লাহোরে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ ঘোষণা দেন দেড় যুগের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি টানার। বিদায়বেলায় তার ঘটনাবহুল ক্যারিয়ারের নানা অর্জন, প্রাপ্তি ও তৃপ্তির কথা যেমন উঠে আসে অনেক, তেমনি তার কাছে জানতে চাওয়া হয় হতাশার অধ্যায়গুলি নিয়েও। হাফিজ তখন ফিরে যান ৬ বছর আগের এক ঘটনায়।
২০১৫ সালের ডিসেম্বরে নিউ জিল্যান্ড সফরের আগে পাকিস্তানের ট্রেনিং ক্যাম্পের ঘটনা সেটি। স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িয়ে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটানো মোহাম্মদ আমিরকে ডাকা হয় ওই ক্যাম্পে। দুর্নীতিতে জড়িত ক্রিকেটারকে আবার সুযোগ দেওয়ার প্রতিবাদে তখন ক্যাম্প থেকে নিজেদের সরিয়ে নেন হাফিজ ও সেই সময়ের ওয়ানডে অধিনায়ক আজহার আলি।
পাকিস্তানে তো বটেই, বিশ্ব ক্রিকেটেই তুমুল আলোচনার জন্ম দেয় সেটি। এরপর অবশ্য পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) বাধ্য করে দুজনকেই ক্যাম্পে যোগ দিতে। পরে তারা আমিরের সঙ্গে খেলেনও।
কিন্তু ওই ঘটনায় হৃদয়ের ক্ষত যে আজও তরতাজা, বিদায়বেলায় তা তুলে ধরলেন হাফিজ।
“আমার কাছে, ক্যারিয়ারের সবচেয়ে হতাশার ও কষ্টের ব্যাপার ছিল, যখন আমি ও আজহার আলি এই ইস্যুতে নীতিগত অবস্থান নিয়েছিলাম, কিন্তু সেই সময়ের বোর্ড চেয়ারম্যান আমাদেরকে বলেছিলেন, আমরা খেলতে না চাইলে সমস্যা নেই, কিন্তু সংশ্লিষ্ট ওই খেলোয়াড় খেলবে।”
শুধু জাতীয় দলেই নয়, ২০১৫-১৬ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগেও চিটাগং ভাইকিংসের মোটা অঙ্কের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন হাফিজ কেবলমাত্র ওই দলে আমির ছিলেন বলে।
ক্যাম্পে না যাওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর সেই সময়ের পিসিবি প্রধান শাহরিয়ার খান দেখা করেন হাফিজ ও আজহারের সঙ্গে। পরে সিদ্ধান্ত বদলে দুই ক্রিকেটারের ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার কথা জানান শাহরিয়ার। সেই সময় তিনি বলেছিলেন, হাফিজ ও আজহারের অবস্থানের প্রতি সম্মান থাকলেও তাদের কিছু দাবি মানার মতো নয়।
তখন বোর্ড প্রধানের কথা মানতে বাধ্য হলেও মন থেকে ফিক্সারদের যে এখনও মানতে পারেন না, বিদায়বেলায়ও তা স্পষ্ট করে বললেন হাফিজ।
“আমি ফিক্সারদের বিরুদ্ধে ছিলাম, এখনও আছি। কখনোই চাইনি, ফিক্সারদের দ্বিতীয় কোনো সুযোগ দেওয়া হোক। সেই সময়ের পিসিবি চেয়ারম্যান আমাকে বলেছিলেন আপন চরকায় তেল দিতে এবং যা কিছুই হোক না কেন, ওই ফিক্সারদের দ্বিতীয় সুযোগ দেওয়া হবে। তার কথা শোনার পর আমি ভেঙে পড়েছিলাম।”