রিচার্ডসকে বরাবরই মনে করা হয়ে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের শেষ কথা। পরিসংখ্যানও এই জায়গাটিতে তার বিশেষত্ব ফুটিয়ে তোলে অনেকটা, তবে ক্রিকেটে তিনি অমর হয়ে থাকবেন ডাকাবুকো চরিত্রের কারণে। বিধ্বংসী সব শটে যেমন, তেমনি প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিতেন শরীরী ভাষাতেও। মাঠে তার প্রতিটি পদচারণা যেন ঘোষণা করত, তিনিই শ্রেষ্ঠ! হেলমেট ছাড়া ব্যাটিং ছিল তার শৌর্যের প্রতীক।
বর্তমান যুগে এমনকি নেটেও হেলমেট ছাড়া পেসারদের মুখোমুখি হওয়ার কথা ভাবতে পারেন না ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু রিচার্ডস হেলমেট ছাড়াই দাপট দেখিয়েছেন ক্রিকেট দুনিয়ার নানা প্রান্তে, নানা পরিস্থিতিতে, ম্যাচের পর ম্যাচ। সেসময় অনেকবারই বলেছেন, তিনি হেলমেট ঘৃণা করেন। তার সেই বীরত্ব নিয়ে তুমুল চর্চা হয়েছে তখন, হয় এখনও।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রিচার্ডসের সঙ্গে আলাপচারিতায় অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার শেন ওয়াটসনও যেমন কৌতূহল দেখালেন সেটি নিয়ে। রিচার্ডসের উত্তরে মিশে থাকল তার চরিত্রের ধরনই।
“ক্রিকেটের প্রতি এতটাই আবেগ অনুভব করতাম যে, আমি যা ভালোবাসি তা করতে গিয়ে প্রাণ গেলেও আফসোস থাকত না। নিজের বেছে নেওয়া পথে চলতে গিয়ে যদি জীবনও চলে যায়, তার চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে।”
ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি অনুপ্রেরণা পেতেন অন্য ক্রীড়াবিদদের দেখে, যারা জীবন বাজি রেখে খেলেন।
“অন্যান্য পুরুষ ও নারী ক্রীড়াবিদদের ঝুঁকি নিতে দেখে তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা বেড়ে যেত। ফমুর্লা ওয়ান রেসিং গাড়ি চালাচ্ছে যে, তার চেয়ে ঝুঁকির আর কি কিছু হতে পারে?”
রিচার্ডসের কথা শুনে মজা করে ওয়াটসনের পাল্টা স্বগতোক্তি, “তাই বলে হেলমেট ছাড়া ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার গতির বল মোকাবেলা করা!” ওয়াটসনদের কাছে যা অবিশ্বাস্য, রিচার্ডস সেটিই করেছেন দিনের পর দিন।
দুইবারের বিশ্বকাপজয়ী রিচার্ডস ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে খেলেছেন ১২১ টেস্টে। ৫০.২৩ গড়ে রান করেছেন ৮ হাজার ৫৪০। পাশাপাশি ১৮৭ ওয়ানডেতে ৪৭ গড়ে তার রান ৬ হাজার ৭২১। ফিল্ডিং বাধ্যবাধকতা ও বোলারদের সীমাবদ্ধ করে রাখার শত আইন সেসময় ছিল না, তবু ওয়ানডে তার স্ট্রাইক রেট ছিল ৯০.২০।