ইয়াসির-বাবরের লড়াইয়ের পরও ধুঁকছে পাকিস্তান

বাবর আজমের ব্যাটে আবারও স্ট্রোকের দ্যুতি। ফিরলেন যদিও তিন রানের আক্ষেপ নিয়ে। অভাবনীয় ব্যাটিংয়ে সবাইকে চমকে দিয়ে সেঞ্চুরি করলেন ইয়াসির শাহ। তবে এই দুজনের লড়াইয়ের পরও মিচেল স্টার্কের বোলিং তোপে ফলো অন এড়াতে পারল না পাকিস্তান। দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেও অস্ট্রেলিয়ান পেসে ধরাশায়ী তিন ব্যাটসম্যান। সব মিলিয়ে অ্যাডিলেইডে পাকিস্তানকে চোখ রাঙাচ্ছে ইনিংস পরাজয়।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Dec 2019, 12:45 PM
Updated : 1 Dec 2019, 01:06 PM

দিবা-রাত্রির টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৩০২ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে পাকিস্তানের রান ৩ উইকেটে ৩৯। প্রথম ইনিংসে ডেভিড ওয়ার্নারের ট্রিপল সেঞ্চুরিতে অস্ট্রেলিয়া ইনিংস ঘোষণা করেছিল ৩ উইকেটে ৫৮৯ রানে।

রোববার তৃতীয় দিন শেষে ইনিংস হার এড়াতেই পাকিস্তানের প্রয়োজন ২৪৮ রান।

প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেটে ৯৬ রান নিয়ে দিন শুরু করে পাকিস্তান। দারুণ দৃঢ়তায় ব্যাট করতে থাকা বাবর ও ইয়াসির সপ্তম উইকেটে কাটিয়ে দেন প্রায় ৩৪ ওভার।

বাবরের সামনে যখন টানা দ্বিতীয় টেস্টে সেঞ্চুরির হাতছানি, আউট হয়ে যান তিনি আলগা এক শটে। মিচেল স্টার্কের বেশ বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে উইকেটের পেছনে টিম পেইনের দারুণ ক্যাচে ফেরেন ৯৭ রানে। ভাঙে ১০৫ রানের জুটি।

পরের বলে শাহিন শাহ আফ্রিদিকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়েছিলেন বাঁহাতি পেসার। যদিও তা হয়নি। নবম উইকেটে মোহাম্মদ আব্বাসকে নিয়ে আবারও প্রতিরোধ গড়েন ইয়াসির।

ইনিংসের শেষ তখন মনে হচ্ছিল কেবল সময়ের ব্যাপার। অসাধারণ ব্যাটিংয়ে সম্ভাব্য সেই সময়টাকে দূরে ঠেলে দেন ইয়াসির। দুইবার জীবন যদিও পেয়েছেন, তবে কৃতিত্ব তাতে কমছে না। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নিজের প্রথম সেঞ্চুরির স্বাদ ১৯২ বলে। 

ছবি: আইসিসি

২০০৬ সালের পর এই প্রথম টেস্টে আটে নেমে সেঞ্চুরির দেখা পেলেন কোনো পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান। এই ইনিংসের আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কোনো সংস্করণেই কোনো ফিফটি ছিল না ইয়াসিরের।

দারুণ এক বাউন্সারে ৭৮ বলে ২৯ রান করা আব্বাসকে ফিরিয়ে ৮৭ রানের জুটি ভাঙেন প্যাট কামিন্স। চলতি বছরে টেস্টে এটি তার ৫০তম উইকেট।

এরপর আর খুব বেশি দীর্ঘ হয়নি পাকিস্তানের লড়াই। ইয়াসিরের লড়াই শেষ হয় ১৩ চারে ১১৩ রান করে কামিন্সের বলে লায়নের হাতে ধরা পড়ে।

এই ইনিংসে শেষ চার উইকেটে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা যোগ করেছেন ২১৩ রান। অস্ট্রেলিয়ায় যা তাদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১৬ সালে ব্রিজবেন টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে শেষ চার জুটিতে ব্যাটসম্যানরা যোগ করেছিলেন ২৩০ রান।

৬৬ রানে ৬ উইকেট নিয়ে ইনিংসে সেরা বোলার স্টার্ক। টেস্ট ক্যারিয়ারে ৫ উইকেটের স্বাদ পেলেন তিনি দ্বাদশবার।

ফলো অনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা হয় প্রথম ইনিংসের চেয়েও বাজে। যথারীতি ইমাম-উল-হকের বিদায়ে পতনের শুরু। বাঁহাতি ওপেনার ফেরেন শূন্য রানে। প্রথম ইনিংসের মতোই ঠিক ৯ রান করে স্লিপে স্টিভ স্মিথের হাতে ক্যাচ দেন অধিনায়ক আজহার আলি।

এরপর তারা বড় ধাক্কা খায় দশম ওভারে। সিরিজে দলের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটসম্যান বাবর উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন জশ হেইজেলউডের বলে। এরপর বৃষ্টি এসে এ দিনের মতো উদ্ধার করে পাকিস্তানকে, দিনের খেলা শেষ হয় আগেভাগেই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ১২৭ ওভারে ৫৮৯/৩ (ডি.)

পাকিস্তান ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৯৬/৬) ৯৪.৪ ওভারে ৩০২ ( মাসুদ ১৯, ইমাম ২, আজহার ৯, বাবর ৯৭, আসাদ ৯, ইফতিখার ১০, রিজওয়ান ০, ইয়াসির ১১৩, শাহিন ০, আব্বাস ২৯, মুসা ১২*; স্টার্ক ২৫-৬-৬৬-৬, কামিন্স ২২.৪-২-৮৩-৩, হেইজেলউড ১৪-২-৪৮-১, লায়ন ২২-৩-৬৫-০, লাবুশেন ১০-২-৩২-০, স্মিথ ১-০-৬-০)

পাকিস্তান ২য় ইনিংস: (ফলো অনের পর) ১৬.৫ ওভারে ৩৯/৩ (মাসুদ ১৪*, ইমাম ০, আজহার ৯, বাবর ৮, আসাদ ৮*; স্টার্ক ৪-১-১০-১, কামিন্স ৮-৩-১৫-২, হেইজেলউড ৪.৫-২-১৪-০)