বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকার বিএসএমএমইউ হাসপাতালে তিনি ৭১ বছর বয়সে মারা যান।
দুরারোগ্য ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে গত কয়েক বছর ধরে তিনি চিকিৎসা নিচ্ছিলেন।
সাংবাদিক সিদ্দিক আহমেদের ছেলে এস আর সিদ্দিক সাইফ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সন্ধ্যা ছয়টার দিকে বাবা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
গত ২৮ মার্চ অসুস্থ সিদ্দিক আহমদকে চট্টগ্রামের বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। পরে সিদ্দিক আহমেদকে পিজি হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সিদ্দিক আহমেদের জীবন ঘড়ি থেমে যাওয়ার খবর ফেসবুকে জানিয়ে হাজারো মানুষ শোক প্রকাশ করেছেন।
চট্টগ্রামের নবীন-প্রবীণ সব সাংবাদিকের কাছে ‘বন্ধু’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন সিদ্দিক আহমেদ। তিনি সবার সঙ্গে আড্ডায় মেতে উঠতেন বয়সের সীমা ডিঙ্গিয়ে।
চট্টগ্রামের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতি জগতের সবার কাছে প্রিয় মানুষ সিদ্দিক আহমেদের ব্যক্তিগত সংগ্র্রহে আছে কয়েক হাজার বই।
সত্য প্রকাশে নির্ভীক ও সৎ সাংবাদিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত সিদ্দিক আহমেদ ছিলেন চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের শেষ ভরসাস্থল।
১৯৪৬ সালে চট্টগ্রামের রাউজানে জন্ম নেওয়া সিদ্দিক আহমেদ বাষট্টির ছাত্র আন্দোলন ও ঊনসত্তরের গণআন্দোলনের সক্রিয় কর্মী।
ছাত্র জীবনে ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত সিদ্দিক আহমেদ ১৯৬৮ সাল থেকে সাহিত্যিক-সাংবাদিক রণেশ দাশগুপ্তের সান্নিধ্যে ছিলেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি সংগঠকের ভূমিকা পালন করেন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর রাউজানে শিক্ষকতায় যুক্ত হন। এরপর কৃষিকাজ ও কৃষক আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন।
১৯৯১ সাল থেকে সাংবাদিকতায় যুক্ত হয়ে ২০১৫ সালে পেশাগত জীবনের ইতি টানেন দৈনিক আজাদীর সহকারী সম্পাদক হিসেবে।
এ পর্যন্ত সাতটি বই প্রকাশিত হয়েছে সিদ্দিক আহমদের। তার জীবন ও রচনা নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে দুটি স্মারক গ্রন্থ।
এদিকে সিদ্দিক আহমেদের মৃত্যুতে আলাদা আলাদা বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ার ও সাধারণ সম্পাদক শুকলাল দাশ, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক হাউজিং কো-অপারেটিভ সোসাইটির সভাপতি মঈনুদ্দিন কাদেরী শওকত ও সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম, উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সভাপতি শহীদ জায়া বেগম মুশতারি শফি ও সাধারণ সম্পাদক শীলা দাশগুপ্তা।