রনির সঙ্গে ব্যাটিং করে মজা পাচ্ছেন লিটন

সঙ্গী বদলে যাওয়ায় উদ্বোধনী জুটির পারফরম্যান্সও বদলে গেছে, ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলার পর বলছেন লিটন।  

ক্রীড়া প্রতিবেদক চট্টগ্রাম থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 March 2023, 03:44 PM
Updated : 29 March 2023, 03:44 PM

পরপর দুই বছরে দুটি বিশ্বকাপে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর টি-টোয়েন্টিতে নতুন শুরুর গান শোনা যাচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটে। সেই চেষ্টায় ব্যাটিং লাইন-আপে এসেছে বেশ কিছু পরিবর্তন। লিটন দাসের সঙ্গে ইনিংস সূচনায় বেছে নেওয়া হয়েছে রনি তালুকদারকে। নতুন এই জুটি এখনও পর্যন্ত দারুণ সফল। সাফল্যের কারিগরদের একজন, জুটির যিনি পুরনো সেনানী, সেই লিটনের মতে, তার সঙ্গী পরিবর্তনেই বয়ে যাচ্ছে বদলের হাওয়া। 

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সবশেষ সিরিজ দিয়েই নতুন এই জুটির পথচলা শুরু। সেই সিরিজের শেষ ম্যাচে তারা গড়েছিলেন ৫৫ রানের বন্ধন। এরপর এই আয়ারল্যান্ড সিরিজের দুই ম্যাচে এই জুটির রান ৯১ ও ১২৪। টি-টোয়েন্টিতে এই প্রথম টানা তিন ম্যাচে অর্ধশত রানের শুরু পেল বাংলাদেশ। 

শুধু রানের কারণেই নয়, এই জুটি আলাদা করে নিজেদের মেলে ধরতে পেরেছে রান করার ধরনেও। ৫৫ রানের জুটিতে তাদের রান রেট ছিল ৭.৩৩, পরের দুই জুটিতে রান রেট ১২.৬৯ ও ১৩.২৮। এমনকি দুজনের জুটির প্রথম ম্যাচেও ৩৩ রান এসেছিল ৯.৪২ রান রেটে। 

অথচ গত দুই বছরে উদ্বোধনী জুটিতে বেশ ভুগেছে বাংলাদেশ। ২০২১ ও ২০২২ সালে ৪৮ ম্যাচে ১৭টি ভিন্ন জুটি বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস সূচনা করেছে। মেক-শিফট ওপেনার ব্যবহার করেও খোঁজা হয়েছে সমাধান। কিন্তু মেলেনি সাফল্য।  

ওই দুই বছরে একবার দেখা গেছে শতরানের উদ্বোধনী জুটি, পঞ্চাশ ছাড়িয়েছে স্রেফ দুইবার। ভালো শুরু না পাওয়ার মাশুলও দিতে হয়েছে নিয়মিত।  

সেই অবস্থা থেকে এখন ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত লিটন-রনির জুটিতে। ইতিবাচক মানসিকতা ও আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ইংল্যান্ডের পর আয়ারল্যান্ড সিরিজেও উজ্জ্বল এই দুজন। স্রেফ পাঁচ ম্যাচেই একটি সেঞ্চুরি ও দুইটি পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটি উপহার দিয়েছেন তারা। যার সবশেষটি আবার বাংলাদেশের রেকর্ড।  

জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে বুধবার স্রেফ ৫৬ বলে ১২৪ রান যোগ করেন লিটন-রনি। উদ্বোধনী জুটিতে এটিই দেশের সর্বোচ্চ। লিটন ক্যারিয়ার সেরা ৮৩ রানের ইনিংস খেলেন স্রেফ ৪১ বলে। 

উদ্বোধনী জুটির সাম্প্রতিক অতীতের ব্যর্থতার অধ্যায় ছাপিয়ে লিটন-রনির সাফল্যের পেছনে পরিবর্তন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিটনের ছোট্ট উত্তর, ‘(উদ্বোধনী জুটির) সঙ্গী বদলে গেছে, (পারফরম্যান্স পরিবর্তন) হয়ে গেছে।’ 

পরের কথায়ই তিনি জানিয়ে দেন, অতীতের জুটিগুলোর ব্যর্থতা নিয়ে তার ভাবনা বা কথা বলার আগ্রহ নেই একদমই। 

“আরেকটা জিনিস হচ্ছে, আপনারা যে কোনো সময় যখন প্রশ্ন করেন, পেছনের কথা কেন টানেন সবসময়? নতুন যে জিনিসটা হচ্ছে, এটা কি ভালো লাগছে না? দুই বছর, এক বছর... আগের জিনিস টানার তো কোনো দরকার নেই। এখন ভালো খেলছি। এই জুটিটা কতটা যেতে পারে, দেখি…।” 

সামনে আরও অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জ আসবে এই জুটির। যে আগ্রাসী ঘরানা তারা বেছে নিয়েছে, এই পথে বিপদ ও ঝুঁকি অনেক বেশি। তাই ব্যর্থতাও আসবে। সবকিছুই তিনি মনে করিয়ে দিলেন। 

“যে শুরুটা আমরা দিয়েছি, আমার মনে হয় টি-টোয়েন্টিতে ওপেনিংয়ে এটাই সর্বোচ্চ। এর চেয়ে বড় কিছু তো আর হতে পারে না। এখন প্রতিটা ম্যাচেই আপনি এই সাফল্য পাবেন না যে, যাব আর দুজনই হিট করা শুরু করব। এমন সময় আসবে যে, ভুগতে হবে। তবে ব্যাটিং করে অনেক মজা পাচ্ছি তার সাথে।”