ওয়েস্ট ইন্ডিজে ৮ ঘণ্টার লড়াইয়ে সাইফ হাসানের ১৪৬

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দলের বিপক্ষে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করলেন সাইফ, নতুন বলে উজ্জ্বল মৃত্যুঞ্জয়।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 August 2022, 05:02 AM
Updated : 13 August 2022, 05:02 AM

ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে অবশেষে একটি দাপুটে দিন কাটল বাংলাদেশ ‘এ’ দলের। সেই দিনটির মূল কারিগর সাইফ হাসান। আগের দুই দিন লড়াই করে উইকেট আঁকড়ে ছিলেন তিনি। তৃতীয় দিনে দারুণ সব স্ট্রোকের ছটায় তিনি উপহার দিলেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। বল হাতে পরে দলকে দারুণ শুরু এনে দিলেন মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরি।

সেন্ট লুসিয়ায় দ্বিতীয় আনঅফিসিয়াল টেস্টের তৃতীয় দিনে ৯ উইকেটে ৩০০ রান তুলে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে বাংলাদেশ ‘এ’ দল।

৮ ঘণ্টা ১৪ মিনিট উইকেটে কাটিয়ে সাইফ খেলেন ১৪৬ রানের ইনিংস। বাংলাদেশ টেস্ট দল থেকে বাদ পড়া ব্যাটসম্যানের ৩৪৮ বলের পথচলায় চার ছিল ১৩টি, ছক্কা ৪টি।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ দল শুক্রবার দিন শেষ করে ২ উইকেটে ৪৩ রান নিয়ে। দুটি উইকেটই নেন বাঁহাতি পেসার মৃত্যুঞ্জয়।

বৃষ্টিবাধায় আগের দুই দিনে খেলা হয়েছিল স্রেফ ৮৪ ওভার। তৃতীয় দিনেও যথারীতি ছিল বৃষ্টির হানা। খেলা হতে পারে এ দিন ৬০.৪ ওভার। ম্যাচ তাই অবধারিতভাবেই গড়াচ্ছে ড্রয়ের পথে।

২১৭ বলে ৬৩ রান নিয়ে সাইফ শুরু করেছিলেন দিন। আগের দুই দিন সাবধানী ব্যাটিংয়ে উইকেট আঁকড়ে রাখেন তিনি। অনেক অস্বস্তিও ছিল ব্যাটিংয়ে। তৃতীয় দিনে তার ব্যাটে দেখা যায় রান বাড়ানোর তাড়না। জাকের আলির সঙ্গে তার জুটি জমে ওঠে।

সেঞ্চুরিতে পৌঁছানোর শটটি ছিল সম্ভবত তার সেরা শট। ৯৪ রান থেকে জাস্টিন গ্রিভসের সোজা ব্যাটে পুল করে বোলাররের মাথার ওপর দিয়ে আছড়ে ফেলেন তিনি গ্যালারিতে।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৫৩ ম্যাচে তার সপ্তম সেঞ্চুরি এটি।

পরের ওভারে লেগ স্পিনার ইয়ানিক কারাইয়াহকে ফ্ল্যাট এক ছক্কা মারেন তিনি পুল শটে, এক বল পরই আরেকটি পুল শটে মারেন বাউন্ডারি।

ষষ্ঠ উইকেটে ১০১ রানের জুটি শেষ হয় জাকের আলি অনিকের বিদায়ে। কারাইয়ার ফ্লাইট ও লুপে বিভ্রান্ত হয়ে ৩৩ রানে (৮৬ বলে) স্লিপে ক্যাচ দেন কিপার-ব্যাটসম্যান জাকের।

এরপর লোয়ার অর্ডারে খুব বেশি প্রতিরোধ হয়নি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট পেসার অ্যান্ডারসন ফিলিপের বলে স্লিপে ধরা পড়েন নাঈম হাসান (৪)। মৃত্যুঞ্জয় গিয়ে স্বভাবজাত আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে তিনটি বাউন্ডারি মারার পর আউট হন ফিলিপের বলে পুল করে মিড উইকেটে ধরা পড়ে (২১ বলে ১৪)।

নবম উইকেটে তানভির ইসলামকে সঙ্গে নিয়েও মূল্যবান কিছু রান দলকে এনে দেন সাইফ। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে চোখধাঁধানো এক শটে ছক্কা আদায় করেন বোলার ফিলিপের মাথার ওপর দিয়ে। পরের বল কাট করে পাঠান বাউন্ডারিতে।

তার ইনিংস শেষ হয় কারাইয়াহর লেগ স্পিনে। এটিও চেষ্টা করেন উড়িয়ে মারার, টাইমিং না হওয়ায় সহজ ক্যাচ যায় পয়েন্টে।

১৪৬ রানে সাইফের বিদায়ের সঙ্গেই ইনিংস ঘোষণা করেন বাংলাদেশ ‘এ’ দলের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা করে বেশ নিরাপদেই। সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরিকে ৯ ওভার সামলে নেন তেজনারাইন চন্দরপল ও জেরেমি সলোজানো।

এরপরই মৃত্যুঞ্জয়ের জোড়া ধাক্কা। স্টাম্পের বাইরের লেংথ বল কাট করতে গিয়ে স্টাম্পে টেনে আনেন বাঁহাতি সলোজানো (১০)। তার পরের ওভারেই অফ স্টাম্প ঘেষা বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনে নামা কেসি কার্টি (০)।

বৃষ্টির বাধায় বারবার বন্ধ হয় খেলা। শেষ পর্যন্ত চন্দরপল ও অধিনায়ক জশুয়া দা সিলভা আর কোনো বিপদ হতে দেননি দলের। চন্দরপল অপরাজিত ৫৭ বলে ২১ রান করে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ‘এ’ দল ১ম ইনিংস: ১২৬.৪ ওভারে ৩০০/৯ (ডি.) (আগের দিন ১৫৭/৫) (জয় ১৭, সাদমান ২৫, সাইফ ১৪৬, ফজলে মাহমুদ ১৪, মিঠুন ১৪, জাকির ১৫, জাকের ৩৩, নাঈম ৪, মৃত্যুঞ্জয় ১৪, তানভির ১*; ফিলিপ ২৬-১০-৭২-৩, মিন্ডলি ২৫-৩-৭০-১, গ্রিভস ২৫-১৩-৪৩-০, আর্চিবল্ড ২২-৬-৪৮-৩, কারাইয়াহ ২৬.৪-৭-৫৩-২, আথানেজ ২-০-৩-০)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ ১ম ইনিংস: ১৮ ওভারে ৪৩/২ (তেজনারাইন ২১*, সলোজানো ১০, কার্টি ০, জশুয়া ১২*; খালেদ ৫-১-১৫-০, মৃত্যুঞ্জয় ৮-২-১৯-২, নাঈম ৫-৩-৯-০)।