মারুফের ৬ রানের আক্ষেপ, জাকেরের ফিফটি

স্রেফ নিয়মরক্ষার ম্যাচ। তাতে হলো কত রেকর্ড। ধরা দিল কত অর্জন। এর মাঝেও মাত্র ৬ রানের জন্য ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে ফিরলেন মেহেদি মারুফ। তবে তার দল লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ আসর শেষ করল জয় দিয়েই।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2021, 09:04 AM
Updated : 23 June 2021, 09:11 AM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির রেলিগেশন লিগের শেষ ম্যাচে বুধবার ২৭ রানে জিতেছে নাঈম ইসলামের দল।

মারুফ ও জাকের আলির রেকর্ড গড়া উদ্বোধনী জুটির সৌজন্যে বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে ৩ উইকেটে ২০০ রান করে রূপগঞ্জ। চলতি আসরে এটাই সর্বোচ্চ। এই মাঠেই রেলিগেশন লিগের ম্যাচে পারটেক্সের বিপক্ষে ওল্ড ডিওএইচএসের ২ উইকেটে ১৯৯ আগের সর্বোচ্চ।

অবিচ্ছিন্ন নবম উইকেটে ইসহারুল ইসলাম ও জয়নুল ইসলামের বিশ্ব রেকর্ড গড়া ৭৩ রানের জুটির সৌজন্যে ৮ উইকেটে ১৭৩ রান করে পারটেক্স। সবার আগে অবনমন নিশ্চিত হওয়া দলটি টুর্নামেন্ট শেষ করল কোনো জয় ছাড়া। একমাত্র পয়েন্ট এসেছে বৃষ্টিতে ম্যাচ ভেসে যাওয়ায়।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে মারুফ ও জাকেরের ব্যাটে দারুণ শুরু পায় রূপগঞ্জ। প্রথম ওভারে জয়নুলকে চার মারেন মারুফ। তৃতীয় ওভারে এক ছক্কার সঙ্গে মারেন দুই চার। তাকে সঙ্গ দিয়ে যান জাকের। পাওয়ার প্লেতে রূপগঞ্জ তোলে ৫৭ রান।

এরপর রানের গতিতে একটু ভাটা পড়ে। নবম ওভারে শাহাদাত হোসেনকে দুই ওপেনার মারেন একটি করে ছক্কা। আবার গতি পায় রূপগঞ্জের ইনিংস।

নিহাদউজ্জামানকে চার-ছক্কা মারার পর ৪০ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেন মারুফ। খানিক পর ৩৮ বলে পঞ্চাশে পৌঁছান জাকের। সে সময় তার চেয়ে বেশ এগিয়ে ছিলেন মারুফ।

পরের দুই ওভারে একটি করে ছক্কা ও চারে তাকে প্রায় ধরে ফেলেন জাকের। সেই সঙ্গে হয় একটি রেকর্ড। বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যানের প্রথম দেড়শ রানের উদ্বোধনী জুটি।

অষ্টাদশ ওভারে জাকেরকে বোল্ড করে ১৬৯ রানের জুটি ভাঙেন নিহাদউজ্জামান। ৪৮ বলে পাঁচ চার ও চার ছক্কায় জাকের করেন ৭৬। টি-টোয়েন্টিতে তার আগের সেরা ছিল ৫২।

আগের সেরা ৭৫ ছাড়িয়ে সেঞ্চুরির পথে এগোতে থাকেন মারুফ। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে যখন স্ট্রাইক পান তার দরকার ছিল ৬ রান। শাহাদাতের বলে ক্যাচ দিয়ে ৯৪ রানেই বিদায় নেন তিনি। তার ৬৩ বলের ইসিংসে ছয় ছক্কার পাশে চার নয়টি।

বড় রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি পারটেক্সের। একটি করে ছক্কা ও চার মেরে সোহাগ গাজীর বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন হাসানুজ্জামান। সায়েম আলমকে দ্রুত ফেরানোর পর জনি তালুকদারকেও বিদায় করেন অফ স্পিনার সোহাগ।           

দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় থাকা রাজিবুল ইসলামকে থামান নাবিল সামাদ। নিহাদউজ্জামানকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন মুক্তার আলি। ১৫ ওভারে ১০০ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে বড় হারের শঙ্কায় পড়ে পারটেক্স।

বিশ্ব রেকর্ড গড়া ৭৩ রানের জুটিতে ব্যবধান কমান ইসহারুল ইসলাম ও জয়নুল ইসলাম। শেষ ৫ ওভারে তাণ্ডব চালিয়ে এই দুই জনে তোলেন ৭৩ রান।  

নবম উইকেটে আগের বিশ্বরেকর্ডটি ছিল কোরি অ্যান্ডারসন ও জশ ডেভি জুটির। ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে সারের বিপক্ষে সমারসেটের হয়ে তারা গড়েছিলেন ৬৯ রানের জুটি।

সাতে নামা ইসহারুল অপরাজিত থাকেন ২২ বলে ৩৮ রান করে। নয়ে নেমে পেসার জয়নুল খেলেন ৪ ছক্কায় ১৪ বলে ৩৭ রানের ইনিংস।

রূপগঞ্জের অফ স্পিনার সোহাগ ১৭ রানে নেন ৩ উইকেট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ: ২০ ওভারে ২০০/৩ (মারুফ ৯৪, জাকের ৭৬, শামসুল ০, সাব্বির ১৩*, মুক্তার ০*; জয়নুল ৩-০-৩৯-০, শাহাদাত ৪-০-৪২-১, রাজিবুল ২-০-১৫-০, নিহাদ-৪-০-২৬-১, শাহবাজ ৩-০-১৭-০, জুবায়ের ২-০-২৩-০, সুব্রত ২-০-২৫-০)

পারটেক্স: ২০ ওভারে ১৭৩/৮ (জনি ২৬, হাসানুজ্জমান ১০, সায়েম ৪, রাজিবুল ২০, সুব্রত ৪, নিহাদ ২৪, ইসহারুল ৩৮*, শাহবাজ ০, শাহাদাত ২, জয়নুল ৩৭*; নাবিল ৪-০-৩১-১, শহীদ ২-০-২০-০, সোহাগ ৪-০-১৭-৩, সানজামুল ৪-০-৩৫-২, মুক্তার ৪-০-৩৭-১, সাব্বির ১-০-১৩-০, নাঈম ১-০-২০-০)

ফল: লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জ ২৭ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: মেহেদি মারুফ