দ্বিতীয় ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪৮ রানে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
Published : 19 Mar 2023, 12:51 AM
শুরুর জুটিতে সুর বেঁধে দিলেন ব্রান্ডন কিং ও কাইল মেয়ার্স। ওয়ানডে নেতৃত্বের অভিষেক অপরাজিত সেঞ্চুরিতে রাঙালেন শেই হোপ। টেম্বা বাভুমা জবাব দিলেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে। কিন্তু শক্ত অবস্থানে থেকে পথ হারিয়ে ফেলল তার দল। দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ইস্ট লন্ডনের বাফেলো পার্কে শনিবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ক্যারিবিয়ানদের জয় ৪৮ রানে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে এই সংস্করণে নিজেদের সর্বোচ্চ ও এই মাঠের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৩৫ রান তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
জোহানেসবার্গে ২০০৪ সালে ২ উইকেটে ৩০৪ রান ছিল প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ক্যারিবিয়ানদের আগের সর্বোচ্চ।
চার নম্বরে নেমে ১১৫ বলে ৭ ছক্কা ও ৫ চারে ১২৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন হোপ। পরে উইকেটের পেছনে তিনটি ক্যাচ নিয়ে ম্যাচের সেরা তিনি।
এই মাঠে ২৫৬ রানের বেশি তাড়া করে জিততে পারেনি কোনো দল। দক্ষিণ আফ্রিকাকে গড়তে হতো তাই রেকর্ড। কুইন্টন ডি ককের ঝড়ো ইনিংসের পর বাভুমার ব্যাটে ২৮তম ওভারে তারা দুইশ ছুঁয়ে ফেলে স্রেফ ৩ উইকেট হারিয়ে। এরপরই হারায় পথ। ৮৭ রানের মধ্যে শেষ ৭ উইকেট হারিয়ে ২৮৭ রানে থমকে যায় স্বাগতিকরা।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্টে ১৭২ রানের ইনিংস খেলা বাভুমা এবার পঞ্চাশ ওভারের ম্যাচে করেন ১৪৪। তার ১১৮ বলের ইনিংসে ৭ ছক্কার পাশে চার ১১টি।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ওয়ানডে অভিষেক হয় এ দিন চার জনের।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে কিং ও মেয়ার্সের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ৮ ওভারে বিনা উইকেটে তারা তুলে ফেলে ৬৬ রান। এরপর দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে দলটি।
বাঁহাতি স্পিনার বিয়ন ফোরটান পরপর দুই ওভারে ফিরিয়ে দেন মেয়ার্স (২৬ বলে ৩৬) ও কিংকে (২৯ বলে ৩০)। মাঝে অভিষিক্ত পেসার জেরাল্ড কোয়েটজি শূন্য রানে ফিরিয়ে দেন শামারা ব্রুকসকে।
৭১ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন বর্তমান অধিনায়ক হোপ ও সাবেক অধিনায়ক নিকোলাস পুরান। ৮১ বলে ৮৬ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন দুজন। ৪১ বলে ২৯ রান করা পুরানকে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন কোয়েটজি।
হোপ এরপর ৮৩ বলে ৮০ রানের আরেকটি দারুণ জুটি গড়েন সহ-অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েলের সঙ্গে। রোভম্যানের ৪৯ বলে ৩ ছক্কা ও ২ চারে গড়া ৪৬ রানের ইনিংসও থামান কোয়েটজি।
হোপ বাড়াতে থাকেন রান। চতুর্দশ ওয়ানডে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি ১০৪ বলে। মুখোমুখি শেষ ৯ বলে তিনি করেন ২৮ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ ১০ ওভারে তোলে ৯৩ রান, শেষ ৩ ওভারে ৪০।
রান তাড়ায় পাওয়ার প্লের ১০ ওভারে ডি ককের উইকেট হারিয়ে ৭৮ রান তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। ২৬ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ডি কক করেন ৪৮ রান।
দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের বাকিটা কেবলই বাভুমার। যোগ্য সঙ্গ কারও থেকেই তেমন আর পাননি তিনি। দুই অভিষিক্ত ব্যাটসম্যান টনি ডি জর্জি (১৪), রায়ান রিকেলটন (২৭) ইনিংস বড় করতে পারেননি।
অভিজ্ঞ রাসি ফন ডার ডাসেন যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। আরেক অভিষিক্ত ট্রিস্টান স্টাবসও তাই। ৯২ বলে চতুর্থ ওয়ানডে সেঞ্চুরি করে এগিয়ে যান বাভুমা। অন্য প্রান্তে ব্যাটসম্যানরা ছিলেন আসা-যাওয়ার মধ্যে।
নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় বাভুমার ১৪৪ রানের ইনিংস। তার আগের সেরা ছিল ১১৩।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ৩টি করে উইকেট নেন পেসার আলজারি জোসেফ ও স্পিনার আকিল হোসেন।
সিরিজের প্রথম ওয়ানডে পরিত্যক্ত হয়েছিল বৃষ্টির জন্য। আগামী মঙ্গলবার পচেফস্ট্রুমে হবে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ৩৩৫/৮ (কিং ৩০, মেয়ার্স ৩৬, ব্রুকস ০, হোপ ১২৮*, পুরান ৩৯, পাওয়েল ৪৬, হোল্ডার ১৫, আকিল ২, স্মিথ ১, জোসেফ ১৩*; এনগিডি ১০-০-৭৬-০, ইয়ানসেন ১০-০-৭৭-১, কোয়েটজি। ১০-০-৫৭-৩, ফোরটান ১০-০-৫৭-২, শামসি ১০-০-৬২-২)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৪১.৪ ওভারে ২৮৭ (ডি কক ৪৮, বাভুমা ১৪৪, রিকেলটন ১৪, জরজি ২৭, ফন ডাসেন ৮, স্টাবস ৬, ইয়ানসেন ১৭, ফোরটান ১, কোয়েটজি ১, এনগিডি ১২*, শামসি ০; জোসেফ ৮.৪-০-৫৩-৩, হোল্ডার ৭-১-৪৫-০, মেয়ার্স ৬-০-৪০-১, আকিল ১০-০-৫৯-৩, কারাইয়াহ ৫-০-৪৭-১, স্মিথ ৫-০-৪০-১)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪৮ রানে জয়ী
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০তে এগিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ম্যান অব দা ম্যাচ: শেই হোপ