রূপকথার এক জুটিতে বাংলাদেশকে স্মরণীয় জয় এনে দেওয়ার পর আফিফ ফিরে গেলেন মিরাজের সঙ্গে তার জুটির শুরুতে। ২১৬ রান তাড়ায় ৪৫ রানেই নেই যখন ৬ উইকেট, জয় তখন অলীক কল্পনাই। আফিফ ও মিরাজও তেমন কিছু ভাবেননি।
ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে আফিফ বললেন, অসাধারণ এই জুটির শুরুর ভাবনা ছিল খুব সাধারণ।
“৬ উইকেট পড়ার পর আমাদের শুধু একটা লক্ষ্য ছিল যে, আমরা উইকেট দেব না। এই লক্ষ্য নিয়েই ব্যাটিং করছিলাম যে উইকেট না দিয়ে যতক্ষণ কাটানো যায়। এতে রান যা আসতে থাকবে...এলে ভালো, না এলেও কিছু করার নাই। শেষের দিকে তো খেলা বল টু বল ছিল। পরিকল্পনা ছিল কেবল স্বাভাবিক খেলাটা খেলব।”
তারা যখন জুটি শুরু করেছেন, আফগান বাঁহাতি পেসার ফজলহক ফারুকির বোলিং তাণ্ডবে ততক্ষণে চলছে বিরতি। মূল চ্যালেঞ্জ তখন রশিদ খান ও মুজিব উর রহমানের মতো ক্ষুরধার দুই স্পিনারকে সামলানো। সঙ্গে অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবি তো ছিলেনই।
আফিফ ও মিরাজের পরিকল্পনা ছিল তিন আফগান স্পিনারকে সতর্কতায় খেলে ম্যাচ শেষ পর্যন্ত টেনে নেওয়া।
“ওদের যে ৩ জন স্পিনার ছিল, তাদের বিপক্ষে পরিকল্পনা ছিল স্বাভাবিক খেলা। ওদের সবার ওভার শেষ হলেও ৫ ওভার বাকি থাকত। শেষের দিকে খেলা যখন অনেক দূর চলে গেছে, তখন ৫ ওভারে যদি ৩০-৪০ বা ৫০ রানও লাগে, আমরা চেষ্টা করব যেন শেষ করতে পারি। ওদের স্পিনারদের উইকেট না দিয়ে ব্যাটিং করার পরিকল্পনা ছিল।”
এভাবে যখন জুটি গড়ে ওঠে, আস্তে আস্তে দল খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়ায়, একসময় অসম্ভব মনে হওয়া জয়টাও নাগালে চলে আসতে শুরু করে, তখনও জয়ের ভাবনাকে প্রশ্রয় দেননি বলেই জানালেন আফিফ।
“পুরো খেলাটায় আমরা ম্যাচ জেতানোর ব্যাপারে কথা বলি নাই। আমাদের স্রেফ কথা ওটাই ছিল যে, আমরা উইকেট দেব না, শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করব।”
অবিচ্ছিন্ন ১৭৪ রানের এই রেকর্ড গড়া জুটিতে শুরুতে অগ্রণী ছিলেন আফিফ। পরে মিরাজ দারুণ কিছু শট খেলে এক পর্যায়ে ছাড়িয়ে যান সঙ্গীকে। পরে আবার এগিয়ে থেকে শেষ করেন আফিফ। দুজনের ব্যাটিংয়েই ছিল দায়িত্ববোধ, পরিণত ভাবনা, হাল না ছাড়া মানসিকতার ছাপ। আফিফ এখানে বড় কৃতিত্ব দিলেন মিরাজকে।
“মিরাজ ভাই অনেক ভালো ব্যাটিং করেছেন। যখন বাউন্ডারি দরকার ছিল, কিছু ডট হয়ে গেছে, তখন ও পাশ থেকে বাউন্ডারি এসেছে। এ ছাড়া সব মিলিয়ে দুজনের কথা অনেক ভালো হচ্ছিল। দুজনেই বুঝছিলাম পরিস্থিতি যে, উইকেট না দিলে সম্ভব ম্যাচটা জেতা। সেই চেষ্টাই করছিলাম দুজন।”