একসময়ের তারকা এই ব্যাটসমানের সমসাময়িক প্রায় সবাই বেশ আগেই খেলা ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু আশরাফুল পারছেন না স্বপ্নটাকে মুছে ফেলতে। তার মাঠের পারফরম্যান্সে যদিও দৃঢ় প্রতিজ্ঞার ছাপ নেই ততটা।
২০১৩ সালের মে মাসে সবশেষ দেশের হয়ে খেলেছিলেন আশরাফুল। এরপর ফিক্সিংয়ের দায়ে ৫ বছরের জন্য হন নিষিদ্ধ। শাস্তি কাটিয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরলেও জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার মতো তেমন কিছু করতে পারেননি তিনি।
মাঝের সময়ে তার সেরাটা দেখা গেছে প্রিমিয়ার লিগেরই এক আসরে। ২০১৭-১৮ মৌসুমে কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের হয়ে ১৩ ম্যাচে পাঁচ সেঞ্চুরিতে করেছিলেন ৬৬৫ রান। তবে প্রায় সব ইনিংসের গতি ছিল মন্থর, বেশিরভাগ সেঞ্চুরি ম্যাচে রাখতে পারেনি তেমন কোনো প্রভাব। সেই আসরের পর লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ১৫ ইনিংস মিলিয়ে তার রান কেবল ২৯৩। গড় ২০-এর নিচে।
নিষেধাজ্ঞা থেকে ফেরার পর ২৩ টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে তার রান ৩৯৪। এখানেও গড় বিশের নিচে- ১৯.৭।
প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলছেন নিয়মিত, সুযোগও পাচ্ছেন বেশ। কিন্তু কাজে লাগাতে পারছেন না তেমন একটা। কোনো আসরেই নেই একাধিক সেঞ্চুরি। ২০১৯-২০ মৌসুম ছিল তার সেরা। সেটাতেও এক সেঞ্চুরি ও তিন ফিফটিতে ১৩ ইনিংসে করে ৪২.০৯ গড়ে করেন ৪৬৩ রান। পরের ১০ ম্যাচ মিলিয়ে ২৫ এর একটু কম গড়ে করতে পারেন কেবল ৪৬৫ রান।
ধারাবাহিকতা খুঁজে ফিরেছেন ক্যারিয়ারের শুরু থেকে। দুই দশক পেরিয়ে গেলেও সন্ধান আর পাননি। তাই প্রথম শ্রেণি, লিস্ট ‘এ’ ও প্রতিযোগিতামূলক টি-টোয়েন্টি, কোনোটিতেই তার গড় ৩০ স্পর্শ করেনি।
এবার যেন নতুন করে শুরু করতে চান আশরাফুল। প্রথমবারের মতো খেলবেন ব্রাদার্স ইউনিয়নে। দলটিকে নেতৃত্বও দেবেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান। সোমবার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রিমিয়ার লিগে ট্রফি উন্মোচনের পর জানালেন, এখনও তার লক্ষ্য জাতীয় দল।
“সবার জন্যই প্রিমিয়ার লিগ গুরুত্বপূর্ণ। আমি যেহেতু এখনও খেলছি এবং স্বপ্ন দেখি বাংলাদেশ দলে খেলব। সেদিক থেকে এই লিগটা খুব গুরুত্বপূর্ণ আমার জন্য। যদি আরও দুই-তিন বছর আমার ক্যারিয়ারটা ক্যারি করতে চাই, আমার মনে হয় এই লিগে আমার ভালো কিছু করা উচিত।”
কোন সংস্করণে দেশের হয়ে খেলতে চান আশরাফুল?
“স্বপ্ন তো দেখি সব সংস্করণেই খেলার। কিন্তু এখন যেহেতু সামনে ঢাকা লিগ, ঢাকা লিগ নিয়েই আমি থাকতে চাই। এই জায়গায় ভালো খেলতে চাই, ব্রাদার্সের হয়ে ভালো খেলতে চাই। কিছু কিছু ভালো ইনিংস খেলতে চাই, ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলতে চাই।”
৬১ টেস্টে ছয় সেঞ্চুরি আর আট ফিফটিতে আশরাফুল ২৪ গড়ে করেছেন ২ হাজার ৭৩৭ রান। ১৭৭ ওয়ানডেতে ২২.২৩ গড়ে করেছেন ৩ হাজার ৪৬৮ রান। তিন সেঞ্চুরির পাশে ২০ ফিফটি।
২৩ টি-টোয়েন্টিতে ১৯.৫৬ গড় ও ১২৬.৪০ স্ট্রাইক রেটে তার রান ৪৫০। দুই ফিফটির সবচেয়ে বড়টিতে করেন ৬৫।