‘নিঃস্বার্থ ক্রিকেটারদের’ দলে চান স্টোকস

এক বছরের বেশি সময় ধরে টেস্ট ক্রিকেটে ব্যর্থতার চোরাবালিতে হাবুডুবু খাচ্ছে ইংল্যান্ড। জিততেই যেন ভুলে গেছে তারা। কঠিন সময়ে লাল বলে অধিনায়কের দায়িত্ব পাওয়া বেন স্টোকসের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ, দলকে কক্ষপথে ফেরানো। এজন্য তিনি দলে চান এমন সব ক্রিকেটারদের, যারা মাঠে দলকে সাহায্য করতে সর্বোচ্চটা উজাড় করে দেবে, সঠিক সিদ্ধান্তগুলো নেবে।  

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 May 2022, 03:21 PM
Updated : 3 May 2022, 03:21 PM

নিজেদের সবশেষ ১৭ টেস্টে ইংল্যান্ডের জয় স্রেফ একটি। টানা ৯ টেস্টে নেই জয়ের দেখা। সিরিজ হেরেছে টানা ৪টি। ভারতের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা অসমাপ্ত সিরিজটা ধরলে সংখ্যাটা হবে পাঁচ।

দলের টানা বাজে পারফরম্যান্সে তুমুল সমালোচনার মধ্যে গত মাসে অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন জো রুট। এরপর স্টোকসের কাঁধে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটি তুলে দেয় ইংল্যান্ডের বোর্ড।

দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে চেস্টার-লি-স্ট্রিটে মঙ্গলবার অনেক বিষয় নিয়েই কথা বলেন স্টোকস। অধিনায়কত্ব পেয়ে রোমাঞ্চিত এই অলরাউন্ডার বললেন, অতীত ভুলে শুধু সামনে তাকাতে চান তিনি।

“আমার জন্য রোমাঞ্চকর মুহূর্ত এটি, একই সঙ্গে চ্যালেঞ্জও, বিশেষ করে গত কয়েকটা বছর যেভাবে কেটেছে। তবে আমার ভাবনা অতীতে যা চলে গেছে সেদিকে নজর দেওয়া নয়, সামনে যা আসছে সেদিকে মনোযোগ দেওয়া। অবশ্যই সেটির শুরুটা এখন, এরপর শুরু হবে লর্ডসে।”

আগামী ২ জুন লর্ডসে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট দিয়ে শুরু হবে স্টোকসের নতুন পথচলা। ইংল্যান্ডকে আগেও একটি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি, ২০২০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে রুট যখন পিতৃত্বকালীন ছুটিতে ছিলেন।

ইংল্যান্ডের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক রবার্ট কি-র কাছ থেকে অধিনায়ক হওয়ার প্রস্তাব পেয়ে কিছুটা সময় নিলেও দায়িত্ব নিতে মনে কোনো দ্বিধা ছিল না বলে দাবি করলেন স্টোকস।

“অবশ্যই কিছুটা বিবেচনা করার বিষয় এটি। কারণ, এটি এমন দায়িত্ব নয় যে শুধু ‘হ্যাঁ’ বললেই হয়ে যায়। এই দায়িত্বের সঙ্গে খুঁটিনাটি সব বিষয় নিয়ে ভাবতে হয়। তবে আমার খুব বেশি সময় লাগেনি। আর এটি প্রত্যাখ্যান করা যায় এমন বিষয়ও নয়।”

ইংল্যান্ড ক্রিকেটে মাঠের ভেতরে ও বাইরে অনেক কিছুতেই পরিবর্তন দরকার বলে মনে করেন ৩০ বছর বয়সী স্টোকস।

“পরিবর্তনের মতো ব‍্যাপারগুলো চলবে এবং আলোচনা হবে, সেগুলো এখানে (সংবাদমাধ্যমে) বলার মতো নয়। তবে মাঠের বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে, আমি নিঃস্বার্থ ক্রিকেটার দলে পেতে চাই, যারা নির্দিষ্ট দিনে ম্যাচ জেতার জন্য তারা কী করতে পারে, তার ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়।”

“কারণ, দিন শেষে ম্যাচ জয়ের ওপর ভিত্তি করেই সবকিছু মূল্যায়ন করা হয়। আমার কাছে সব সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটি। কোন বিষয়টি আমাদের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে, তার ওপর নির্ভর করেই আমি সিদ্ধান্ত নিই। আমার সঙ্গে আরও ১০ জনকে রাখতে চাই, যারা একই মানসিকতার।”

নেতৃত্ব পেয়েই স্টোকস বলেছিলেন, দুই অভিজ্ঞ পেসার জেমস অ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রডকে দলে ফেরত চান তিনি। গত অ্যাশেজে ভরাডুবির পর দল পুনর্গঠন করে সামনে তাকানোর কথা বলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল ১ হাজার ১৭৭ উইকেট শিকারি দুই বোলারকে। তাদের সুযোগ দেওয়ার কথা আবারও বললেন নতুন অধিনায়ক।

“একটি টেস্ট ম্যাচ জেতার সেরা উপায় হলো ১১ জন সেরা খেলোয়াড় বাছাই করা। যদি জেমস অ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রড ফিট থাকে, তাদের দলে নেওয়া হবে, কারণ তারা ইংল্যান্ডের সেরা দুই বোলার। আমার মতে, তাদের কখনও দলে বিবেচনা না করাটা বোকামি। তারা সেরা একাদশের অংশ।”