ফিফটির পর শান্তর দারুণ সেঞ্চুরি

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষ হতেই সফরে আসবে পাকিস্তান। ঠিক এক মাস পর শুরু হতে যাওয়া টেস্ট সিরিজের আগে জাতীয় লিগে ব্যাটিং প্রস্তুতি বেশ ভালোই হচ্ছে নাজমুল হোসেন শান্তর। প্রথম ইনিংসে আউট হয়েছিলেন ফিফটি পেরিয়ে। এবার আর ভুল করলেন না তিনি। তুলে নিলেন দারুণ এক সেঞ্চুরি।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Oct 2021, 02:47 PM
Updated : 27 Oct 2021, 02:47 PM

তার উজ্জ্বল পারফরম্যান্সের ম্যাচে অবশ্য ছিল না তেমন কোনো উত্তেজনা। অনুমিতভাবেই ড্র হয়েছে রাজশাহী বিভাগ ও ঢাকা মেট্রোর ম্যাচ। দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচটির শেষ দিনে ৯৯ থেকে জাহিদুজ্জামানকে বাউন্ডারি মেরে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন শান্ত। ম্যাচের শেষও সেখানেই।

প্রথম ইনিংসে ২৫২ রানে অলআউট হওয়া রাজশাহী দ্বিতীয় ইনিংসে করে ৪ উইকেটে ১৮৪ রান। এর ১০৩ রানই শান্তর। ১৯৯ বলে ৮ চার ও একটি ছক্কায় গড়া বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের ইনিংসটি। বাংলাদেশ টেস্ট দলের নিয়মিত এই সদস্য প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ৬৭।

রাজশাহীর হয়ে শেষ দিন ফিফটি করেন জুনায়েদ সিদ্দিক। একমাত্র ইনিংসে ঢাকা মেট্রো করে ৩৩৯ রান।

কক্সবাজারের শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে তৃতীয় দিনের বেশিরভাগ সময় ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। ১ উইকেটে ২৪ রান নিয়ে বুধবার শেষ দিনে ব্যাটিং শুরু করে রাজশাহী।

আগের দিন ১২ রানে অপরাজিত থাকা জহুরুল ইসলাম যোগ করতে পারেন কেবল ৫। জুনায়েদকে সঙ্গী করে এগিয়ে যান ৮ রান নিয়ে দিন শুরু করা শান্ত, ১১৫ বলে তিনি পূর্ণ করেন ফিফটি।

চা বিরতির পর জুনায়েদ ফিফটি তুলে নেন ১২৩ বলে। এরপরই তাকে বোল্ড করে ১২৪ রানের বড় জুটি ভাঙেন আবু হায়দার রনি। ৩ চারে সাজানো জুনায়েদের ইনিংসটি।

দ্রুতই বিদায় নেন তৌহিদ হৃদয়। এরপর ফরহাদ হোসেনকে সঙ্গী করে শান্তর সেঞ্চুরি।

প্রথম রাউন্ডে দুই ইনিংসে তিনি করেছিলেন ৯ ও ৪ রান। এবার ফিফটির পর সেঞ্চুরি, পাকিস্তান সিরিজের আগে যা নিশ্চিতভাবে আত্মবিশ্বাস বাড়াবে তার।

প্রথম ইনিংসে হ্যাটট্রিকসহ ৫ উইকেট, ব্যাটিংয়ে একমাত্র ইনিংসে ফিফটি ও দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেট; অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ম্যাচ সেরা হয়েছেন অবশ্য শরিফুল্লাহ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রাজশাহী ১ম ইনিংস: ২৫২

ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: ৩৩৯

রাজশাহী ২য় ইনিংস: ৭০.২ ওভারে ১৮৪/৪ ওভারে (আগের দিন ২৪/১) (জহুরুল ১৭, শান্ত ১০৩*, জুনায়েদ ৫০, হৃদয় ০, ফরহাদ ৩*; আবু হায়দার ১১-৪-২৪-১, শরিফুল্লাহ ২৪-৬-৪৬-২, শহিদুল ১০-২-১৩-০, আমিনুল ১১-৩-২১-১, রকিবুল ৭-০-২৯-০, জাহিদুজ্জমান ০.২-৫-০)

