করাচি টেস্টে জয়ের দুয়ারে পাকিস্তান

সেঞ্চুরিতে আগের দিনটি রাঙিয়েছিলেন দুই ওপনোর আবিদ আলি ও শান মাসুদ। এবার তিন অঙ্ক স্পর্শ করলেন পরের দুই ব্যাটসম্যান আজহার আলি ও বাবর আজম। বড় পুঁজি পেয়ে জ্বলে উঠলেন বোলাররাও। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে করাচি টেস্টে জয়ের দুয়ারে পৌঁছে গেল পাকিস্তান।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Dec 2019, 01:57 PM
Updated : 22 Dec 2019, 01:57 PM

সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের চতুর্থ দিন শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২১২ রান। জয়ের জন্য এখনো তাদের প্রয়োজন ২৬৪ রান, শেষ দিনে পাকিস্তানের দরকার কেবল ৩ উইকেট।
 
ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে ১০২ রানে ব্যাট করছেন ওশাদা ফার্নান্দো।
 
২ উইকেটে ৩৯৫ রান নিয়ে দিন শুরু করে পাকিস্তান। আগের দিন ফিফটি তুলে নেওয়া আজহার ১৪২ বলে স্পর্শ করেন ক্যারিয়ারের ষোড়শ সেঞ্চুরি। ১১৮ রান করে অধিনায়ক আউট হলে ভাঙে ১৪৮ রানের জুটি। আজহারের ১৫৭ বলের ইনিংসটি গড়া ১৩ চারে।
 

এক ফ্রেমে পাকিস্তানের চার সেঞ্চুরিয়ান (বাঁ থেকে) বাবর আজম, শান মাসুদ, আজহার আলি ও আবিদ আলি। ছবি: পাকিস্তান ক্রিকেট

ড্র হওয়া প্রথম টেস্টে ওয়ানডে মেজাজের ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরি করেছিলেন বাবর। এবারও প্রায় একই ঘরানার ব্যাটিংয়ে পেলেন তিন অঙ্কের দেখা। ১৩১ বলে ৭ চার ও এক ছক্কায় নিজের রান নিয়ে যান তিন অঙ্কে।
ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টিতে দারুণ সফল বাবর ধীরে ধীরে টেস্টেও মেলে ধরতে শুরু করেছেন নিজেকে। তুলে নিয়েছেন চতুর্থ সেঞ্চুরি। এর তিনটি এসেছে শেষ চার টেস্টে।
বাবরের সেঞ্চুরির মধ্য দিয়ে অনন্য এক কীর্তি গড়ে পাকিস্তান। টেস্ট ক্রিকেটে এই প্রথম দলের দ্বিতীয় ইনিংসে প্রথম চার ব্যাটসম্যান করলেন সেঞ্চুরি। সব মিলিয়ে টেস্ট ইতিহাসে এই নজির আছে আর কেবল একটি। ২০০৭ সালে মিরপুর টেস্টে সেঞ্চুরি করেছিলেন দিনেশ কার্তিক, ওয়াসিম জাফর, রাহুল দ্রাবিড় ও শচীন টেন্ডুলকার। তারা তিন অঙ্ক ছুয়েছিলেন ভারতের প্রথম ইনিংসে।
বাবরের সেঞ্চুরির পরই ৩ উইকেটে ৫৫৫ রানে ইনিংস ঘোষণা করে পাকিস্তান। একই সাথে আসে মধ্যাহ্ন বিরতির ঘোষণা। লঙ্কানরা পায় ৪৭৬ রানের লক্ষ্য। ৯৭ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা।

সেঞ্চুরির পর ওশাদা ফার্নান্দো। ছবি: পাকিস্তান ক্রিকেট

মোহাম্মাদ আব্বাসের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরেন অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে। ভাঙে ৩৯ রানের উদ্বোধনী জুটি। নাসিম শাহের বলে স্লিপে ধরা পড়েন কুসল মেন্ডিস। খুলতে পারেননি রানের খাতা।
থিতু হয়ে শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে কট বিহাইন্ড হন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। দ্রুত বিদায় নেন দিনেশ চান্দিমাল ও ধনাঞ্চয়া ডি সিলভা।
ফার্নান্দো ও নিরোশান ডিকভেলার ব্যাটে প্রতিরোধ গড়ে শ্রীলঙ্কা। দুই ব্যাটসম্যান উপহার দেন ১০৪ রানের জুটি। ডিকভেলাকে বোল্ড করে প্রতিরোধ ভাঙেন অনিয়মিত বাঁহাতি স্পিনার হারিস সোহেল। এর আগে লঙ্কান কিপার-ব্যাটসম্যান করেন ৭৬ বলে ১১টি চারে ৬৫ রান।
শেষ সময়ে নাসিমের বলে দিলরুয়ান পেরেরা কট বিহাইন্ড হলে শেষ হয় দিনের খেলা। এক প্রান্ত আগলে রেখে দলকে টানছেন ফার্নান্দো। তবে বোলারদের নিয়মিত অবদানে দেশে টেস্ট ফেরার সিরিজে জয়ের খুব কাছেই চলে গেছে পাকিস্তান।
৩৩ রানে ৩ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের সেরা বোলার নাসিম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ১৯১
শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস: ২৭১
পাকিস্তান ২য় ইনিংস: ১৩১ ওভারে ৫৫৫/৩ ইনিংস ঘোষণা (আগের দিন ৩৯৫/২) (আজহার ১১৮, বাবর ১০০*, রিজওয়ান ২১*; বিশ্ব ২৪-২-১০৫-০, কুমারা ২৯-৫-১৩৯-২, এম্বুলদেনিয়া ৫০-৩-১৯৩-১, দিলরুয়ান ২১-১-৯৪-০, ধনাঞ্জয়া ৭-০-১৯-০)।
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ৬০.১ ওভারে ২১২/৭ (করুনারত্নে ১৬, ফার্নান্দো ১০২*, কুসল ০, ম্যাথিউস ১৯, চান্দিমাল ২, ধনাঞ্জয়া ০, ডিকভেলা ৬৫, দিলরুয়ান ৫; শাহিন ১৪-৩-৫১-১, আব্বাস ১২-২-৩৩-১, নাসিম ১১.১-৩-৩১-৩, ইয়াসির ১৯-২-৮৪-১, হারিস ৪-০-১০-১)