ধাওয়ান, স্মিথের আক্ষেপের দিনে ভারতের জয়

টপ অর্ডারের গড়ে দেওয়া মঞ্চে ঝড় তুললেন লোকেশ রাহুল। ভারতকে নিয়ে গেলেন রানের পাহাড়ে। স্বাগতিক ওপেনার শিখর ধাওয়ানের মতো নব্বইয়ের ঘরে আউট হলেন অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান স্টিভেন স্মিথও। তাদের আক্ষেপের দিনে সহজেই জিতল বিরাট কোহলির দল।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Jan 2020, 04:41 PM
Updated : 17 Jan 2020, 04:41 PM

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৩৬ রানে জিতে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা এনেছে ভারত। ৩৪০ রান তাড়ায় পাঁচ বল বাকি থাকতে ৩০৪ রানে গুটিয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া।
 
সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে শুক্রবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটির দৃঢ়তায় শুরুটা ভালো করে ভারত। প্যাট কামিন্সকে মেডেন খেলে ইনিংস শুরু করা রোহিত শুরুতে একটু সময় নেন, ধাওয়ান প্রথম থেকেই ছিলেন আক্রমণাত্মক।
 
দ্রুত এগোনো ৮১ রানের জুটি ভাঙেন অ্যাডাম জ্যাম্পা। দারুণ এক ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ করে থামান রোহিতকে। 
 
আগের ম্যাচে চারে নেমে ব্যর্থ বিরাট কোহলি রানের দেখা পেয়েছেন তিনে ফিরে। অধিনায়কের সঙ্গে শতরানের জুটি উপহার দেন ধাওয়ান। দলকে দৃঢ় ভিতের ওপর দাঁড় করানো বাঁহাতি ওপেনার ফেরেন চার রানের জন্য সেঞ্চুরি না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে।
 
কেন রিচার্ডসনের শর্ট বলে ফাইন লেগে ধরা পড়ে ৯৬ রানে থামেন ধাওয়ান। তার ৯০ বলের ইনিংস গড়া ১৩ চার ও এক ছক্কায়।
 
প্রমোশন পেয়ে চারে নেমে ব্যর্থ শ্রেয়াস আয়ার। আগের ম্যাচে তিনে নামা লোকেশ রাহুল এবার খেলেন পাঁচে। তার টি-টোয়েন্টি ঘরানার ইনিংসে সাড়ে তিনশ রানের কাছে যায় ভারতের সংগ্রহ।
 
রাহুলের সঙ্গে ৭৮ রানের জুটি গড়ে ফিরেন কোহলি। আবারও ভারত অধিনায়ককে থামান জ্যাম্পা। আট ইনিংসে কোহলিকে পাঁচবার আউট করলেন এই লেগ স্পিনার। ৬ চারে ৭৬ বলে কোহলি থামেন ৭৮ রান করে।
 
দ্রুত ফিরেন মনিশ পান্ডে। শেষের দিকে তাণ্ডব চালিয়ে দলকে বড় রানে নিয়ে যান রাহুল। ৫২ বলে তিন ছক্কা ও ছয় চারে ফিরেন ৮০ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে। শেষ ১০ ওভারে ৯১ রান যোগ করে ভারত, এতে বড় অবদান ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানেরই।
 
৫০ রানে ৩ উইকেট নেন জ্যাম্পা। রিচার্ডসন ২ উইকেট নেন ৭৩ রানে। রেকর্ড গড়া উদ্বোধনী জুটিই শেষ করেছিল আগের ম্যাচ। এবার চতুর্থ ওভারেই ভাঙে অস্ট্রেলিয়ার শুরুর জুটি। মোহাম্মদ শামির বলে কাভারে সেই ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় ডেভিড ওয়ার্নারের ক্যাচ লাফিয়ে এক হাতে মুঠোয় জমান পান্ডে।
 
শুরুতে ভুগছিলেন স্টিভেন স্মিথ। রানের জন্য সংগ্রাম করছিলেন। সময় লাগছিল অ্যারন ফিঞ্চেরও। ধীরে ধীরে জমে যায় সাবেক ও বর্তমান অধিনায়কের জুটি। রবীন্দ্র জাদেজার বলে স্টাম্পড হয়ে ফিঞ্চের বিদায়ে ভাঙে ৬২ রানের জুটি।
 
আগের ম্যাচে অভিষেকে ব্যাটিংয়ে নামতে হয়নি মার্নাস লাবুশেনর। দ্বিতীয় ম্যাচে ক্রিজে এসে প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে খোলেন রানের খাতা। টেস্টে অসাধারণ সময় কাটানো তরুণ ব্যাটসম্যান ছিলেন সাবলীল।
 
বাজে এক শটে ভাঙে ৯৬ রানের জুটি। জাদেজার বলে মিড অফে সহজ ক্যাচ দেন লাবুশেন। অ্যালেক্স কেয়ারি ও স্মিথের ব্যাটে এগিয়ে যাচ্ছিল অস্ট্রেলিয়া। চার বলের মধ্যে দুই ব্যাটসস্যানকে ফিরিয়ে ম্যাচ ভারতের দিকে ঘুরিয়ে দেন কুলদীপ যাদব।
 
কেয়ারির সফট ডিসমিসালের পর বাজে শটে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো নব্বইয়ের ঘরে ফিরেন স্মিথ। ১০২ বলে খেলা তার ৯৮ রানের ইনিংস গড়া ৯ চার ও এক ছক্কায়।
 
শুরুতে খরুচে বোলিং করা শামি শেষের দিকে ফিরে পরপর দুই বলে বোল্ড করে দেন অ্যাশন টার্নার ও প্যাট কামিন্সকে। লোয়ার অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যাটে পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। 
 
৭৭ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন শামি। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন জাদেজা, কুলদীপ ও নবদীপ সাইনি। আঁটসাঁট বোলিংয়ে একটি উইকেট নিয়েছেন জাসপ্রিত বুমরাহ।
 
আগামী রোববার বেঙ্গালুরুতে হবে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে।
 
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
 
ভারত: ৫০ ওভারে ৩৪০/৬ (রোহিত ৪২, ধাওয়ান ৯৬, কোহলি ৭৮, আইয়ার ৭, রাহুল ৮০, পান্ডে ২, জাদেজা ২০*, শামি ১*; কামিন্স ১০-১-৫৩-০, স্টার্ক ১০-০-৭৮-০, রিচার্ডসন ১০-০-৭৩-২, জ্যাম্পা ১০-০-৫০-৩, অ্যাগার ৮-০-৬৩-০, লাবুশেন ২-০-১৪-০)
 
অস্ট্রেলিয়া: ৪৯.১ ওভারে ৩০৪ (ওয়ার্নার ১৫, ফিঞ্চ ৩৩, স্মিথ ৯৮, লাবুশেন ৪৬, কেয়ারি ১৮, টার্নার ১৩, অ্যাগার ২৫, কামিন্স ০, স্টার্ক ৬, রিচার্ডসন ২৪*, জ্যাম্পা ৬; বুমরাহ ৯.১-২-৩২-১, শামি ১০-০-৭৭-৩, সাইনি ১০-০-৬২-২, জাদেজা ১০-০-৫৮-২, কুলদীপ ১০-০-৬৫-২)
 
ফল: ভারত ৩৬ রানে জয়ী
 
ম্যান অব দা ম্যাচ: লোকেশ রাহুল