ভারতের সঙ্গে পারল না বাংলাদেশের মেয়েরা

লক্ষ্য ছিল কঠিন, তবু স্বপ্ন ছিল বড়। সাহস জোগাচ্ছিল অতীতের সাফল্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়নি সাফল্যের পুনরাবৃত্তি। মেয়েদের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ পেরে ওঠেনি ভারতের সঙ্গে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Feb 2020, 01:00 PM
Updated : 24 Feb 2020, 03:32 PM

‘এ’ গ্রপের ম্যাচে পার্থে ভারতের কাছে ১৮ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। ওয়াকায় সোমবার ভারতকে ১৪২ রানে থামিয়ে বাংলাদেশের মেয়েরা থমকে গেছে ১২৪ রানে।

যথারীতি বাংলাদেশকে ভুগিয়েছেন পুনম যাদব। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৪ উইকেট নিয়ে ভারতকে জয় এনে দেওয়া লেগ স্পিনার এবার নিয়েছেন ১৮ রানে ৩ উইকেট।

২০১৮ এশিয়া কাপে শিরোপা জয়ের পথে প্রবল পরাক্রমশালী ভারতকে দুইবার হারিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার আর ধরে রাখা হলো না সেই জয়ের ধারা। অস্ট্রেলিয়ার পর বাংলাদেশকেও হারিয়ে ভারতীয় মেয়েরা আপাতত গ্রুপের শীর্ষে।

ভারতের বোলিংয়ের সামনে ১৪৩ রানের লক্ষ্য এমনিতেই ছিল চ্যালেঞ্জিং। বিস্ময়করভাবে দলের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার রুমানা আহমেদকে বাংলাদেশ নামিয়েছে আট নম্বরে!

রান তাড়ায় বাংলাদেশ হোঁচট খায় শুরুতেই। দ্বিতীয় ওভারে উড়িয়ে মারতে গিয়ে কাভারে ক্যাচ দেন শামিমা সুলতানা।

আরেক ওপেনার মুর্শিদা খাতুন এক প্রান্তে সচল রাখেন রানের চাকা। কিন্তু আরেকপাশে প্রত্যাশিত গতিতে রান তুলতে পারেননি সানজিদা ইসলাম।

দারুণ খেলতে থাকা মুর্শিদা আউট হয়েছেন রান বাড়ানোর তাড়নাতেই। ২৬ বলে ৩০ করে ক্যাচ দিয়েছেন মিড অফে।

উইকেটে অনেকটা সময় কাটিয়েও ছন্দ পাননি সানজিদা। কিপারের কাছে ক্যাচ দিয়ে আউট হন ১৭ বলে ১০ রান করে। রানের খাতা খোলার আগে সাজঘরের পথ ধরেন দলের অন্যতম সেরা ব্যাটার ফারজানা হক।

বাংলাদেশকে ম্যাচে রাখেন চারে নামা নিগার সুলতানা। ফাহিমা খাতুনকে নিয়ে লক্ষ্যের দিকে এগোতে থাকেন তিনি।

দ্রত রান তোলায় দলের বড় ভরসা যিনি, সেই ফাহিমা শুরুটা করেছিলেন ভালো। তবে পারেননি কার্যকর ইনিংস খেলতে। ১৩ বলে ১৭ করে ফিরেছেন পুনমকে সুইপ খেলে ক্যাচ দিয়ে।

দল তখন তাকিয়ে নিগারের ব্যাটে। পারেননি তিনিও। রাজেশ্বরি গায়কোয়াড়ের বাঁহাতি স্পিনে সুইপ করে ক্যাচ দিয়েছেন শর্ট স্কয়ার লেগে। ৫ চারে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২৬ বলে ৩৫।

রান রেটের দাবি মেটাতে জাহানারা আলমকে তুলে আনা হয়েছিল ব্যাটিং অর্ডারে। তিনি করতে পেরেছেন ১০ বলে ১০। রুমানা যখন নেমেছেন, করার ছিল সামান্যই। দুটি বাউন্ডারিতে তবু খানিটা আশা জাগিয়েছিলেন তিনি। শিখা পান্ডের দুর্দান্ত ইয়র্কার থামিয়েছে তাকে।

পুনমের লেগ স্পিনের আগে ম্যাচের প্রথম ভাগে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে বড় ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন শেফালি ভার্মা।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ভারতকে শুরুতেই চেপে ধরে বাংলাদেশ। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে অফ স্পিনার সালমা খাতুন তুলে নেন ওপেনার তানিয়া ভাটিয়ার উইকেট।

কিন্তু শেফালি ও জেমিমা রদ্রিগেসের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। ৩৭ রানের জুটি গড়েন এই দুইজন।

বিধ্বংসী শেফালির করেন ১৭ বলে ৩৯ রান। দুই চারের সঙ্গে ইনিংসে ছক্কা ছিল ৪টি।

বিপজ্জনক এই ব্যাটারকে থামিয়ে দলে স্বস্তি ফেরান পান্না ঘোষ। পরে ভারতীয় অধিনায়ক হারমানপ্রিত কাউরকেও বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে দেননি পান্না।

এক প্রান্ত আগলে রাখা জেমিমা ফেরেন রান আউট হয়ে। তার ব্যাট থেকে আসে ৩৭ বলে দুই চার ও এক ছক্কায় ৩৪ রান।

এরপর দীপ্তি শর্মা, রিচা ঘোষদের হাত খুলতে দেয়নি বাংলাদেশ। শেষ দিকে ১১ বলে ২০ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলেন ভেদা কৃষ্ণমূর্তি। তাতেই ভারতের রান ছাড়িয়ে যায় ১৪০।

শেষ পর্যন্ত সেই স্কোর যথেষ্ট হয়েছে ভারতের জয়ের জন্য। পারেনি বাংলাদেশ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ভারত: ২০ ওভারে ১৪২/৬ (তানিয়া ২, শেফালি ৩৯, জেমিমা ৩৪, হারমানপ্রিত ৮, দীপ্তি ১১, রিচা ১৪, কৃষ্ণমূর্তি ২০*, শিখা ৭*; জাহানারা ৪-০-৩৩-০, সালমা ৪-০-২৫-২, নাহিদা ৪-০-৩৪-০, পান্না ৪-০-২৫-২, রুমানা ২-০-৮-০, ফাহিমা ২-০-১৬-০)।

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১২৪/৮ (শামিমা ৩, মুর্শিদা ৩০, সানজিদা ১০, নিগার ৩৫, ফারজানা ০, ফাহিমা ১৭, জাহানারা ১০, রুমানা ১৩, সালমা ২*, নাহিদা ২*; দীপ্তি ৪-০-৩২-০, শিখা ৪-০-১৪-২, রাজেশ্বরি ৪-০-২৫-১, অরুন্ধতি ৪-০-৩৩-২, পুনম ৪-০-১৮-৩)।

ফল: ভারত ১৮ রানে জয়ী

প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: শেফালি ভার্মা