হেনরির ৭ উইকেটের পর ল্যাথাম-উইলিয়ামসনের প্রতিরোধ

ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের দ্বিতীয় দিনে দারুণভাবে লড়াইয়ে ফিরে অস্ট্রেলিয়াকে চাপে রেখেছে নিউ জিল্যান্ড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 March 2024, 07:32 AM
Updated : 9 March 2024, 07:32 AM

অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের ডেলিভারিতে ব্যাট পেতে দিয়েছিলেন মার্নাস লাবুশেন। গালি ডানদিকে ঝাঁপিয়ে অবিশ্বাস্য ক্ষিপ্রতা ও দক্ষতায় তা তালুবন্দি করলেন গ্লেন ফিলিপস। ১০ রানের জন্য সেঞ্চুরি পেলেন না লাবুশেন,  একরকম শেষ হয়ে গেল অস্ট্রেলিয়ার বড় লিডের আশাও। পরে দিনের খেলা শেষের কয়েক মিনিট আগে জশ হেইজেলউডের বলে বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে ক্যাচ নিতে ব্যর্থ হলেন অ্যালেক্স কেয়ারি। রক্ষা পেলেন টম ল্যাথাম। গোটা দিনের প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠল এই দুটি ঘটনায়। দিনটিই নিউ জিল্যান্ডের।

ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ব্যাটে-বলে দারুণভাবে লড়াইয়ে ফিরল নিউ জিল্যান্ড। ম্যাট হেনরির বোলিং তোপে অস্ট্রেলিয়ার লিড তারা ছুঁতে দেয়নি একশ। এরপর টম ল্যাথাম ও কেন উইলিয়ামসনের জুটি কিউইদের এনে দেয় লিড।

৪ উইকেটে ১৩৪ রান নিয়ে দিন শুরু করা অস্ট্রেলিয়া অলআউট হয় ২৫৬ রানে। ৬৭ রানে ৭ উইকেট নেন হেনরি। গত ৩৮ বছরে যা অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে নিউ জিল্যান্ডের সেরা বোলিং।

প্রথম ইনিংসে ৯৪ রানের ঘাটতি পুষিয়ে নিউ জিল্যান্ড দিন শেষ করে ২ উইকেট ২৩৪ রানে। দ্বিতীয় দিন শেষে এগিয়ে আছে তারা ৪০ রানে, উইকেট আছে ৮টি।

দিনের শুরুটা অস্ট্রেলিয়ার জন্য খারাপ ছিল না। ৪৫ রানে শুরু করা মার্নাস লাবুশেন ও নাইটওয়াচম্যান ন্যাথান লায়ন শুরু করেন নির্বিঘ্নে। হেনরিকে চার মেরে ফিফটিতে পা রাখেন লাবুশেন। পরে জুটিও পেরিয়ে যায় ফিফটি।

আগের দিন তিন উইকেট নেওয়া হেনরিই শেষ পর্যন্ত ভাঙেন এই জুটি। ২০ রানে বিদায় নেন লায়ন।

পরের ওভারেই মিচেল মার্শকে আউট করে অস্ট্রেলিয়াকে জোর ধাক্কা দেন হেনরি। টানা দুই ইনিংসে শূন্য রানে ফেরেন মার্শ। ভালো করতে পারেননি অ্যালেক্স কেয়ারিও।

লোয়ার অর্ডারদের নিয়ে শতরানের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন লাবুশেন। কিন্তু টিম সাউদির বলে ফিলিপসের ওই ক্যাচ থামায় তাকে। ১২ চারে ১৪৭ বলে ৯০ রান করে ফেরেন লাবুশেন।

পরে মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্সের ব্যাটে আড়াইশ ছাড়াতে পারে অস্ট্রেলিয়া। এক ঘণ্টা ক্রিজে থেকে ২৮ রান করেন স্টার্ক। ২২ বলে ২৩ করেন কামিন্স। টানা তিন বলে বাউন্ডারির পর একটি ছক্কা মারেন তিনি বেন সিয়ার্সকে।

স্টার্ক ও কামিন্সকে ফিরিয়ে অস্ট্রেলিয়ান ইনিংস শেষ করে দেওয়ার পাশাপাশি ৭ উইকেট নিয়ে মাঠ ছাড়েন হেনরি। ১৯৮৫ সালের নভেম্বরে ব্রিজবেনে রিচার্ড হ্যাডলির ৫২ রানে ৯ উইকেটের পর এটিই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কিউইদের সেরা বোলিং।

নিউ জিল্যান্ড আবার ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই হারায় উইকেট। তৃতীয় ওভারেই উইল ইয়াংকে ফেরান মিচেল স্টার্ক। এরপর টম ল্যাথাম ও কেন উইলিয়ামসনের জুটি। প্রথম ইনিংসে দুজনই থিতু হয়ে আউট হয়েছিলেন। এ দিন শতরানের জুটিত দলকে এগিয়ে নেন দুজন।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট রেকর্ড ভালো নয় দুজনের কারও। তবে এবার নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের হতাশ করেন তারা।

১০৫ রানে থামে এই জুটি। শেষ বিকেলে মেঘলা আকাশের নিচে দারুণ এক স্পেল করছিলেন প্যাট কামিন্স। ওই সময়টাতেই অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়কের একটি ডেলিভারি স্টাম্পে টেনে আনেন উইলিয়ামসন। ৫১ রানে আউট হন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান।

নতুন ব্যাটসম্যান রাচিন রাভিন্দ্রাও গিয়ে অস্বস্তিতে কাটান কিছুটা সময়। তবে উইকেট হারাননি তিনি। আরেক প্রান্তে ল্যাথাম বেঁচে যান দিনের খেলা শেষের একটু আগে। ৬৫ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেন ল্যাথাম। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ১৬২

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৬৮ ওভারে ২৫৬ (আগের দিন ১২৪/৪) (লাবুশেন ৯০, লায়ন ২০, মার্শ ০, কেয়ারি ১৪, স্টার্ক ২৮, কামিন্স ২৩, হেইজেলউড ১*; সাউদি ১৮-২-৬১-১, হেনরি ২৩-৪-৬৭-৭, সিয়ার্স ১৬-৩-৭৬-১, কুগেলাইন ৬-১-৩০-০, ফিলিপস ৫-০-১৪-১)।

নিউ জিল্যান্ড ২য় ইনিংস: ৫০ ওভারে ১৩৪/২ (ল্যাথাম ৬৫*, ইয়াং ১, উইলিয়ামসন ৫১, রাভিন্দ্রা ১১*; স্টার্ক ১১-১-৩৯-১, হেইজেলউড ১৩-৫-২৪-০, কামিন্স ১১-২-২১-১, গ্রিন ৬-১-২৭-০, লায়ন ৬-১-১৪-০, মার্শ ৩-০-৬-০)।