খুলশী থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন জানান, দেশজুড়ে চলমান জঙ্গিবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে বিকালে ওই লালখান বাজার মাদ্রাসায় পুলিশের একটি দল তল্লাশি চালায়।
অভিযানে চট্টগ্রাম নগর পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে খুলশী থানার পুলিশ সদস্যরাও অংশ নেন বলে জানান তিনি।
এর আগে বুধবার বিকালে সীতাকুণ্ডের প্রেমতলা এলাকার সাধন কুটির থেকে জসিম ও আর্জিনা নামে দুই জঙ্গিকে ধরার পর তাদের দেওয়া তথ্যে পাশের প্রেমতলা এলাকায় জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পায় পুলিশ।
ছায়ানীড় নামে ওই বাড়ি রাতভর ঘিরে রাখার পর বৃহস্পতিবার ভোরে অভিযানে নামে পুলিশের বিশেষ বাহিনী সোয়াট। অভিযানের সময় গুলি এবং জঙ্গিদের ঘটানো বিস্ফোরণে এক শিশুসহ পাঁচজন নিহত হন। সুইসাইড ভেস্ট ও বোমাসহ বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকদ্রব্যও উদ্ধার করা হয়।
ঘটনার তিন দিন পর শনিবার বিকাল ৪টা থেকে পৌনে ৬টা পর্যন্ত লালখান বাজার মাদ্রাসায় অভিযান চালায় পুলিশ।
অভিযান শেষে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার কাজী মুত্তাকি ইবনু মিনান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, চলমান প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এই অভিযান চালানো হয়। আজ খুলশী এলাকা অভিযানের জন্য নির্ধারিত ছিল।
“তারই অংশ হিসেবে এ অভিযান। কেউ যেন এ মাদ্রাসা এলাকায় ঘাঁপটি মেরে বসে না থাকে সে জন্য মাদ্রাসার একাডেমিক ভবন ও ছাত্রাবাসগুলোতে তল্লাশি চালানো হয়েছে।”
ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের নেতা ও হেফাজতের নায়েবে আমীর মুফতি ইজাহারুল ইসলাম পরিচালিত জমিয়তুল উলুম আল-ইসলাম নামের ওই মাদ্রাসাটি ‘লালখান বাজার মাদ্রাসা’ নামেই বেশি পরিচিত।
২০১৩ সালের ৭ অক্টোবর আলোচিত এ মাদ্রাসাটির ‘আল ইফতা’ ভবনের তৃতীয় তলার একটি কক্ষে বিস্ফোরণে আহত পাঁচজনের মধ্যে তিন জনের মৃত্যু হয়।
তখন মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এটিকে ল্যাপটপ বিস্ফোরণ বলে চালাতে চাইলেও পরে সেখানে অভিযান চালিয়ে হাতবোমা ও এসিডসহ বিস্ফোরকের মজুদ পায় পুলিশ। এ মাদ্রাসার সঙ্গে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ওঠে সেসময়।
ওই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে পুলিশ কর্মকর্তা মুত্তাকি বলেন, “২০১৩ সালের মতো ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না হয় সে জন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। বহিরাগত কেউ যেন মাদ্রাসায় না আসতে পারে সেজন্য নজরদারি রাখা হচ্ছে।”