সাদমানের ব্যাটে লড়ছে মেট্রো

প্রথম ওভারেই নেই একজন। সেই ধাক্কা কিছুটা কাটিয়ে ওঠার পর দ্রুত আরও তিন উইকেটের পতন। প্রতিপক্ষের বিশাল স্কোরের জবাবে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়া ঢাকা মেট্রোকে একাই টানছেন সাদমান ইসলাম। এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশের টেস্ট ওপেনার।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Nov 2021, 01:44 PM
Updated : 1 Nov 2021, 03:23 PM

বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে জাতীয় লিগের দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে সোমবার ৯ উইকেটে ৪৪৫ রান নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে চট্টগ্রাম বিভাগ। এরপর ৪ উইকেটে ১১৯ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে ঢাকা মেট্রো।

এখনও ৩২৬ রানে পিছিয়ে থাকা দলটিকে এগিয়ে নিচ্ছেন সাদমান। ৬৮ রানে অপরাজিত আছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

মুমিনুল হক ও মাহমুদুল হাসানের সেঞ্চুরিতে ৪ উইকেটে ৩১৬ রান নিয়ে প্রথম দিন শেষ করা চট্টগ্রাম আর ১২৯ রান যোগ হতেই ইনিংস ঘোষণা করে।

আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান নাঈম হাসান ও ইয়াসির আলি চৌধুরির জুটি বেশিদূর এগোয়নি। দিনের দশম ওভারে কট বিহাইন্ড হয়ে যান নাঈম। কয়েক ওভার পর ইয়াসির শিকার শরিফুল্লাহর। এই স্পিনার পরে ফিরিয়ে দেন ইরফান শুক্কুরকেও।

চট্টগ্রামের রান চারশ পার হয় ৩৯ রান করা মেহেদি হাসান রানার ব্যাটে। শেষ দিকে দুটি করে ছক্কা-চারে ২১ বলে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন মেহেদি হাসান।

জবাবে প্রথম ওভারেই রাকিন আহমেদকে হারায় মেট্রো। রানার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান তিনি রানের খাতা খোলার আগে। এরপর দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন সাদমান ও শামসুর রহমান। তাদের দুইজনের ৭১ রানে জুটিতে ভিত কিছুটা মজবুত হয় মেট্রোর।

ইফরানের বলে ৩২ রান করা শামসুর ফিরলে আবারও বিপদে পড়ে দলটি। হাল ধরতে পারেননি মার্শাল আইয়ুব। রানার বলে তিনি ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কেবল ৯ রান করেই।

মেট্রো আরেকটি ধাক্কা খায় কয়েক ওভার পরেই। পেসার রানার বল মাথায় আঘাত করার পরও কিছুক্ষণ ব্যাটিং করে মাঠ ছাড়েন আল আমিন জুনিয়র। স্ক্যান করাতে তাকে নেওয়া হয় হাসপাতালে।

এরপর হাসান মুরাদ ফিরিয়ে দেন জাহিদুজ্জামানকে। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে এক প্রান্ত আগলে রাখেন সাদমান। ইনিংস শুরু করতে নেমে ৮১ বলে তুলে নেন ফিফটি।

৬৮ রান নিয়ে মাঠ ছাড়েন তিনি অপরাজিত থেকে। তার সঙ্গে উইকেটে আছেন রাকিবুল হাসান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৩১৬/৪) ১৩৪.১ ওভারে ৪৪৫/৯ ডি. (নাঈম ১৮, ইয়াসির ২৪, ইরফান ১৮, মেহেদি রানা ৩৯, ইফরান ৬, মুরাদ ৫*, মেহেদি ২৫*; শহিদুল ২৫-৪-৬৬-৩, আবু হায়দার ২৬.১-৭-৮২-৩, শরিফুল্লাহ ২৩-১-১০৭-২, আল আমিন জুনি. ১২-২-৩৭-০, রকিবুল ৩৯-৯-১০৩-১, আমিনুল ৯-০-৪৬-০)।

ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ৩৫ ওভারে ১১৯/৪ (সাদমান ৬৮*, রাকিন ০, শামসুর ৩২, আইয়ুব ৯, আল আমিন জুনি. ১ আহত অবসর, জাহিদুজ্জামান ৪, রকিবুল ১*; মেহেদি রানা ১০-১-২৫-২, ইরফান ৭-০-২৮-১, মেহেদি ৪-০-২১-০, মুরাদ ৭-১-২১-১, নাঈম ৭-১-২৪-০)।

শান্ত ৬৮, হৃদয়ের ব্যাটে এগোচ্ছে রাজশাহী

আগের রাউন্ডে সেঞ্চুরি করা নাজমুল হোসেন শান্ত এবারও বড় ইনিংসের সম্ভাবনা জাগান। পঞ্চাশ পেরিয়ে যদিও বেশিদূর এগোতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

কক্সবাজার একাডেমি মাঠে জাতীয় লিগের দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে সোমবার বরিশাল বিভাগকে ৪০৪ রানে থামিয়ে দিয়ে ব্যাটিং করছে রাজশাহী বিভাগ। ৪ উইকেটে ২২৭ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে তারা। আর ১৭৭ রানে পিছিয়ে দলটি।

৭ উইকেটে ৩৬০ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিল বরিশাল। ১৩ ওভারের মধ্যেই তিন উইকেট তুলে নিয়ে তাদের চারশ পার হতেই থামিয়ে দেয় রাজশাহী।

ইনিংসে দলটির হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন তাইজুল ইসলাম। দুটি করে প্রাপ্তি আসাদুজ্জামান পায়েল, নাহিদ রানা ও সানজামুল ইসলামের।

ব্যাটিংয়ে নেমে রাজশাহীকে ভালো শুরু এনে দেন তানজিদ হাসান। আরেক ওপেনার মিজানুর রহমান অবশ্য তেমন কিছু করতে পারেননি। ব্যক্তিগত ১৬ রানে মনির হোসেনের বলে শর্ট কাভারে ধরা পড়েন তিনি।

দারুণ খেলতে থাকা তানজিদকে ফিফটির আগে থামিয়ে দেন সোহাগ গাজী। এক ছক্কা ও ৫ চারে ৫৭ বলে ৪২ রান করেন তিনি।

অনেক সময় উইকেটে কাটিয়েও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি জুনায়েদ সিদ্দিক। তবে তার ও শান্তর জুটিতে ৫৯ রান পায় রাজশাহী। এই জুটিতেই ৮৫ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন শান্ত।

জুনায়েদের বিদায়ের পর তিনিও টিকেননি বেশিক্ষণ। ৬৮ রান করে এলবিডব্লিউ হন মনিরের বলে। ১১৪ বলের ইনিংসে তার ৭টি চার।

ফরহাদ হোসেনকে নিয়ে দিনের বাকি সময় কাটিয়ে দেন হৃদয়। ২৯ ওভার ব্যাটিং করে দুইজনের অবিচ্ছিন্ন জুটি ৭৩ রানের। ৮৮ বলে ৫০ রান করে খেলছেন হৃদয়। ২৬ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন ফরহাদ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বরিশাল ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৩৬০/৭) ১০২.৩ ওভারে ৪০৪ (শামসুল ৮৪, মনির ১৩, কামরুল ১, রুয়েল ২*; আসাদুজ্জামান ১৮-১-৯৬-২, নাহিদ ১৩-২-৪৭-২, তাইজুল ৩৭-৮-১২৫-৪, সানজামুল ৩০.৩-৭-১২০-২, হৃদয় ৪-১-১১-০)।

রাজশাহী ১ম ইনিংস: ৭৫ ওভারে ২২৭/৪ (মিজানুর ১৬, তানজিদ ৪২, শান্ত ৬৮, জুনায়েদ ১৫, হৃদয় ৫০*, ফরহাদ ২৬*; রুয়েল ১২-১-৩৮-০, কামরুল ১২-১-২৮-০, মনির ১৮-৩-৫২-২, সোহাগ ১৪-১-৪৩-১, আশরাফুল ১৩-০-৩৪-১, ফজলে মাহমুদ ৪-০-১৩-০, মোসাদ্দেক ২-০-৯-০)।