বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্তা সংস্থা রোববার বর্ষসেরা ক্রিকেটারের নাম ঘোষণা করেছে। ইংল্যান্ডের কিপার-ব্যাটসম্যান জস বাটলার, বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার অলরাউন্ডার মিচেল মার্শ ও শ্রীলঙ্কার লেগ-স্পিনিং অলরাউন্ডার ভানিন্দু হাসারাঙ্গাকে পেছনে ফেলেছেন রিজওয়ান।
২০২১ সালে ২৯ টি-টোয়েন্টিতে ৭৩.৬৬ গড় ও ১৩৪.৮৯ স্ট্রাইক রেটে ১ হাজার ৩২৬ রান করেন রিজওয়ান। সঙ্গে ছিল ২৪ ডিসমিসাল।
প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এক পঞ্জিকাবর্ষে এক হাজার রান করার কীর্তি গড়েন রিজওয়ান। একই সঙ্গে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে এক বছরে দুই হাজার রানের কীর্তিও গড়েন তিনি।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সেমি-ফাইনালে খেলায় রিজওয়ানের ছিল বড় অবদান। ৬ ম্যাচে ৭০.২৫ গড় ও ১২৭.৭২ স্ট্রাইক রেটে ২৮১ রান করে তিনি ছিলেন টুর্নামেন্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
বছরে নিজের প্রথম ম্যাচেই তিনি করেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। লাহোরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ৬৪ বলে ৭ ছক্কা ও ৬ চারে খেলেন ১০৪ রানের অপরাজিত ইনিংস। ওই ছন্দ তিনি ধরে রাখেন বছর জুড়ে। ২৯ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান বছরের শেষটাও রাঙান দারুণ এক ইনিংসে। করাচিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলেন ৪৫ বলে ৮৭ রানের ইনিংস।
বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে আরাধ্য জয়ে রিজওয়ানের ছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ১৫২ রানের লক্ষ্য রিজওয়ান ও অধিনায়ক বাবর আজমের উদ্বোধনী জুটিতেই পেরিয়ে যায় পাকিস্তান। ওয়ানডে হোক বা টি-টোয়েন্টি, বিশ্বকাপে ১৩ বারের চেষ্টায় প্রথমবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হারাতে পারে তারা। ৫৫ বলে ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৭৯ রানে অপরাজিত থাকেন রিজওয়ান।
আইসিসির স্বীকৃতি পেয়ে খুশির জোয়ারে ভাসছেন রিজওয়ান।
“আমাকে ভোটে বর্ষসেরা পুরুষ টি-টোয়েন্টি খেলোয়াড় নির্বাচিত করায় আমি সতীর্থ ও সহকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞ। এই পুরস্কার আমাকে ২০২২ সাল ও এর পরেও পাকিস্তানের হয়ে আরও ভালো খেলার জন্য অনুপ্রাণিত করবে। আমরা যেন সম্মিলিতভাবে বিশ্বের সেরা টি-টোয়েন্টি দল হিসেবে আমাদের লক্ষ্য পূরণ করতে পারি এবং এর পথ ধরেই আমাদের সমর্থকের সংখ্যা বাড়াতে পারি।”
“আমার সব সতীর্থ ও কোচিং স্টাফদের ধন্যবাদ জানাতে চাই, যারা পাকিস্তানের সাফল্যে অবদান রাখার জন্য সারা বছর আমাকে ভালো প্রস্তুতি নিতে ও অনুশীলন করতে সাহায্য করেছেন। যেহেতু ক্রিকেট একটি দলীয় খেলা আমি এই পুরস্কার সতীর্থ ও ভক্তদের উৎসর্গ করতে চাই।”
২০২১ এর শুরুতে নিউ জিল্যান্ড সফরে লো-স্কোরিং সিরিজে বিউমন্ট ছিলেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী। তিন ম্যাচে ১০২ রান করে হন সিরিজ সেরা। দ্বিতীয় ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে ইংল্যান্ড দুই উইকেট হারানোর পর ৫৩ বলে ৬৩ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠেও তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ফর্ম ধরে রাখেন ৩০ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। সিরিজের সর্বোচ্চ ১১৩ রান করেন তিনি, এর মধ্যে প্রথম ম্যাচে ৯৭ রানের ইনিংস খেলেছিলেন।
বর্ষসেরা নির্বাচিত হয়ে বিউমন্ট বললেন, কয়েক বছরের কঠোর পরিশ্রমেই আজকের অবস্থানে আসতে পেরেছেন তিনি।
“আইসিসি নারী টি-টোয়েন্টি বর্ষসেরা ক্রিকেটারের পুরস্কার জয় অনেক বড় এক পাওয়া। গত কয়েক বছরে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নিয়ে আমি অবিশ্বাস্য রকমের কঠিন পরিশ্রম করেছি। আমার টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে অনেক ওঠানামা ছিল এবং আমি হয়তো আমার টি-টোয়েন্টি সামর্থ্য জানতাম না। তাই এই পুরস্কার আমার আত্মবিশ্বাস বাড়াবে অনেক।”