১৪ উইকেটের দিনে ৯৭ রানেই শেষ উইন্ডিজ

উইকেটে হালকা সবুজের ছোঁয়া আর কিছুটা বাড়তি বাউন্স। এতটুকু কাজে লাগিয়েই উইকেট শিকারের উৎসব করলেন দুই দলের ফাস্ট বোলাররা। লুঙ্গি এনগিদি ও আনরিক নরকিয়ার বোলিং তোপে পুড়ল ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং। অভিষিক্ত জেডেন সিলসের দারুণ বোলিংয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজই দিল জবাব। ১৪ উইকেটের ঘটনাবহুল দিনের শেষে অবশ্য এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাই।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 June 2021, 04:09 AM
Updated : 11 June 2021, 04:09 AM

১১ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে গিয়ে ক্যারিবিয়ানদের প্রথমবারের মতো একশ রানের নীচে গুটিয়ে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেন্ট লুসিয়া টেস্টের প্রথম দিনে বৃহস্পতিবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংসে অলআউট ৯৭ রানেই।

ধ্বংসযজ্ঞের সূচনা করেন আনরিক নরকিয়া। ছবি : ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা।

নরকিয়ার হাত ধরে শুরু ধ্বংসযজ্ঞের শেষটা করেন এনগিদি। গতি, বাউন্স আর সিম মুভমেন্টের প্রদর্শনী ক্যারিবিয়ানদের প্রথম পাঁচ উইকেটের চারটি নেন নরকিয়া, আরেকটি কাগিসো রাবাদা। পরের পাঁচটিই নেন এনগিদি।  

দক্ষিণ আফ্রিকা দিন শেষ করে ৪ উইকেটে ১২৮ রানে।

কার্টলি অ্যামব্রোসের কাছ থেকে টেস্ট ক্যাপ পেয়ে স্বপ্নের আঙিনায় পা রাখা সিলস দেখান তার সম্ভাবনার ঝলক। টেস্ট ক্রিকেটে প্রথম দিনে ১৯ বছর বয়সী ক্যারিবিয়ান পেসারের শিকার তিন উইকেট।

ড্যারেন স্যামি আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটিংয়ে নামে টস জিতে। কিন্তু ফায়দা নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই ক্যারিবিয়ান ওপেনারকে কাঁপিয়ে দেন রাবাদা। প্রথম উইকেট যদিও পান নরকিয়া।

কদিন আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ষসেরা ক্রিকেটারের স্বীকৃতি পাওয়া নরকিয়ার গতিময় ডেলিভারি শেই হোপের ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে ছোবল দেয় স্টাম্পে। ফেরার টেস্টে হোপের সংগ্রহ কেবল ১৫।

আরেক ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটও ফেরেন ১৫ রানেই। নরকিয়ার ক্রস সিমে করা বল ছেড়ে দেন ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক, একটু ভেতরে ঢুকে বল উড়িয়ে দেয় বেলস।

এরপর এনক্রুমা বনার ও রোস্টন চেইস চেষ্টা করেন জুটি গড়ার। কিন্তু দুজনের ৬৫ বলের জুটিতে রান আসে কেবল ১৪। নরকিয়ার বাউন্সার হেলমেটে লাগার পর বনার আউট হন রাবাদার বাড়তি লাফানো বলে। পরে কনকাশনের শিকার হয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যান এই ব্যাটসম্যান, তার জায়গায় বদলি হিসেবে খেলবেন কাইরান পাওয়েল।

নরকিয়া এরপর দ্রুত ফিরিয়ে দেন কাইল মেয়ার্স ও জার্মেইন ব্ল্যাকউডকে।

এনগিদির শিকার শুরু চেইসকে ফিরিয়ে। ওই ওভারেই তিনি বিদায় করে দেন জশুয়া দা সিলভাকেও। জেসন হোল্ডার পরে চেষ্টা করেন একটু প্রতিরোধের। তাকে ফিরিয়েই এনগিদি পূরণ করেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ৫ উইকেট।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলআউট চা-বিরতির আগেই। তাদের কোনো ব্যাটসম্যান ছাড়াতে পারেনি ২০, কোনো জুটিতে আসেনি ২৫ রানও।

টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথম ওভারেই উইকেট পেয়ে শূন্যে ভাসছেন জেডেন সিলস। ছবি : ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ। 

দক্ষিণ আফ্রিকাও ব্যাটিংয়ে নেমে ধাক্কা খায় শুরুতে। নিয়মিত টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে যাত্রা শুরুর ম্যাচে প্রথম ওভারেই ডিন এলগার ফেরেন শূন্য রানে। কেমার রোচের বলে স্লিপে দারুণ ক্যাচ নেন ব্ল্যাকউড।

দশম ওভারে আক্রমণে এসে সিলস উইকেটের স্বাদ পান টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম ওভারেই। তার শিকার দক্ষিণ আফ্রিকার অভিষিক্ত ব্যাটসম্যান কিগান পিটারসেন।

জোড়া উইকেটের ধাক্কা সামলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে এগিয়ে নেয় এইডেন মারক্রাম ও রাসি ফন ডার ডাসেনের জুটি। তৃতীয় উইকেটে দুজনে যোগ করেন ৭৯ রান।

দিনের শেষ বেলায় সিলসের জোড়া ছোবল। ৬০ রান করে মারক্রাম আর ৬ রানে অভিষিক্ত কাইল ভেরেইনা ধরা পড়েন উইকেটের পেছনে।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ তাতে দিনটা শেষ করতে পারে একটু স্বস্তিতে। তবে ম্যাচে এগিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ম ইনিংস : ৪০.৫ ওভারে ৯৭ ( ব্র্যাথওয়েট ১৫, হোপ ১৫, বনার ১০, চেইস ৮, মেয়ার্স ১, ব্ল্যাকউড ১, হোল্ডার ২০, জশুয়া ০, কর্নওয়াল ১৩, রোচ ১, সিলস ০*; রাবাদা ১০-২-২৪-১, এনগিদি ১৩.৫-৭-১৯-৫, নরকিয়া ১১-৫-৩৫-৪, মহারাজ ৪-৩-৬-০, মুল্ডার ২-০-৯-০)।

দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৪৩ ওভারে ১২৮/৪ (এলগার ০, মারক্রাম ৬০, পিটারসেন ১৯, ফন ডাসেন ৩৪*, ভেরেইনা ৬, ডি কক ৪*; রোচ ১০-২-২৭-১, হোল্ডার ৭-০-৩১-০, সিলস ১১-৩-৩৪-৩, মেয়ার্স ৫-২-৮-০, কর্নওয়াল ৮-১-২৭-০, চেইস ২-২-০-০)।