ফল: ড্র

ম্যান অব দা ম্যাচ: শরিফুল্লাহ।

শুভাগতর ঝড়ো ফিফটি

প্রথম স্তরে ঢাকা বিভাগ ও রংপুর বিভাগের ম্যাচও অনুমিতভাবে ড্র হয়েছে। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা ঢাকা অধিনায়ক সাইফ হাসান দ্বিতীয় ইনিংসে তেমন কিছুই করতে পারেননি। আউট হন দুই অঙ্ক হওয়ার আগেই। ঝড়ো ফিফটি উপহার দেন শুভাগত হোম।

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শেষ দিনে ৯ উইকেটে ২০৩ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে ঢাকা। ২৭৭ রানের লক্ষ্যে রংপুর ৩ উইকেটে ৭৫ রান তোলার পর ড্র মেনে নেয় দুই দল।

বিনা উইকেটে ৩৮ রান নিয়ে এদিন ব্যাটিং শুরু করে ঢাকা। আগের দিন ২১ রানে অপরাজিত থাকা রনি তালুকদার থামেন ফিফটির কাছে গিয়ে (৯৪ বলে ৪৩)। তাকে এলবিডব্লিউ করে ৭৪ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন সোহরাওয়ার্দী শুভ।

পরের ওভারে প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান আব্দুল মজিদকে (১০৫ বলে ২৭) ফিরিয়ে দেন আরিফুল হক। এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার পরে এলবিডব্লিউ করেন সাইফকেও। প্রথম ইনিংসে ১০৭ রান করা এই ব্যাটসম্যান এবার ২০ বলে করেন ৬।

চতুর্থ উইকেটে ৫১ রানের জুটি গড়েন রকিবুল হাসান ও তাইবুর রহমান। অনেকটা সময় উইকেটে কাটিয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি কেউই। রকিবুল ৭১ বলে ৪০, তাইবুর ৬৫ বলে করেন ২৮।

একটু পর মুকিদুল ইসলাম এক ওভারে চার বলের মধ্যে ফিরিয়ে দেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, নাদিফ চৌধুরি ও সুমন খানকে। পরের দুজনকে পরপর দুই বলে ফিরিয়ে তিনি হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগালেও তা হয়নি।

এর মাঝেই ঝড় তুলে শুভাগত ফিফটি করেন ২৮ বলে। ঢাকা ইনিংস ঘোষণার আগে ২৯ বলে ৩ ছক্কা ও ৪টি চারে ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।

রান তাড়ায় ৩৯ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন মাইশুকুর রহমান ও জাহিদ জাবেদ। মাইশুকুরকে (৪৯ বলে ২২) বোল্ড করেন নাজমুল ইসলাম অপু।

দিনের শেষ দিকে দ্রুত মাহমুদুল হাসান ও জাহিদকে হারায় রংপুর। এই দুজনও নাজমুলের শিকার। আকবর আলী ৬ ও নাসির হোসেন ১২ রানে অপরাজিত থাকেন।

প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেটের পর দ্বিতীয় ইনিংসে নাজমুলের প্রাপ্তি তিনটি। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা মজিদ জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ঢাকা বিভাগ ১ম ইনিংস: ৩৯৪

রংপুর বিভাগ ১ম ইনিংস: ৩২১

ঢাকা বিভাগ ২য় ইনিংস: ৬৭ ওভারে ২০৩/৯ ডিক্লে. (আগের দিন ৩৮/০) (মজিদ ২৭, রনি ৪৩, সাইফ ৬, রকিবুল ৪০, তাইবুর ২৮, শুভাগত ৫১*, মাহিদুল ১, নাদিফ ০, সুমন ০, নাজমুল ১, এনামুল ০*; মুকিদুল ১৬-২-৩৮-৩, নাসির ১১-২-১৫-০, রবিউল ১৬-২-৫৪-১, সোহরাওয়ার্দী ১১-০-৪২-১, মাহমুদুল ৬-০-১৪-১, আরিফুল ৭-০-৩৫-২)

রংপুর বিভাগ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ২৭৭) ৩০ ওভারে ৭৫/৩ (মাইশুকুর ২২, জাহিদ ২৬, মাহমুদুল ৭, আকবর ৬*, নাসির ১২*; সুমন ২-০-৬-০, এনামুল ৬-১-১১-০, নাজমুল ১৩-৫-২৯-৩, সাইফ ৮-২-১৮-০, তাইবুর ১-০-৯-০)

ফল: ড্র

ম্যান অব দা ম্যাচ: আব্দুল মজিদ।