ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে এজাজ পূর্ণ করেন এই মাইলফলক। ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্পিনার নিজের জন্মশহর মুম্বাইয়েই ৪৭.৫ ওভার বোলিংয়ে ১১৯ রানে নেন ১০ উইকেট।
১৪৪ বছরের টেস্ট ইতিহাসের তৃতীয় সেরা বোলিং এটি, নিউ জিল্যান্ডের সর্বকালের সেরা বোলিং।
এই ম্যাচের আগে মাত্র ১০টি টেস্ট খেলেছেন এজাজ। ইনিংসে ৫ উইকেট ছিল দুটি, কোনোবারই ৫টির বেশি পাননি। দুই ইনিংস মিলিয়েও ৭ উইকেটের বেশি তার ছিল না। এমনকি ৬৮ ম্যাচের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারেও কখনও ইনিংসে ৬ উইকেটের বেশি পাননি। সেই এজাজের নাম এবার চিরস্থায়ী হয়ে গেল ক্রিকেট ইতিহাসে।
এবারের আগে একাই কোনো বোলারের ১০ উইকেট টেস্ট ক্রিকেট দেখেছিল ১৯৯৯ সালে। সেটিও ছিল ভারতে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে গুঁড়িয়ে ৭৪ রানে ১০ উইকেট নিয়েছিলেন ভারতীয় লেগ স্পিনার কুম্বলে। এবারও ভারতের মাঠেই হলো সেই কীর্তির পুনরাবৃত্তি। তবে এই দফায় ভারত ভুক্তভোগি।
১০ উইকেটের চোখধাঁধানো কীর্তি টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম দেখিয়েছিলেন জিম লেকার। ১৯৫৬ অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ৫৩ রানে ১০ উইকেট নিয়েছিলেন ইংলিশ অফ স্পিনার।
বাঁহাতি বোলারদের মধ্যে টেস্টে সেরা বোলিং এখন এজাজেরই। আগের রেকর্ডটি ছিল রঙ্গনা হেরাথের, ২০১৪ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১২৭ রানে ৯ উইকেট নিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কান বাঁহাতি স্পিনার।
নিউ জিল্যান্ডের হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে সেরা বোলিংয়ের আগের রেকর্ড ছিল স্যার রিচার্ড হ্যাডলির। ১৯৮৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্রিজবেনে ৫২ রানে ৯ উইকেট নেন কিংবদন্তি এই ক্রিকেটার। ইনিংসে ৭ উইকেটের বেশি নেই আর কোনো কিউই বোলারের।
ভারতের বিপক্ষে সেরা বোলিংয়ের ৫০ বছর পুরনো রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছেন এজাজ। ১৯৭১ সালে ত্রিনিদাদে ক্যারিবিয়ান অফ স্পিন জ্যাক নোরিগার ৯৫ রানে ৯ উইকেট ছিল আগের সেরা।
এজাজের রেকর্ড যাত্রা শুরু হয়েছিল ম্যাচের প্রথম দিনে। ৮০ রানের উদ্বোধনী জুটির পর দ্রুতই ৩ উইকেট নিয়ে নেন তিনি। শুবমান গিলকে আউট করে শুরু করেন শিকার। নিজের পরের ওভারে বিদায় করেন চেতেশ্বর পুজারা ও বিরাট কোহলিকে। দুজনই আউট হন শূন্য রানে।
এরপর ৮০ রানের আরেকটি জুটি শেষ হয় এজাজের বলে শ্রেয়াস আইয়ার আউট হলে। প্রথম দিনে ওই ৪ উইকেট নিয়েই শেষ করে নিউ জিল্যান্ড।
দ্বিতীয় দিনে এক ওভারে ধরা দেয় ঋদ্ধিমান সাহা ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের উইকেট। এরপর মূল বাধা হয়ে থাকা মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে ১৫০ রানে ফিরিয়ে যখন ধরেন সপ্তম শিকার, উঁকি দিতে থাকে দশে দশ নেওয়ার সম্ভাবনা।
পরে দুই ওভারের মধ্যে শেষ তিন উইকেটও তিনি নিয়ে নেন। আকসার প্যাটেলকে তিনি থামান ৫২ রানে। এরপর এক ওভারে জয়ন্ত যাদব ও মোহাম্মদ সিরাজকে আউট করে ভেসে যান যান উল্লাসে।