১ হাজার উইকেট ও ১৬১ টেস্ট, ‘কল্পনাতীত’ অ্যান্ডারসন

নতুন সীমানায় পা রাখা, নতুন উচ্চতা স্পর্শ করা কিংবা কল্পনাকে ছাড়িয়ে যাওয়া, এসব কিছুই নতুন নয় জিমি অ্যান্ডারসনের জন্য। অনেক বাস্তবতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই সদর্পে ছুটে যাচ্ছেন এই ইংলিশ পেসার। সেই তিনিও বিস্মিত নিজের পরের দুই অর্জনের হাতছানিতে, ১৬১ টেস্ট আর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১ হাজার উইকেট!

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 May 2021, 04:49 AM
Updated : 30 May 2021, 04:49 AM

ইংল্যান্ডের নতুন আন্তর্জাতিক মৌসুম শুরুর আগে অসাধারণ এই দুটি মাইলফলকের সামনে দাঁড়িয়ে অ্যান্ডারসন। কেবল আর ৮টি উইকেট হলেই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে হাজার উইকেট পূর্ণ হবে তার। আর মাত্র একটি টেস্ট খেললেই ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলার রেকর্ডে স্পর্শ করবেন অ্যালেস্টার কুককে।

প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের সুদীর্ঘ ইতিহাসে ১ হাজার উইকেট পাওয়া বোলার কম নেই। তবে আধুনিক ক্রিকেটের বাস্তবতায় একজন পেসারের এই মাইলফলকে পা রাখা হবে প্রায় অবিশ্বাস্য।

টেস্ট ইতিহাসে ৬০০ উইকেট শিকারি প্রথম পেসার অ্যান্ডারসন, দেড়শ টেস্ট খেলা একমাত্র পেসারও। অবাক করা আরও কীর্তি তার আছে। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের আগে শনিবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সেই অ্যান্ডারসনের কণ্ঠেও বিস্ময় নিজের সম্ভাব্য অর্জন নিয়ে।

“ ১ হাজার উইকেট মানে অনেক অনেক। এই সময়ে, এই যুগে আমি ঠিক জানি না, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এত বেশি উইকেট পাওয়া আর সম্ভব হবে কিনা।”

“ যে পরিমাণ ক্রিকেট এখন খেলা হয়, বোলারদের জন্য লম্বা সময় টিকে থাকা কঠিন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এখন অনেক হয়। এছাড়াও ক্রিকেটবিশ্বজুড়ে যা বাস্তবতা, এই ১ হাজার উইকেটকে মনে হচ্ছে অনেক বেশি।”

নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু আগামী বুধবার থেকে। মাঠে নামলেই অ্যান্ডারসন ছুঁয়ে ফেলবেন কুকের ১৬১ টেস্টের রেকর্ড।

তাদের চেয়ে বেশি টেস্ট খেলেছেন আরও ছয় জন। শচিন টেন্ডুলকার খেলেছেন ২০০ টেস্টও। অ্যান্ডারসনের কীর্তি তবু অভাবনীয় তিনি পেসার বলেই। ভারতীয় কিংবদন্তি কপিল দেবের ১৩১  টেস্ট, ওয়েস্ট ইন্ডিজের পেসার কোর্টনি ওয়ালশের ১৩২ টেস্ট খেলতে পারাই দীর্ঘ সময় ছিল বিস্ময়ের খোরাক। অ্যান্ডারসন সেখানে খেলে ফেলেছেন ১৬০ টেস্ট!

আর দুই মাস পরই ৩৯ বছর পূর্ণ করতে যাওয়া পেসার নিজেও কখনও ভাবতে পারেননি, এই চূড়ায় উঠবেন তিনি।

“ এটা সত্যিই আমাকে গর্বিত করছে। লাখো লাখো বছরেও ভাবতে পারিনি, এই পর্যায়ে আসতে পারব। একজন বোলারের জন্য এই পরিমাণ টেস্ট খেলতে পারা… আমি জানি না, উপযুক্ত শব্দ কোনটি। তবে আমার জন্য এটা কল্পনাতীত।”

“ সত্যিই সম্মানিত বোধ করছি যে এটা করতে পারছি, কারণ এই অর্জন সত্যিই অসাধারণ। আমি সত্যিকার অর্থেই টেস্ট ক্রিকেটকে ভালোবাসি। টেস্ট ক্রিকেটের জন্য আমার আবেগ তীব্র। বেড়ে ওঠার সময়টায় কেবল ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্টই খেলতে চাইতাম এবং এত লম্বা সময় ধরে এটা করতে পেরে আমি অভিভূত।”

টেস্টের মতো ইংল্যান্ডের হয়ে ওয়ানডেতেও সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বোলার অ্যান্ডারসন, ২৬৯টি। তবে ক্যারিয়ারের ১৯৪ ওয়ানডের শেষটি তিনি খেলেছেন সেই ২০১৫ বিশ্বকাপ। ওই বিশ্বকাপের পর ইংল্যান্ডের ওয়ানডে দলে পালা বদলের পালায় বাদ পড়েন তিনি।

তখন ভালো না লাগলেও সেটিকে নিজের জন্য তার শাপেবর মনে হয় এখন।

“ ওই সময়টায় কিছুটা ক্ষুব্ধ ছিলাম বটে। এখন পেছন ফিরে তাকিয়ে মনে হয়, ওটা ছিল ঈশ্বরের উপহার। ওয়ানডে ক্রিকেট খেলতে থাকলে নিশ্চিতভাবেই এখনও ক্রিকেট চালিয়ে যেতে পারতাম না। সিরিজের মাঝখানের বিরতিতে ফিটনেস নিয়ে কাজ করা, শরীরকে সময় দেওয়াটাই বড় পার্থক্য গড়ে দিয়েছে। পাশাপাশি, একটি সংস্করণেই পুরো মনোযোগ দিতে পেরেছি।”