পিসিবিকে ধুয়ে দিলেন মিকি আর্থার

পাকিস্তান ক্রিকেট নিজেরাই নিজেদের পায়ে পেরেক ঠুকছে বলে মনে করেন সাবেক কোচ ও টিম ডিরেক্টর।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Jan 2024, 10:25 AM
Updated : 13 Jan 2024, 10:25 AM

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডকে (পিসিবি) এক হাত নিয়েছেন দেশটির সাবেক কোচ ও টিম ডিরেক্টর মিকি আর্থার। পাকিস্তান ক্রিকেটে একে অপরের মধ্যে সঠিক যোগাযোগের ঘাটতি আছে বলে দাবি করেছেন তিনি। খেলোয়াড়দের পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ তার। এই দক্ষিণ আফ্রিকানের মতে, পিসিবি নিজেরাই নিজেদের পায়ে পেরেক ঠুকছে। 

২০১৬ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধান কোচের দায়িত্বে ছিলেন আর্থার। তার কোচিংয়ে ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতে পাকিস্তান, টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে ওঠে শীর্ষে। তবে ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর তার জায়গায় প্রধান কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয় মিসবাহ-উল-হাককে।

নাজাম শেঠি আবার পিসিবি প্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার পর ফের পাকিস্তান ক্রিকেটে ফেরানো হয় আর্থারকে। ২০২৩ সালের এপ্রিলে টিম ডিরেক্টর হিসেবে যোগ দেন তিনি। একই সঙ্গে কাউন্টি ক্রিকেটে ডার্বিশায়ারের সঙ্গেও চুক্তিবদ্ধ ছিলেন আর্থার। ফলে পূর্ণাঙ্গ সময় নিয়ে বাবর-রিজওয়ানদের সঙ্গে কাজ করতে পারেননি। ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ব্যর্থতার পর টিম ডিরেক্টরর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় তাকে। 

‘উইজডেন’-এ শনিবার প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে পাকিস্তান ক্রিকেটের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আর্থার। দেশটিতে সঠিক কাঠামো নেই বলে মনে করেন তিনি। 

“আমি প্রতিনিয়ত দেখছি, পাকিস্তান ক্রিকেট নিজেদের পায়ে পেরেক ঠুকছে। সেখানে প্রতিভা আছে, প্রয়োজন সঠিক কাঠামো, ভালো নেতৃত্ব। একই সঙ্গে দরকার ধারাবাহিকতা, স্থায়িত্ব, সঠিক দিকনির্দেশনা। ২০১৬ থেকে ২০১৯, তখন আমাদের কাছে এমন খেলোয়াড় ছিল, যারা প্রক্রিয়া অনুসরণে বিশ্বাস করত।”

“আমি যখন ইনজির (সাবেক প্রধান নির্বাচক ইনজামাম-উল-হক) সঙ্গে বসতাম, তার সঙ্গে আমার দারুণ কাজের বোঝাপড়া ছিল, আমরা দল নির্বাচন করার পর দলের সঙ্গে আলোচনা করতাম, তারা জানত একটা স্থায়ী কাঠামো আছে। কারণ, আমি ও ইনজি কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছিলাম। একজন খেলোয়াড়কে বলতে পারি, ফখরের (জামান) উদাহরণই ধরা যাক, তাকে বলা হলো, তুমি আগামী ১০টি ওয়ানডে খেলবে। আমরা জানি ও আমাদের ম্যাচ জেতাবে। মাঝেমধ্যে এটা অনেক ঝুঁকির। কিন্তু এভাবে অন্তত খেলোয়াড়দের কাঠামোর প্রতি বিশ্বাস শুরু হয়, নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বিশ্বাস করে এবং দলের জন্য খেলতে শুরু করে।” 

কিন্তু বারবার পরিবর্তন হলে ক্রিকেটাররা কৌশলী পথ বেছে নেয় বলে মনে করেন আর্থার। 

“যদি দলে ক্রমাগত পরিবর্তন করা হয় এবং খেলোয়াড়দের জায়গা পাওয়া নিয়ে অস্থিরতা তৈরি হয়, তাহলে তারা নিজের সুরক্ষার কৌশল বেছে নেয় এবং তারা পরবর্তী সফরের কথা চিন্তা করে নিজেদের জন্য খেলতে শুরু করে। এটা দেখা হতাশাজনক যে খেলোয়াড়দের পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়া হয় না, তাদের সঙ্গে সঠিক যোগাযোগ নেই এবং তারা জানে যে বিষয়গুলো সবসময় পরিবর্তন হতে যাচ্ছে।”

বিশ্বকাপে ৯ ম্যাচের ৫টি হেরে প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নেয় পাকিস্তান। বিশ্ব মঞ্চে ব্যর্থতার জন্য প্রতিকূল পরিবেশকে দায় দিলেন ৫৫ বছর বয়সী আর্থার। 

“পাকিস্তানের কোনো সমর্থন না থাকাটা খুবই কঠিন বিষয় ছিল। দলটিকে তাড়িত করার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার হলো, তারা মাঠ ও হোটেলে অবিশ্বাস্য সমর্থন পায়। কিন্তু এখানে (ভারতে) আমরা কখনোই তা পাইনি, বিশ্বকাপে বিষয়টা বেশ প্রভাব ফেলে, বিশেষ করে খেলোয়াড়দের জন্য।” 

“যেমন আপনি কল্পনা করতে পারেন আহমেদাবাদে কতটা কঠিন, প্রতিকূল পরিবেশ ছিল। তবে আমাদের কাছে এটা প্রত্যাশিতই ছিল। খেলোয়াড়দের কৃতিত্ব দিতে হবে যে, তারা একবারও কাঁদেনি বা অভিযোগ করেননি।”