নিকোলসের ‘অদ্ভুত’ আউটের পর মিচেল-ব্লান্ডেলের লড়াই

বাঁহাতি স্পিনার জ্যাক লিচের বলে বেরিয়ে এসে জোরের ওপর শট খেললেন হেনরি নিকোলস। বল নিজের দিকে আসতে দেখে নন স্ট্রাইক প্রান্তে ড্যারিল মিচেল শেষ মুহূর্তে ব্যাট সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেন, কিন্তু পারলেন না। বল তার ব্যাটে লেগে মিড অফে জমা পড়ল অ্যালেক্স লিসের হাতে, আউট! ঘটনার আকস্মিকতায় অবাক বোলার নিজেও। ততক্ষণে অবশ্য তাকে ঘিরে উদযাপনে মাতোয়ারা সতীর্থরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2022, 06:41 PM
Updated : 23 June 2022, 06:41 PM

এমনই অদ্ভুত আউটের সাক্ষী হলো ইংল্যান্ড-নিউ জিল্যান্ড তৃতীয় টেস্ট। নিকোলসের বিদায়ে বিপর্যয়ে পড়ে যাওয়া দলের হাল ধরলেন আবারও যথারীতি মিচেল ও টম ব্লান্ডেল। তাদের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়াল হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লক্ষ্যে নামা নিউ জিল্যান্ড।

লিডসে সিরিজের তৃতীয় টেস্টে ৫ উইকেটে ১২৩ রানের নড়বড়ে অবস্থান থেকে নিউ জিল্যান্ড প্রথম দিন শেষ করেছে ৫ উইকেটে ২২৫ রানে।

প্রথম দুই টেস্টেই সেঞ্চুরি করা মিচেল আরেকটির আশা জাগিয়ে খেলছেন ১৫৯ বলে ৭৮ রানে। ১০৮ বলে ৪৫ রানে অপরাজিত কিপার-ব্যাটসম্যান ব্লান্ডেল। তাদের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ১০২।

সিরিজে এখন পর্যন্ত ৫ ইনিংসে এই দুজনের জুটির রান ৫৯৩, যে কোনো সিরিজে নিউ জিল্যান্ডের কোনো জুটির যা সর্বোচ্চ। মিচেল-ব্লান্ডেল জুটি পেছনে ফেলেছেন ১৯৯০-৯১ মৌসুমে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মার্টিন ক্রো ও আন্ড্রু জোন্সের ৫৫২ রানকে।

সব দেশ মিলিয়ে কোনো সিরিজে পঞ্চম উইকেটে বা এর পরের কোনো জুটির তৃতীয় সর্বোচ্চ রান মিচেল ও ব্লান্ডেলের ৫৯৩। ২০১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে ৫ ইনিংসে জুটি বেঁধে ৬৩০ রান করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার মাইকেল ক্লার্ক ও মাইকেল হাসি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের শিবনারায়ন চন্দরপল ও কার্ল হুপার ২০০২ সালে ভারতের বিপক্ষে ৫ ইনিংসে করেছিলেন ৭২৩ রান।

হেডিংলিতে বৃহস্পতিবার উইকেট থেকে পেসাররা পেয়েছেন মুভমেন্ট। স্টুয়ার্ট ব্রড, ম্যাথু পটসদের দারুণ বোলিংয়ে প্রথম দুই সেশনে নিউ জিল্যান্ডকে চেপে ধরে ইংলিশরা। তবে শেষ সেশনে মিচেল ও ব্লান্ডেলের সামনে তেমন সুবিধা করতে পারেননি স্বাগতিক বোলাররা।  

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই টম ল্যাথামকে হারায় নিউ জিল্যান্ড। অভিজ্ঞ পেসার ব্রডের বলে প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাঁহাতি ওপেনার। 

প্রথম ঘণ্টায় আর কোনো বিপদ হতে দেননি উইল ইয়াং ও কেন উইলিয়ামসন। পানি পানের বিরতির পর লিচের করা প্রথম বলেই এলবিডব্লিউ হয়ে যান ইয়াং (৪২ বলে ২০)। 

উইলিয়ামসনও থিতু হয়ে ইনিংস টেনে নিতে পারেননি। লাঞ্চের একটু আগে তিনি বিদায় নেন ব্রডের বলে কিপারকে ক্যাচ দিয়ে। ৬৪ বলে ৫ চারে কিউই অধিনায়ক করেন ৩১ রান।

১১ রানে জীবন পেয়ে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ডেভন কনওয়ে। তিনি বোল্ড হন জিমি ওভারটনের বল স্টাম্পে টেনে এনে। অভিষিক্ত ইংলিশ পেসার পান প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেটের স্বাদ।

৮৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর প্রতিরোধের চেষ্টা করেন নিকোলস ও মিচেল। কিন্তু চা বিরতির আগে ১২৫ বলে ৪০ রানের জুটি ভাঙে নিকোলসের ওই আউটে। ৯৯ বলে একটি চারে তিনি করেন ১৯ রান। 

তখন ১২৩ রানে ৫ উইকেট হারানো সফরকারীদের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারত, যদি মিচেলের বিপক্ষে এলবিডব্লিউয়ের রিভিউ নিতেন বেন স্টোকস। ৮ রানে ‘বেঁচে’ যাওয়া মিচেল প্রতিরোধ গড়েন ব্লান্ডেলকে নিয়ে।

সিরিজ জুড়েই যাদের ব্যাটে বিপর্যয় থেকে বারবার উদ্ধার হয়েছে নিউ জিল্যান্ড, সেই মিচেল ও ব্লান্ডেল দাঁড়িয়ে গেছেন আরও একবার। লিচকে ছক্কায় উড়িয়ে মিচেল ফিফটি করেন ১০০ বলে। মাঝে বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকে কিছুক্ষণ। পরে দ্বিতীয় নতুন বলেও জুটি আর ভাঙতে পারেনি স্বাগতিকরা।   

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৯০ ওভারে ২২৫/৫ (ল্যাথাম ০, ইয়াং ২০, উইলিয়ামসন ৩১, কনওয়ে ২৬, নিকোলস ১৯, মিচেল ৭৮*, ব্লান্ডেল ৪৫*; ব্রড ১৭-৫-৪৫-২, পটস ২০-৭-০-২৮-০, ওভারটন ১৬-২-৪১-১, লিচ ৩০-৮-৭৫-২, রুট ৭-০-৩০-০)