জিম্বাবুয়েকে ধসিয়ে শ্রীলঙ্কার সিরিজ জয়

ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো করলেও পরে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ইনিংস খুব বড় করতে পারল না শ্রীলঙ্কা। তবে আড়াইশ ছাড়ানো পুঁজিই জিম্বাবুয়ের জন্য পাহাড়সম করে তুললেন বোলাররা। তাদের সৌজন্যে প্রতিপক্ষকে স্রেফ গুঁড়িয়ে দিয়ে সিরিজ ঘরে তুলল লঙ্কানরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Jan 2022, 03:22 PM
Updated : 21 Jan 2022, 04:39 PM

পাল্লেকেলেতে শুক্রবার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কার জয় ১৮৪ রানে। তিন ম্যাচের সিরিজটি স্বাগতিকরা জিতে নিল ২-১ ব্যবধানে।

পাথুম নিসানকা ও চারিথ আসালাঙ্কার ফিফটিতে ৯ উইকেটে ২৫৪ রান করে টস জিতে প্রথমে ব্যাটিং করা লঙ্কানরা। ৬ চারে ৫৫ রান করেন নিসানকা। প্রথম ম্যাচেও ফিফটি করা এই ওপেনার জেতেন সিরিজ সেরার পুরস্কার। মিডল অর্ডারে ৫ চারে ৫২ রানের কার্যকর ইনিংস খেলে আসালাঙ্কা হন ম্যাচ সেরা।

জবাব দিতে নামা জিম্বাবুয়েকে মাথা তুলতেই দেননি জেফরি ভ্যান্ডারসে, দুশমন্থ চামিরা, রমেশ মেন্ডিসরা। দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রতিপক্ষকে ধসিয়ে দেন স্রেফ ৭০ রানে, তখনও বাকি ২৫.২ ওভার।

ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে মাত্র ১০ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন ভ্যান্ডারসে। এই লেগ স্পিনারের আগের সেরা ৫০ রানে তিনটি। দুটি করে শিকার চামিরা ও রমেশের।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে আগের ওয়ানডে সিরিজে হেরেছিল শ্রীলঙ্কা। ২০১৭ সালের ওই হারের পর এবার জয়ের মুখ দেখল তারা।

সাবধানী ব্যাটিংয়ে শ্রীলঙ্কাকে ভালো শুরু এনে দেন নিসানকা ও মেন্ডিস। প্রথম ১০ ওভারে স্বাগতিকরা পায় ৪৩ রান। জমে যাওয়া ৮০ রানের এই জুটি ভাঙেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। বাঁহাতি এই স্পিনারের কিছুটা ঝুলিয়ে দেওয়া বল ছক্কায় ওড়ানোর চেষ্টায় লং-অফ বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন মেন্ডিস। ৪ চারে ৩৬ করেন তিনি।

নিসানকা ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি স্পর্শ করেন ৫৯ বলে। এরপর রানআউটে কাটা পড়ে তার ইনিংস। রায়ান বার্লের লেগ স্পিনে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কামিন্দু মেন্ডিস।

দিনেশ চান্দিমালকে নিয়ে আরেকটি পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি গড়ার পথে ছিলেন আসালাঙ্কা। কিন্তু শন উইলিয়ামসকে সুইপ করে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন চান্দিমাল। রিভিউ নিয়ে প্রতিপক্ষের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে ৪২ রানের জুটি ভাঙে জিম্বাবুয়ে।

আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান দাসুন শানাকা এদিন খেলতে পারেননি বড় ইনিংস। দারুণ ব্যাটিংয়ে দ্রুত রান তুলে ৫২ বলে পঞ্চাশে পা রাখেন আসালাঙ্কা। এর পরপরই তাকে ফিরিয়ে জিম্বাবুয়ের হয়ে ওয়ানডেতে দ্রুততম ১০০ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়েন টেন্ডাই চাতারা। ৭৬ ম্যাচে এই কীর্তি গড়েন ডানহাতি পেসার।

শেষ দিকে চামিকা করুনারত্নে ও রমেশের ব্যাটে আড়াইশ পার করে শ্রীলঙ্কা। সপ্তম উইকেটে ৪২ বলে ৪৮ রানের জুটি গড়েন দুইজন। চামিকা ৩০ রান করে হন রান আউট, ২৬ রানে ব্লেসিং মুজারাবানির বলে বোল্ড হন রমেশ।

পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেটে দ্বিতীয় ইনিংসে স্পিনাররা পেয়েছেন সহায়তা। তবে শ্রীলঙ্কাকে প্রথমে সাফল্য এনে দেন চামিরা। তৃতীয় ওভারে টানা দুই বলে এই পেসার ফিরিয়ে দেন রেজিস চাকাভা ও ক্রেইগ আরভিনকে।

দুইজনেই সিরিজ জুড়ে ব্যাট হাতে ছিলেন দারুণ ছন্দে। দ্বিতীয় ম্যাচে দলের জয়ে ৯১ রান করা জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক আরভিন এবার কট বিহাইন্ড হন প্রথম বলেই। চাকাভা ধরা পড়েন প্রথম স্লিপে।

এরপর লঙ্কান স্পিনারদের ছোবলে কেবল আসা-যাওয়ার মধ্যে ছিলেন সফরকারী ব্যাটসম্যানরা। দলটির হয়ে দুই অঙ্কে যেতে পারেন কেবল দুইজন, সর্বোচ্চ ১৯ রান ওপেনার টাকুদজোয়ানাশে কাইটানোর।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা: ৫০ ওভারে ২৫৪/৯ (নিসানকা ৫৫, মেন্ডিস ৩৬, কামিন্দু ১১, চান্দিমাল ১৭, আসালাঙ্কা ৫২, শানাকা ১৫, করুনারত্নে ৩০, রমেশ ২৬, চামিরা ১, ভ্যান্ডারসে ৩*, থিকশানা ১*; চাতারা ৭-০-৩৫-১, মুজারাবানি ১০-০-৬৩-১, এনগারাভা ৯-১-৪৬-২, মাসাকাদজা ১০-০-৪২-১, বার্ল ৬-০-২৬-১, রাজা ৬-০-৩৩-০, উইলিয়ামস ২-০-৬-১)

জিম্বাবুয়ে: ২৪.৪ ওভারে ৭০ (কাইটানো ১৯, চাকাভা ১, আরভিন ০, উইলিয়ামস ৬, শুম্বা ৯, রাজা ১, বার্ল ১৫, মাসাকাদজা ১, মুজারাবানি ২, চাতারা ৮*, এনগারাভা ০; চামিরা ৫-১-২০-২, থিকশানা ৬-১-১০-১, ভ্যান্ডারসে ৭.৪-২-১০-৪, চামিকা ২-০-৪-১, রমেশ ৪-০-২৬-২)

ফল: শ্রীলঙ্কা ১৮৪ রানে জয়ী

সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছে লঙ্কানরা

ম্যান অব দা ম্যাচ: চারিথ আসালাঙ্কা

ম্যান অব দা সিরিজ: পাথুম নিসানকা