মর্গ্যান-মালানের ব্যাটে ইংল্যান্ডের রেকর্ড গড়া জয়

বড় রান তাড়ায় পরপর দুই বলে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিল ইংল্যান্ড। সেখান থেকে বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে দলকে পথ দেখালেন ওয়েন মর্গ্যান, দারুণ ইনিংসে লক্ষ্যে পৌঁছে দিলেন দাভিদ মালান। দুই বাঁহাতির যুগলবন্দীতে পাকিস্তানের বিপক্ষে রেকর্ড গড়া জয় পেল ইংল্যান্ড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 August 2020, 04:52 PM
Updated : 30 August 2020, 05:49 PM

দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৫ উইকেটে জিতে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেছে ইংল্যান্ড। সিরিজের প্রথম ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছিল বৃষ্টিতে।

ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে রোববার ১৯৬ রানের লক্ষ্য ইংল্যান্ড ছুঁয়ে ফেলে ৫ বল বাকি থাকতে। পাকিস্তানের বিপক্ষে এটাই ইংলিশদের সবচেয়ে বড় রান তাড়া করে জয়।

বাবর আজম ও মোহাম্মদ হাফিজের ফিফটিতে ৪ উইকেটে ১৯৫ রানের সংগ্রহ গড়ে পাকিস্তান। ছাড়িয়ে যায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের আগের সর্বোচ্চ ১৭৩।

গত বছরে সেই ম্যাচের নায়ক মর্গ্যান ব্যবধান গড়েন দেন এবারও। মালানকে নিয়ে শতরানের জুটিতে ইংলিশ অধিনায়ক দলকে এগিয়ে নেন জয়ের পথে। ৩৩ বলে ৬৬ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা মর্গ্যান। ৩৬ বলে অপরাজিত ৫৪ রান করে মালান ফিরেছেন দলকে জিতিয়ে।    

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে সাকিব মাহমুদের করা ম্যাচের প্রথম বল পুল করে বাউন্ডারিতে পাঠান বাবর। শুরুতে রানের গতিতে দম দেওয়ার কাজটা অবশ্য করেন আরেক ওপেনার ফখর জামান। দুজনের সৌজন্যে পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৫১ রান তোলে পাকিস্তান।

৫২ বলে ৭২ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন আদিল রশিদ। এই লেগ স্পিনারকে ছক্কায় ওড়ানোর পরের বলেই পুনরাবৃত্তির চেষ্টায় ফখর ধরা পড়েন লং অনে। বাঁহাতি ওপেনার ২২ বলে করেন ৩৬ রান।

তিনে নামা হাফিজ ক্রিজে গিয়েই শট খেলতে শুরু করেন। বাবরের সঙ্গে দ্রুত জমে যায় তার জুটি। ৪ ওভারে ৪০ রানের এই জুটিও ভাঙেন রশিদ। মিড উইকেটে ক্যাচ দিয়ে থামেন ৪৪ বলে ৫৬ রান করা বাবর।

পাকিস্তান অধিনায়কের বিদায়ের পর বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে দলকে দুইশ রানের কাছে নিয়ে যান হাফিজ। দারুণ সব স্ট্রেইট ড্রাইভ ও পুলে আদায় করে নেন বাউন্ডারি।

অভিজ্ঞ এই টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান চার ছক্কা ও পাঁচ চারে ৩৬ বলে করেন ৬৯ রান। দুর্দান্ত ইনিংসটি খেলার পথে দ্বিতীয় পাকিস্তানি হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে দুই হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তিনি। 

বড় রান তাড়ায় ইংল্যান্ডকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন জনি বেয়ারস্টো ও টম ব্যান্টন। আগের ম্যাচে প্রথম ওভারেই ফেরা বেয়ারস্টো তোলেন ঝড়। সেই ম্যাচে ফিফটি করা ব্যান্টন দিয়ে যান সঙ্গ। পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬৫ রান তোলে ইংল্যান্ড।

ইমাদ ওয়াসিম, শাহিন শাহ আফ্রিদি ও মোহাম্মদ আমির সুবিধা করতে পারছিলেন না ইংলিশ ওপেনারদের সামনে। ইংল্যান্ডের শুরুর জুটিও ভাঙে লেগ স্পিনে। দুই ওপেনারকেই বিদায় করেন শাদাব।

সপ্তম ওভারে বোলিংয়ে এসে দ্বিতীয় বলে আঘাত হানেন তিনি। ২৪ বলে দুই ছক্কা ও চারটি চারে ৪৪ রান করা বেয়ারস্টোকে ফেরানোর পরের বলে এলবিডব্লিউ করেন ব্যান্টনকে।

তবে জোড়া আঘাতের ধাক্কায় ইংল্যান্ডের টালমাটাল হওয়া বহুদূর, উল্টো মর্গ্যানের পাল্টা আক্রমণে পাকিস্তানি বোলাররাই হয়ে পড়ে দিশাহারা। স্পিন, পেস কিছুই থামাতে পারেনি ইংল্যান্ড অধিনায়ককে। তাকে দারুণ সঙ্গ দেওয়া মালানও শেষ দিকে চড়াও হন বোলারদের ওপর।

৬২ বলে ১১২ রানের জুটিই একরকম গড়ে দেয় ম্যাচের ভাগ্য। অপ্রতিরোধ গতিতে ছুটতে থাকা মর্গ্যান শেষ পর্যন্ত থামেন হারিস রউফকে ছক্কায় ওড়ানোর চেষ্টায় সীমানায় ধরা পড়ে। ৩৩ বলে তার ৬৬ রানের ইনিংসে চারটি ছক্কার পাশে চার ছয়টি।

এরপর মইন আলি ও স্যাম বিলিংসকে দ্রুতই ফেরায় পাকিস্তান। কিন্তু মালান ছিলেন বলে বেকায়দায় পড়তে হয়নি ইংলিশদের। শেষ ওভারের প্রথম বলে বাউন্ডারিতে দলকে তিনি নিয়ে যান ঠিকানায়।

পাকিস্তান ভুগেছে চোটের জন্য মোহাম্মদ আমির ২ ওভারের বেশি বোলিং করতে না পারায়। ইমাদ, শাহিন আফ্রিদি ছিলেন খরুচে।

আগামী মঙ্গলবার একই ভেন্যুতে হবে শেষ টি-টোয়েন্টি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৯৫/৪ (বাবর ৫৬, ফখর ৩৬, হাফিজ ৬৯, মালিক ১৪, ইফতিখার ৮*, শাদাব ০*; মাহমুদ ৪-০-৩৮-০, মইন ১-০-১০-০, জর্ডান ৪-০-৪১-১, কারান ৪-০-৪৬-১, রশিদ ৪-০-৩২-২, গ্রেগোরি ৩-০-২২-০)

ইংল্যান্ড: ১৯.১ ওভারে ১৯৯/৫ (ব্যান্টন ২০, বেয়ারস্টো ৪৪, মালান ৫৪*, মর্গ্যান ৬৬, মইন ১, বিলিংস ১০, গ্রেগোরি ০*; ইমাদ ৩-০-৩০-০, আফ্রিদি ৩.১-০-৪৪-০, আমির ২-০-২৫-০, শাদাব ৪-০-৩৪-৩, ইফতিখার ৩-০-৩১-০, রউফ ৪-০-৩৪-২)

ফল: ইংল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী

সিরিজ : ৩ ম্যাচ সিরিজে ইংল্যান্ড ১-০তে এগিয়ে

ম্যান অব দা ম্যাচ: ওয়েন মর্গ্যান