বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে বঙ্গবন্ধু ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের ম্যাচে রোববার ২০ রান জিতেছে আবাহনী। ২৬২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় খেলাঘর থেমেছে ২৪১ রানে।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে অতি সাবধানী শুরু করা নাঈম মুখোমুখি হওয়া ৪২ বলে করেন স্রেফ ৬ রান। শেষ পর্যন্ত ১১৮ বলে ৩ ছক্কা ও ৬ চারে ৮৪ রান করে ম্যাচের সেরা তিনিই। ৬৩ রানের ইনিংস খেলেন মোসাদ্দেক। ৪২ রান আসে শামীমের ব্যাট থেকে।
খেলাঘরকে জয়ের স্বপ্ন দেখানো অমিত মজুমদার করেন ৭৯ রান। অমিত হাসান থামেন ৫৪ রানে। তৃতীয় উইকেটে তাদের ১২১ রানের জুটি ভাঙার পর পথ হারিয়ে ফেলে দলটি। মাঠ ছাড়ে হতাশা নিয়ে।
ব্যাটিংয়ে নেমে দলের রান বাড়ানোর দায়িত্ব নেন জাকের আলি। রান করতে থাকেন বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান।
সতর্ক শুরুর পর নাঈম গা ঝাড়া দেন ইফতেখার সাজ্জাদকে ছক্কায় উড়িয়ে। এই অফ স্পিনারের ওভারের শেষ বলে মারেন চার।
টিকতে পারেননি ভারতের টেস্ট ব্যাটসম্যান হনুমা বিহারি। তৌহিদ হৃদয়কে এলবিডব্লিউ করে দ্রুত ফেরত পাঠান ইফতেখার। ৪৮ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে পথ হারাতে বসা দলকে দিশায় ফেরান নাঈম ও মোসাদ্দেক। তাদের জুটিতে দেড়শ পার করে আবাহনী।
নাঈম ফিফটিতে পা রাখেন ৯২ বলে। পরে একটু বাড়ান রানের গতি। বাঁহাতি স্পিনার টিপু সুলতানকে উড়িয়ে মারার চেষ্টায় ক্যাচ আউট হয়ে ফেরেন তিনি। ভাঙে মোসাদ্দেকের সঙ্গে তার ১১১ রানের জুটি।
৭০ বলে পঞ্চাশ করা মোসাদ্দেক ইনিংস বড় করতে পারেননি। ২ ছক্কা ও ৫ চারের ইনিংসটি শেষ হয় কট বিহাইন্ড হয়ে। আফিফ হোসেন দ্রুত কিছু রান তুলে বিদায় নেন।
আবাহনীর রান আড়াইশ পার হয় শামীমের ব্যাটে। ৪ চারে ৩৯ বলে ৪২ রান করা বাঁহাতি এই বিস্ফোরক ব্যাটসম্যান থামেন মেহেদি হাসানের অফ স্পিনে।
জবাব দিতে নেমে দুই ওপেনারকে ৩০ রানে হারায় খেলাঘর। আরাফাত সানির স্পিনে পিনাক ঘোষ হন কট বিহাইন্ড, এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন হাসানউজ্জামান।
তবে হাসানউজ্জামানের উইকেটটি ছিল আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল প্যাডে নয়, বল লেগেছে ব্যাটে। সেটা বুঝে আবাহনীর ক্রিকেটাররাও করেননি সেভাবে আবেদন। কিন্তু আম্পায়ার অবিশ্বাস্যভাবে তুলে দেন আঙুল!
শুরুর সেই ধাক্কা সামাল দিয়ে দলকে এগিয়ে নেন দুই অমিত। তাদের দুইজনের জুটিতে দেড়শ স্পর্শ করে খেলাঘরের রান।
৩০তম ওভারে ২ উইকেটে ১৫১ রানের দৃঢ় অবস্থানে থাকা দলটি মেলাতে পারেনি আপাত সহজ সমীকরণ। তাদের দিক হারানোর শুরু অমিত মজুমদারের বিদায় দিয়ে। ৪ ছক্কা ও ৬ চারে ৭৯ রান করে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান আরাফাত সানির বলে ধরা পড়েন আফিফ হোসেনের হাতে।
৭৩ বলে ফিফটি করা অমিত হাসানের বিদায়ে বিপদ আরও বাড়ে। সালমান হোসেন, প্রিতম কুমার, মেহেদিরা পারেননি দলকে কক্ষপথে ফেরাতে। শেষ দিকে নিহাদ-উজ-জামান ও ইফতেখার ব্যবধান কিছুটা কমান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আবাহনী লিমিটেড: ৫০ ওভারে ২৬১/৯ (নাঈম ৮৪, জাকের ২০, বিহারি ৩, হৃদয় ০, মোসাদ্দেক ৬৩, আফিফ ২৩, শামীম ৪২, সাইফ ১, তানজিম ৮, তানভির ৩*, সানি ০*; মেহেদি ৯-১-৩১-২, টিপু ৯-০-৫৩-১, মাসুম ১০-০-৫০-১, ইফতেখার ৬-০-৩৫-১, নিহাদ ৬-০-৩৪-০, সালমান ১০-০-৫৮-২)
খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সিমিতি: ৫০ ওভারে ২৪১/৯ (পিনাক ১৫, হাসানুজ্জামান ৮, অমিত মজুমদার ৭৯, অমিত হাসান ৫৪, সালমান ৫, প্রিতম ১২, মাসুম ১৩, মেহেদি ৬, টিপু ০, নিহাদ ১৫*, ইফতেখার ১৮*; সাইফ ১০-০-৫০-২, সানি ১০-০-৪৪-৩, মোসাদ্দেক ৮-১-২৫-০, তানজিম ৯-০-৪৮-৩, তানভির ৮-০-৫২-১, আফিফ ৫-০-১৯-০)
ফল: আবাহনী লিমিটেড ২০ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মোহাম্মদ নাঈম শেখ