জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে সিলেটের গ্যালারিতে ছিল দর্শক খরা। সিরিজের ফয়সালা হয়ে যাওয়ার পরও তৃতীয় ম্যাচে দর্শক তুলনামূলক অনেক বেশি। মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বে শেষ ম্যাচ বলে কথা! সময়ের সঙ্গে গ্যালারি ভরে উঠছে আস্তে আস্তে।
ম্যাচ শুরু হওয়ার বেশ আগে থেকেই গ্যালারিতে স্লোগান শুরু হয়ে গেছে, “মাশরাফি…মাশরাফি… ক্যাপ্টেন… ক্যাপ্টেন…।” বাংলাদেশের জার্সিতে মাশরাফি শেষবার টস করতে নামার সময় সেই স্লোগান রূপ নিল গর্জনে।
‘দৌড়া বাঘ আইলো’ গ্রুপের ১৫-১৬ জন সদস্য ঢাকা থেকে এসেছেন খেলা দেখতে। তাদের একজন শিহাব মোহাম্মদ জানালেন, এই সিরিজের শেষ ম্যাচ মাশরাফির শেষ হতে পারে ভেবে অনেক আগেই তারা টিকিট কেটে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলেন। তাদের ধারনার সঙ্গে মাশরাফির ভাবনা মিলে গেছে অনেকটা। এই ম্যাচে তারা এসেছেন একটি থিম নিয়েই, “মাশরাফিতে আরেকবার, মাশরাফিতে শেষবার…।”
“তার চেয়ে ভালো বোলার আমরা আরও পেতে পারি, তার চেয়ে সফল অধিনায়কও হয়তো ভবিষ্যতে আসবেন। কিন্তু তার যে ব্যক্তিত্ব, তার যে সর্বব্যাপী প্রভাব, যেভাবে আমাদের দলকে বদলে দিয়েছেন, সব মিলিয়ে মাশরাফি একজনই।”
আরেক দর্শক মুরসালিন শাহ শোনালেন, মাশরাফির ছাপ কিভাবে থাকবে বাংলাদেশের ক্রিকেটে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটে মাশরাফি বরাবরই ছিলেন আবেগের প্রতিশব্দ। তার নেতৃত্বের শেষ ম্যাচ ভক্ত-সমর্থকদেরও স্বাভাবিকভাবেই নাড়া দিচ্ছে প্রবলভাবে। তবে আবেগের পাশাপাশি ছিল কৃতজ্ঞতা স্বীকার। গ্যালারিতে ‘থ্যাঙ্ক ইউ ক্যাপ্টেন’, ‘ধন্যবাদ অধিনায়ক’, লেখা প্ল্যাকার্ড চোখে পড়েছে অনেক।
হবিগঞ্জ থেকে আসা রাশেদুল করিম যেমন বলছিলেন, অধিনায়ক মাশরাফির শেষ বলে কিছু তার কাছে নেই।
মাশরাফি বিদায়ের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই ঘোরের মধ্যে আছেন অনুপম হোসেন পূর্ণম। সিদ্ধান্ত নিতে সময় লাগেনি। ঢাকা থেকে সিলেট চলে এসেছেন প্রিয় অধিনায়ককে কাছ থেকে বিদায় জানাতে। তার কাছে মাশরাফি মানে মাথা উঁচু করার দুঃসাহস।
“দুপুরে খবরটা শোনার পর থেকে অস্থির লাগছিল। সন্ধ্যায় অফিস থেকে বাসার যাচ্ছিলাম, কিন্তু নিজেকে আবিষ্কার করলাম কলাবাগানে বাস কাউন্টারে। নির্ঘুম রাত শেষে ভোর সাড়ে ৫টার বাসে সিলেটের উদ্দেশে রওনা হলাম। অধিনায়ক মাশরাফির শেষ ম্যাচ… কে জানে, হয়তো ক্রিকেটার মাশরাফিরও! সেই মাশরাফি যার উদ্ধত কলারে উঁচু হয়ে যায় বাংলাদেশের কোটি মাথা!”