ‘মা ও শিশু হাসপাতালে’ উঠেছে হাঁটু পানি।

জলাবদ্ধতা নিরসনে নিজেদের উদ্যোগ নিয়ে মেয়র নাছির বলেন, “আমাদের অনুরোধে মহেশখালের উপর চট্টগ্রাম বন্দর একটা অস্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করেছিল, যার কারণে একটা অংশের মানুষ সুফল পেলেও উজানে যারা ছিল তাদের সমস্যা হয়েছে।

“আমি বন্দরকে অনুরোধ করেছি। তারা একটি স্থায়ী স্লুইচগেইট নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে জলাবদ্ধতার প্রকোপ অনেকাংশে কমে যাবে।”

নিজের কাজের উদাহরণ দিয়ে আ জ ম নাছির বলেন, আগে নগরীর সিমেন্ট ক্রসিং এলাকার যে অংশ নেভাল একাডেমির দিকে গেছে, সেখানে এখন জলাবদ্ধতা হয় না।

“এভাবে আমরা একটা একটা করে সব সমস্যার সমাধান করব।”

মেয়র বলেন, সরঞ্জাম ও লোকবলসহ সিটি করপোরেশনের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

“সব খাল থেকে মাটি উত্তোলন করতে আমাদের সবগুলো সরঞ্জাম লাগবে। ফলে আমাদের অন্য উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বন্ধ করে দিতে হবে। এছাড়া লোকবলের সংকটও আছে।”

তিনি বলেন, চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতার পেছনে কয়েকটি কারণ রয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়েছে। আবার জোয়ারের সময় বৃষ্টি হলে পানি যাওয়ার জায়গা থাকে না।

“সমপরিমাণ বৃষ্টি যদি ভাটার সময় হয় তাহলে জলাবদ্ধতা তেমন একটা হয় না। আরও আছে আমাদের বালির পাহাড়। বৃষ্টি হলে বালি চলে আসে নালায়। ফলে নালা ভরাট হয়ে যায়। এছাড়াও নির্মাণ সামগ্রী রাখা হয় রাস্তায়, বৃষ্টি হলে সেগুলো গিয়ে পড়ে নালায়।”

বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা না আসার জন্য জনগণের সচেতনতার অভাবকে দায়ী করেন তিনি।

নাছির বলেন, “আমরা ডোর টু ডোর বর্জ্য সংগ্রহ করতে সবগুলো বাসায় বিন দিয়েছি। কিন্তু দেখা যায়, পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ময়লা নিয়ে আসার পর যে ময়লা জমে সেটা যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে। এটা খুবই এলার্মিং।”