সময়টা ২০১৯ অ্যাশেজ। প্রথম টেস্টে এজবাস্টনে ৪ ওভার বোলিং করেই কাফ মাসলের চোটে ছিটকে যান অ্যান্ডারসন। পরে খেলতে পারেননি ওই সিরিজের আর কোনো টেস্টে। নিজের সঙ্গে তখন তার লড়াই হয়েছে তুমুল।
সেই লড়াইয়ে ক্ষান্তি দেওয়ার কথাই তিনি ভাবছিলেন। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ান স্ত্রী। এবার ভারতের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ শুরুর আগে অ্যান্ডারসন ফিরে তাকালেন সেই সময়টায়।
“আমার এখনও খেলে যাওয়ার বড় কারণ আমার স্ত্রী। সে সবসময়ই খুব সমর্থন দেয়।”
“অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে কাফ মাসলে টান লাগে যখন, দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার সম্ভবত টান লাগল সেবার। তখন সত্যিই মনে হচ্ছিল, আবারও কি পুনবার্সনের মধ্য দিয়ে সত্যিই যাব? সে (স্ত্রী) তখন আমাদেরকে ছুটি কাটাতে নিয়ে যায় এবং আমাকে বলে যেন সহজ সিদ্ধান্ত না নেই। সে আমাকে বলে চালিয়ে যেতে।”
এরপর অ্যান্ডারসন ঠিকই চালিয়ে যান। পরের সময়টায় ২৩ গড়ে নেন আরও ৪২ উইকেট। ৫ উইকেটের দেখা পান দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে কেপ টাউনে, পাকিস্তানের বিপক্ষে সাউথ্যাম্পটনে এবং শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গলে। টেস্ট ইতিহাসের প্রথম পেসার হিসেবে পা রাখেন ৬০০ উইকেটের চূড়ায়।
একজন পেসার হয়ে এই বয়সেও দুর্দান্ত পারফর্ম করে অ্যান্ডারসন হয়ে উঠেছেন আধুনিক ক্রিকেটের বিস্ময়। কঠিন কাজ সহজ করে তোলার কৃতিত্ব তিনি দিলেন নিজের কাছের মানুষদের।
“অবশ্যই কঠিন কিছু সময় ছিল। পেশাদার ক্রীড়ায় সবাইকেই এসবের মধ্য দিয়ে যেতে হয়, ফর্মহীনতা আসে, আত্মবিশ্বাস কমে যায়, চোট থাবা দেয়। অনেক কিছুর মোকাবেলা করতে হয়। আমার জন্য ব্যাপারটি হলো, খুব ভালো সাপোর্ট নেটওয়ার্ক আমার আছে। এমন পরিবার ও বন্ধু-বান্ধব আছে, যাদের ওপর নির্ভর করতে পারি।”
“আমার স্ত্রীকে সবসময় পাশে পাই। সে চায় যেন আমি খেলা চালিয়ে যাই। আমাকে প্রেরণা জোগায় আরও এগিয়ে যেতে।”
ভারতের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ শুরু হচ্ছে বুধবার। বছরের শেষ নাগাদ আছে অস্ট্রেলিয়ায় অ্যাশেজ। অনেকেই অ্যান্ডারসনের শেষ দেখছেন ওই অ্যাশেজ দিয়ে। তবে তিনি নিজে এখনও শেষের কথা ভাবছেনই না।
“অবশ্যই নয় (অবসর ভাবনা)… আমি যে কোনো সময়ের মতোই ভালো বোলিং করছি। শারীরিকভাবে দারুণ অবস্থায় আছি। আপাতত ভারতের বিপক্ষে এই সিরিজে তাকিয়ে আছি।”
“এই সিরিজ শেষ হলে আমরা অন্য কিছু ভেবে দেখব। ক্যারিয়ারজুড়ে এভাবেই এগিয়েছি আমি। এই মুহূর্তে আমি সবসময়ের মতোই দারুণ বোলিং করছি এবং এই সিরিজে খেলতে মুখিয়ে আছি।”