দুই বছর একেবারে কম সময় নয়। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের জন্য মহামারীকালেও এই সময়ে ১১টি টেস্ট খেলতে পেরেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে জয় কেবল দুটি, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। আর প্রাপ্তি বলতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি ড্র।
মুমিনুলে নেতৃত্বের অভিষেকের সিরিজে ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচেই ইনিংস ব্যবধানে হার। পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন হারের দুটি ইনিংস ব্যবধানে। খর্ব শক্তির ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দেশের মাটিতে হোয়াইটওয়াশড। আনকোরা এক স্পিনারের বলে গুঁড়িয়ে গিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এক ম্যাচে হারে ২০৯ রানে।
সব মিলিয়ে দলীয় অর্জন খুব একটা নেই। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসরে অর্জন বলতে ছিল, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে একটি ড্র। চলতি চক্র তো ভীষণ কঠিন। দেশের মাটিতে উপমহাদেশের তিন দল ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলতে হবে। এর মধ্যে প্রথম সিরিজে পাকিস্তানের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশড হলো মুমিনুলের দল। দেশের বাইরে খেলতে হবে বাংলাদেশের সবচেয়ে কঠিন দুই গন্তব্য নিউ জিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকায়। অন্য সিরিজ ক্যারিবিয়ানে।
বাংলাদেশ দলের পক্ষ থেকে এবারের চক্র ছয় কিংবা সাতে থেকে শেষ করার আশার কথা বলা হয়েছিল শুরুতে। সেটা কতটা বাস্তব সম্মত বলা কঠিন।
নেতৃত্বের শুরু থেকে সেভাবে সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালকে পাচ্ছেন না মুমিনুল। সাকিব এক বছর নিষিদ্ধ হওয়ায় নেতৃত্ব পেয়েছিলেন তিনি। মুমিনুলের অধিনায়কত্বে বাঁহাতি স্পিনিং অলরাউন্ডার সাকিব খেলেছেন কেবল তিনটি টেস্ট। দেশসেরা ওপেনার তামিম খেলেছেন ৬ টেস্ট।
তামিম থাকতেই অন্য প্রান্তে তার সঙ্গী পেতে ভুগছিল বাংলাদেশ। সেখানে তার অনুপস্থিতিতে দুই ওপেনার খুঁজে নিতে হয়েছে। মাঝেমধ্যে ঝলক দেখিয়েছেন সাদমান ইসলাম। এর বাইরে মেলেনি আলোর তেমন রেখা।
১০ ম্যাচে ৩৯ উইকেট নিয়ে বোলারদের মধ্যে সফলতম তাইজুল ইসলাম। ৯ ম্যাচে ২৬ উইকেট নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ২০ উইকেট নেই আর কারও।
এই সময়ে দেশের বাইরে বেশ কিছু ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। সুযোগ পেয়েছে সবুজ ঘাসে ছাওয়া উইকেটে বোলিংয়ের। তবুও পেস বোলিং ইউনিট পারেনি খুব একটা ছাপ ফেলতে।
বিছিন্ন কিছু প্রাপ্তি থাকলেও হতাশার উপকরণই বেশি। নিউ জিল্যান্ডে পরের সিরিজে একই সঙ্গে থাকছেন না সাকিব ও তামিম। দেশের মাটিতে সদ্য হোয়াইটওয়াশড হওয়া একটি দল নিয়ে বুধবার রাতেই রওনা হবে বাংলাদেশ দল। সামনে খুব কঠিন কন্ডিশনে খেলার চ্যালেঞ্জ। সব মিলিয়ে কি নেতৃত্বের ভার চেপে বসেছে মুমিনুলের কাঁধে?
“দলকে নেতৃত্ব দেওয়া কঠিন কি না? না, না, কঠিন না। আমার কাছে মনে হয়, একটু চ্যালেঞ্জিং। আমি চ্যালেঞ্জটা নিয়েছি বলেই এই চেয়ারে বসে আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে পারছি। আমি মনে করি, এটা এক ধরনের প্রিভিলেজ।”
“দল যখন এরকম একটা অবস্থার মধ্য দিয়ে যায়, তখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো আপনি কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখান আর কীভাবে আপনি দেখেন। এটা চ্যালেঞ্জিং এবং সামনেও আরও চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। আমি এটাকে ইতিবাচক হিসেবে নিচ্ছি। আর চাপ পেয়ে বসেনি। ভালো, ভালো জিনিসগুলো নিয়ে সামনে এগোতে হবে।”