সেরা ব্যাটসম্যান ইরফান, সেরা বোলার রুবেল

টুর্নামেন্ট শুরুর আগে সেরা ব্যাটসম্যানের সম্ভাব্য তালিকা করলে সেখানে ইরফান শুক্কুরের নাম রাখতেন না হয়তো কেউই। নিজেকে নতুন করে চিনিয়ে সেই ইরফানই পেয়েছেন প্রেসিডেন্ট’স কাপের সেরা ব্যাটসম্যানের স্বীকৃতি। রুবেল হোসেনের জন্য এটি ছিল নিজেকে ফিরে পাওয়ার আসর। দারুণ বোলিংয়ের ধারাবাহিকতায় টুর্নামেন্টের সেরা বোলার মনোনীত হয়েছেন এই পেসার। ট্রফির পাশাপাশি দুজনেরই প্রাপ্তি ১ লাখ টাকা করে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2020, 05:35 PM
Updated : 25 Oct 2020, 05:35 PM

সেরা ব্যাটসম্যান ইরফান হলেও টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বেশি রান এসেছে মুশফিকুর রহিমের ব্যাট থেকে। ৫ ইনিংসে ২১৯ রান করে অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান পেয়েছেন ম্যান অব দা টুর্নামেন্টের স্বীকৃতি। ট্রফির সঙ্গে তিনি পেয়েছেন ২ লাখ টাকা।

মুশফিকের চেয়ে মাত্র ৫ রান কম করেছেন ইরফান। তবে অন্য সব দিক থেকে ইরফান ছিলেন অনেক এগিয়ে। মুশফিকের গড় ৪৩.৮০, স্ট্রাইক রেট ৬৮.০১। ইরফানের গড় ৭১.৩৩, স্ট্রাইক রেট ৮৮.০৬।

রানে একটু পিছিয়ে থাকলেও টুর্নামেন্টের সেরা ব্যাটসম্যানের স্বীকৃতি যোগ্য হিসেবেই পেয়েছেন ইরফান। সাত নম্বরে ব্যাটিংয়ের কঠিন কাজটি তিনি করেছেন। দলের বিপর্যয়ে হাল ধরেছেন ম্যাচের পর ম্যাচ, দলকে উদ্ধার করেছেন, প্রয়োজনে আবার শেষ দিকে ঝড় তোলার কাজটিও করেছেন। তার ব্যাটিংয়ের ইতিবাচক মানসিকতা, শটের পরিধি আগের চেয়ে বাড়ানো ও পরিস্থিতির দাবি মেটানো টেম্পারামেন্ট ছিল চোখে পড়ার মতো।

আসরের সেরা ব্যাটসম্যান হওয়ার পাশাপাশি ফাইনালে ৭৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে ফাইনালেরও সেরা ব্যাটসম্যান ইরফান। যোগ হয়েছে আরও ২৫ হাজার টাকা।

সেরা বোলারের লড়াইয়ে রুবেল ও মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনের শিকার সমান ১২টি করে। রুবেল ম্যাচ খেলেছেন একটি বেশি। বোলিং গড় ও ওভারপ্রতি রান দেওয়াতেও সাইফ এগিয়ে। তবে রুবেল এগিয়ে গেছেন দলের ফাইনালে ওঠা ও শিরোপা জয়ে সার্বিক প্রভাব রেখে। মন্থর উইকেটেও আসর জুড়ে রুবেলের গতি ছিল দারুণ। আগ্রাসন, উইকেটের জন্য বল করা, লেংথ, তার বোলিংয়ের সবই ছিল চোখে পড়ার মতো।

টুর্নামেন্টের সেরা ফিল্ডারের পুরস্কার জিতেছেন নুরুল হাসান সোহান। অনেকের মতেই দেশের সেরা কিপার বলে বিবেচিত সোহানের প্রাপ্তি এজন্য ১ লাখ টাকা। কিপিং দিয়ে ফাইনাল ম্যাচের সেরা ফিল্ডারও তিনি।

৩৮ রানে ৫ উইকেট নিয়ে ফাইনালের ম্যান অব দা ম্যাচ হয়েছেন সুমন খান। এই স্বীকৃতির জন্য তরুণ পেসার পেয়েছেন ১ লাখ টাকা। পাশাপাশি ফাইনালের সেরা বোলার হিসেবে পেয়েছেন আরও ২৫ হাজার টাকা।

টুর্নামেন্টেই আগেই ঘোষিত এসব স্বীকৃতির সঙ্গে ফাইনালের পরে যোগ হয়েছে আরও কিছু পুরস্কার। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের উদ্যোগে ‘কামব্যাক প্লেয়ার অব দা টুর্নামেন্ট’ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে তাসকিন আহমেদকে। আসর জুড়ে দারুণ গতিময় ও আগ্রাসী বোলিং করে নজর কেড়েছেন এই ফাস্ট বোলার।

পাশাপাশি ‘প্রমিজিং প্লেয়ার অব দা টুর্নামেন্ট’ দেওয়া হয়েছে রিশাদ হোসেনকে। খুব নজরকাড়া কিছু না করলেও তরুণ এই লেগ স্পিনার মোটামুটি ভালো বোলিং করেছেন। সব ম্যাচেই ফিল্ডিং করেছেন দুর্দান্ত। তার ব্যাটিংও বেশ ভালো এমনিতে, তবে এই আসরে ব্যাট হাতে তেমন কিছু করতে পারেননি। তরুণ ক্রিকেটারদের উৎসাহ দিতেই বিসিবি সভাপতির এই উদ্যোগ।

এছাড়াও বিসিবি সভাপতির বিশেষ স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে পেসার সাইফ উদ্দিন, অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান ও আফিফ হোসেন, পেসার সুমন খান ও ব্যাটসমান তৌহিদ হৃদয়কে। তাসকিন-রিশাদ ও এই ৫ জন পেয়েছেন ৫০ হাজার টাকা করে।

টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন দল মাহমুদউল্লাহ একাদশ পেয়েছে ১৫ লাখ টাকা প্রাইজমানি। রানার্স আপ শান্ত একাদশের প্রাইজানি সাড়ে ৭ লাখ টাকা।

এছাড়াও প্রতি দলের সব ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফদের আলাদা করে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দেন বিসিবি সভাপতি।

ব্যক্তিগত পুরস্কার জিতলেন যারা:

ম্যান অব দা টুর্নামেন্ট:  মুশফিকুর রহিম

ব্যাটসম্যান অব দা টুর্নামেন্ট: ইরফান শুক্কুর

বোলার অব দা টুর্নামেন্ট: রুবেল হোসেন

ফিল্ডার অব দা টুর্নামেন্ট: নুরুল হাসান সোহান

কামব্যাক প্লেয়ার অব দা টুর্নামেন্ট: তাসকিন আহমেদ

প্রমিজিং প্লেয়ার অব দা টুর্নামেন্ট: রিশাদ হোসেন

বিসিবি প্রেসিডেন্টের বিশেষ পুরস্কার: মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন, মেহেদি হাসান, সুমন খান, আফিফ হোসেন ও তৌহিদ হৃদয়

ম্যান অব দা ফাইনাল: সুমন খান

ব্যাটসম্যান অব দা ফাইনাল: ইরফান শুক্কুর

বোলার অব দা ফাইনাল: সুমন খান

ফিল্ডার অব দা ফাইনাল: নুরুল হাসান